সম্পাদকীয়

মাহমুদুর রহমান অল্পদিনেই আমার দেশ পত্রিকাকে, আমার পাকিদেশে পরিণত করেন

  প্রতিনিধি ৭ অক্টোবর ২০২২ , ১:২০:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৭ সালে ডিগ্রি অর্জনকরা মাহমুদুর রহমান পেশাজীবনের উত্তরণ ঘটে বেক্সিমকোর মাধ্যমে। পরে বিসিআইসি, মুন্নু এবং শাইনপুকুর সিরামিকসে মধ্যম সারির এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি করা মাহমুদুর বিএনপি সরকারের শেষভাগে এসে কিছুদিনের জন্য প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নিযুক্ত হন।উপদেষ্টা থাকার দিনগুলোতেও বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য বহুবার সংবাদপত্রের শিরোনামে আসেন মাহমুদুর।

এক পর্যায়ে ২০০৮ সালে আর্থিকভাবে দুর্দশাগ্রস্ত আমার দেশের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেন মাহমুদুর রহমান। তখন থেকেই তিনি ওই পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।

মাঝখানে কিছুদিন দেশের বাইরে থাকা মাহমুদুর ১৯৯৯ সালে আরটিসান সিরামিকস নামে নিজের কোম্পানি খোলেন।উত্তরায় ওই কোম্পানির কার্যালয়েই ২০০৬ সালে রাতে পুলিশসহ জনপ্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে বৈঠকে বসেন তিনি। খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে গেলে বৈঠকে যোগ দেওয়া অনেক কর্মকর্তা মুখ ঢেকে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
একজন অনভিজ্ঞ অথবা দলকানা বাক্তিকে সম্পাদক বানানো আর ছাগল দিয়ে হাল চাষ করানো একই কথা।

কারন জনসম্পৃক্ত এই সৃজনশীল প্লাটফর্মের দ্বায়িত্ব, সাংবাদিকতায় অদক্ষ কোন বিশেষ দলের দালালের হাতে গেলে সে তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সেই সংবাদমাধ্যমকে বিশেষ কোন দলের ভোট পাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করবে। আর এই স্বার্থ হাসিলের জন্য সে সাংবাদিকতার সব নিয়মকান লংঘন করে বিভ্রান্তি ছড়াতে অথবা নিরপেক্ষতার মুখে চুনকালি মেখে একটি সংবাদমাধ্যমকে অপপ্রচারের মেশিনে পরিণত করতেও দ্বিধাবোধ করবে না। যার জলন্ত উদাহারন হল মাহমুদুর রহমান।

হঠাৎ করে হাতে আসমান পাওয়া, অনভিজ্ঞ, অপেশাদার, বিশেষ এক রাজনৈতিক দলের দালাল মাহমুদুর রহমান সংবাদপত্রের সম্পাদক সেজে সাংবাদিকতার ন্যায় নীতি সম্পূর্ণরুপে বিসর্জন দিয়ে, ধীরে ধীরে আমার দেশ পত্রিকাকে তৃতীয় শ্রেণির লিফলেট পত্রিকায় (অনেকের মতে টয়লেট পেপারে) পরিণত করেন।

সংবাদপত্রের মূলনীতি বিন্দুমাত্র অনুসরণ না করে বিভিন্ন দল এবং গুষ্ঠির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বিশেষ এক দলের ভোটার সংগ্রহের লক্ষে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করতে থাকা মাহমুদুর রহমান অল্পদিনেই আমার দেশ পত্রিকাকে, আমার পাকিদেশে পরিণত করেন।

সাথে, রাজাকার রক্ষার মিশন বাস্তবায়নে নামা মাহমুদুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচালের চেষ্ঠার কোন কমতি করেননি।

যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার করার পরপরই গত জানুয়ারি মাসে ‘আলেমদের (সাঈদি, কাদের, আজম ) নির্যাতনের প্রতিবাদে কাবার ইমামদের মানববন্ধন’ শিরোনামে আমার দেশের অনলাইন সংস্করণে একটি ‘মিথ্যা সংবাদ’ প্রকাশ করেন মাহমুদুর রহমান। ধর্মানুভুতিতে আঘাতকরা মিথ্যা এ সংবাদ প্রকাশের পরপর ধর্মপ্রাণ সহ সর্বস্থরের মানুষের ব্যাপক সমালোচনা ও তোপের মুখে পড়ে সংবাদটি প্রত্যাহার করে মাহমুদুরের পত্রিকা।

শুধু তাই নয়, রাজাকারদের রক্ষার মিশন বাস্তবায়নের লক্ষে নিয়মিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে রাজাকারদের পক্ষে ধর্মিয় উন্মাদনা সৃষ্টির চেষ্ঠায় মত্ত থাকেন মাহমুদুর রহমান। তিনি এ দেশবিরোধী মিশন বাস্তবায়নের লক্ষে কখনও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রধান নিজামুল হকের কথিত স্কাইপ কথোপকথন প্রকাশ করেন ।খনও আবার রাজাকারদের রক্ষা করে বিশেষ এক রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় বসানোর মিশন বাস্তাবয়নের লক্ষে লংমার্চ করতে উৎসাহ প্রদান করেন।

আজ আমাদের দেশের সাংবাদিকতা মানে কিছু নিদিষ্ট লোকের তোষামোদি করা আর নিজেদের স্বার্থ হাসিল করা ছাড়া আর কিছুই না ।

যার বাস্তব বহি:প্রকাশ ঘটাচ্ছেন ব্যক্তিগত নামের সামনে সাংবাদিক শব্দটির মাধ্যমে । আজ সোশাল মিডিয়া যেন হয়ে উঠেছে এই সমস্ত লোকদের একটি আদর্শ প্ল্যাটফর্ম আর তাই সোশাল মিডিয়া খুললেই আমরা কিছু সাংঘষিক সাংবাদিক দের সংবাদ ভাইরাল হতে দেখি ।

দেশের উন্নয়ন আজ এই সমস্ত লোকের চোখে পড়ে না, চোখে পড়েনা বন্যায় অসহায় মানুষের আত্বনাত,দেশের যোঘাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সহ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিএ ।

অথচ এগুলোই একজন সাংবাদিকের আলচ্য বিষয় হওয়া উচিৎ বলে মনে করি ।

আর এই সাংঘষিক সাংবাদিক আর কেউ না তিনি হলেন মাহমুদুর রহমান প্রখ্যাত আমার দেশের সম্পাদক । সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনার ভারত সফর কে কেন্দ্র করে টকশো নামক চা কফি পাটিতে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত কোরতে অপপ্রচারে লিপ্ত হন অথচ এই বাংলাদেশ যত অর্জন ভারত হতে তা কেবল এই আওয়ামিলিগ সরকার এর হাত ধরে ।

দেশ বিরোধী এই মাহমুদুর রহমানের অতীত আমাদের সকলের জানা । আর এই মাহমুদুর রহমান হঠাৎ করে উদিত হবার পর এমন কোন অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। অপকর্ম বলতে চুরি বাটপারি বা ডাকাতি নয়, এই অপকর্ম একটি জাতির শান্তি ও স্বাভাবিকতা বিনষ্টের জন্য যথেষ্ট। একটা পত্রিকাকে সম্বল করে সারাদেশে ঘৃণা আর বিদ্বেষের আগুন জ্বালানোর কাজে নেমেছিলেন তিনি।

মতিঝিলের ঘটনা থেকে ঢাকায় যে অশান্তি- তার দায় অনেকটাই মাহমুদুরের।

আর তাই বর্তমান সময়ে এই মাহমুদুর রহমানের মত লোকদের ব্যবহার করে কিছু অরাজনৈতিক দল বর্তমান সরকারকে নাস্তানাবুদ করে ক্ষমতায় মসনদে বসার অপকৌশলে নিয়োজিত রয়েছে।

এই সমস্ত লোক সম্পর্কে আমাদের দেশের সরকার প্রধান সবকিছু জানার পরেও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন না করায় এদের অপকর্মের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে যা কোনভাবেই কাম্য নয় ।

আরও খবর

Sponsered content