সম্পাদকীয়

যিনি বিচারক তিনিই বাদী! বিষয়টি যেনো এমন‌ই! প্রেক্ষাপট কালিগঞ্জে ৫ সাংবাদিকের স্ট্যান্ডবাই জেল!

  প্রতিনিধি ১৭ জুন ২০২৩ , ৯:৪৪:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।তুমি হাকিম হ‌ইয়া হুকুম করো, পুলিশ হ‌ইয়া ধরো….এই গানের মতোই যেনো ঘটে গেলো সব কিছুই! কেননা সাংবাদিকদের দলটি তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসন্ধানের জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাফছা নাদিয়ার যে অফিসে গিয়েছিলেন পরিস্থিতি মোতাবেক সেই অফিসের অফিসার‌ তথা কর্মকর্তা উম্মে হাফছা নাদিয়া নিজেই একাধারে বাদি ও অপরদিকে বিচারক হয়ে গেলেন!বিষয়টা অনেকটা এমন‌ই হয়ে গেলো না!?এটা কেমন কথা হোলো? যদি প্রশ্ন করি কোনো বিচারপতির সঙ্গে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার উপর ভিত্তি করে তিনি নিজেই বিচারক হয়ে কি বিচার কার্য্য সম্পন্ন করতে পারেন?

নতুন সাংবাদিক,সিনিয়র বা জুনিয়র সাংবাদিক,নতুন পত্রিকার সাংবাদিক,অশিক্ষিত বা অদক্ষ সাংবাদিক বা চাঁদাবাজ অথবা অন্য কোন কিছু কিন্তু ‘ভূয়া’ শব্দ আসবে কেন?ভুয়া সাংবাদিক এই কথাটির মানে কি? আপনারা কি জানেন যে এই ভাষাটি সাংবাদিক সমাজের গায়ে লাগে?”!

গত মঙ্গলবার যেভাবে গাড়ির তেল ও লাঞ্চ করার কথা বলে টাকা চেয়েছেন এই অভিযোগ এনে গাজীপুর কালীগঞ্জে ৫ সাংবাদিকদের প্রত্যেককে ৩ মাসের জেল এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ১৫ দিনের জেল। এই শাস্তি কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাফছা নাদিয়ার ভ্রাম্যমান বিচারিক আদালতের মাধ্যমে নিশ্চিত করে তাৎক্ষণিক কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে তা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

এ বিষয়ে মূল ধারায় বিশ্বাসী এমন একাধিক সাংবাদিকরা বলেন, সাংবাদিকদের দলটি যে ঘটনা/তথ্য সম্পর্কে জানার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন সেই ঘটনার সাথে কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট‌ও হয়তো জড়িত থাকতে পারেন এবং হতে পারে তার নিজের অপরাধ ধামাচাপা দেয়ার জন্য এমন আচরণ করা হয়েছে।

এক্ষেত্রে এটি পরিস্কার যে যিনি বাদী তিনিই বিচারক এতে করে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। তাই বিষয়টি উর্ধতন প্রশাসন/বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।

অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে,গণমাধ্যমেও তাদের বিষয়ে বার বারই প্রচার হচ্ছে ভূয়া সাংবাদিক বলে।প্রশ্ন হলো ভুয়া সাংবাদিক কি? তারা কিভাবে ভূয়া সাংবাদিক হলেন?

১)পত্রিকা আছে ২)আইডি কার্ড আছে ৩)সম্পাদক আছে তাহলে তারা কি করে ভুয়া সাংবাদিক হলেন!? এবং তাদের কাছে কিছু থাকা সত্যেও কি ভাবে ৫ জন সাংবাদিক ভূয়া বানিয়ে মামলা দিয়ে জেলে দেওয়া হলো।একই পত্রিকার ৪ জন সাংবাদিক এবং তাদের মধ্যে ৩ জনের বাড়িই গাজীপুর, প্রশ্ন হচ্ছে গাজীপুরের সাংবাদিকরা কেউই কি তাদের কাউকে বা তাদের সম্পাদক কে চিনে না? রহস্যটা কি!? সর্বোপরি তাদের এতকিছু থাকা সত্যেও তাদের ৫ জনকে ভুয়া সাংবাদিক বানিয়ে মামলা দিয়ে জেলে দেওয়া হয়েছে তা ঠিক হয়নি বলাটা কেনো সঠিক হবে না?

ভূয়া সাংবাদিক মানে হচ্ছে,সম্পাদক নেই,পত্রিকা নেই, আইডি কার্ড নাই,থাকলেও জাল করে বানানো এবং কোনো ঠিকানা বা পরিচয় নেই ইত্যাদি।

অপরদিকে বাংলাদেশের সংবিধানে আসলে সাংবাদিক কে তাও এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা নাই।এমতাবস্থায় একদল লোককে অনেকটা ধরে-বেঁধে নিজেদের ডিফেন্স করার জন্য কোনো প্রকার সুযোগ না দিয়ে,স্বপক্ষে পদক্ষেপ নেবার অবকাশ না রেখে সৌদি আরবের রাজতান্ত্রিক আইনের মতো একচেটিয়া ভাবনায় বিচার করে জেলে পুরে দেয়াটা রহস্যজনক তো অবশ্যই।আসলেই কি এদেশে সাংবাদিক বলতে কি কেউ নেই? যদি থেকে থাকে তাহলে তারা কেউ বিষয়টার সঠিক তদন্ত করে তার প্রতিবেদন প্রকাশ না করে পারতেন!?

আরও খবর

Sponsered content