সম্পাদকীয়

ভয়ংকর নারী,বহুরুপী নারী!

  প্রতিনিধি ১ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১২:২৩:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।মিথিলা তার দুলাভাইয়ের সাথে অন্তরঙ্গ মুহুর্ত পার করছে।মিথিলা প্রায় অর্ধ উলঙ্গ আর দুলাভাই শুধু শর্ট পেন্ট।তাদের প্রেমলীলা দেখে আসিফ থমকে যান।এটা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিল না আ।আমি মিথিলাকে ভালোবাসেন আসিফ এবিষয় বাড়ির সবাই জানে।এই কারনে কত না যে মাইর খেয়েছেন তার কোনো হিসাব নাই!

আসিফকে বরাবর বলে দিয়েছে মিথিলাকে নিজের বোনের মতো দেখার জন্য। আসিফ মিথিলাকে এমন অবস্থায় দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছিলো না!!!

আসিফ– ছিঃ ছিঃ মিথিলা এইসব কি দেখছি?আর দুলাভাই আপনি কি করে পারলেন এটা করতে? আসিফের আওয়াজ শুনে যেন ওদের মাথায় আকাশ ভেংগে পরছে)
— আসিফ প্লিজ কাউকে বইলো না প্লিজ,,,কাউকে বললে আমাদের মান-সম্মান থাকবে না?(দুলাভাই)।

ওনি সুমির স্বামী,,,দেখতে স্মার্ট,, আর অনেক বড় চাকরি করে।সুমি হলো মিথিলার বড় বোন।সুমি সকালে তার বাচ্চাকে ডাক্তার দেখাতে গেছেন।সাথে তার চাচিও গেছে।চাচা নাই মারা গেছে ৩ বছর হয়।

আসিফের বাবাই দুটি পরিবারের প্রধান। আসিফের বাপ- চাচা মিলে একইরকমের দুইটা দুতলা বাড়ি করে। সুমির বিয়ে হয়েছে ২ বছর।একটা ৬ মাসের মেয়ে বাচ্চাও আছে।

সুমিকে আসিফের বাবাই বিয়ে দেয়।।বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই হয়। আসিফের দুলাভাই হিরেরটুকরা বাড়ির সবাই জানে।

কিন্তু তার চরিত্র যে এত খারাপ আসিফ ভাবতে পারছেনা!!!

আর মিথিলা? মিথিলা এটা কিভাবে করলো?মিথিলার মত ভদ্র মেয়ে তো গ্রামের কোথাও খুজেও পাওয়া যাবে না।মিথিলার সৌন্দর্য পরিবারের লোকজন ছাড়া বাহিরের কেউ দেখে নাই।হাত মৌজা।পা মৌজা বোরকা পরে পর্দার সাথেই সব সময় চলাচল করে।কিন্তু আজ সেই মিথিলার একি হাল দেখছি??!!!!!

আসিফ– চুপ করেন আপনি?লজ্জা করে না আবার কথা বলেন?আর মিথিলা তুই না পর্দা করিস,,,কোনো পর পুষের সামনে যাস না।এই তর পর্দার আড়ালে আসল চেহারা?আসিফের কথা সুনে মিথিলা কিছু বলছে না নিজেকে ঢেকে কেঁদে যাচ্ছে!

আসিফ—–তোর জন্য তো পুরো পর্দানশীন নারীদের সম্মান নষ্ট হলো।কি দরকার ছিল পর্দা করার পতিতা পল্লিতে গেলেই তো পারতি?এই মিথিলাকে যখন আসিফ বলতেন মিথিলা আমি তোকে ভালোবাসি।তোর জন্য সব করতে পারবো।তখন মিথিলা আসিফের চরিত্র নিয়ে কথা বলতো।। আসিফের বাবাকে বলে আমাকে মাইর খাওয়াতো!

— আসিফ,,,কাউকে বলিস না প্লিজ?(মিথিলা কান্না করতে করতে
— মিথিলা। আসিফ যখন তোকে ভালোবাসি বলতাম,,তুই আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলতি আব্বুর কাছে বলে মাইর খাওয়াইতি।আজ তোর আসল রুপ টা দেখুক সবাই।।আর দুলাভাই আপনাকে আর কি বলবো?!!!!

আসিফ রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল।ওদের কে যতই বলি রুপ দেখিয়ে দিব, কিন্তু সুমির সংসারটার কি হবে? আর একটা ৬ মাসের মেয়েও আছে তাদের।আর মিথিলাতো আসিফের চাচাতো বোনই। যাকে আসিফ ভালোবাসেন।তার সম্মান কি করে নষ্ট করবেন?!

আসিফ– দুলাভাই আপনি এখনো এখানে বসে আছেন?(দুলাভাই মাথা নিচু করে বসে ছিল)
আমার কথা শুনে,,, আসিফের দুলাভাই রুম থেকে বের হয়ে যায়।

,,
আসিফ– মিথিলা অন্তত তোর কাছে এটা আশা করি নাই।কাজ টা কিন্তু বেশি ভালো করিস নাই!!!!

আসিফ যখন রুম থেকে বের হতে যাবে দরজা আটকানো

মিথিলা চিল্লাতে শুরু করে দিছে——!!!!
— আসিফ আমাকে ছেড়ে দে প্লিজ।আমার এত বড় সর্বনাশ করিস না প্লিজ।। আমি তোকে ভাইয়ের মতোই ভাবি।।।আসিফ না প্লিজ,,,(মিথিলার কান্ডে আসিফ বাকরুদ্ধ।।সেই সুযোগে মিথিলা ভিতর থেকে দরজা আটকিয়ে নিয়েছে!
আসিফ কথা বলতে পারছিল না।গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না।মনে হচ্ছে হাত,পা সব বেঁধে রেখেছে কেউ??!!

— আসিফ তুই আমার এত বড় সর্বনাশ করিস না প্লিজ আমি তোর পায়ে পরছি।।।।(মিথিলা তার কাপড় চোপড় ছিরতে লাগলো।প্রায় অনেক অংশ ছেড়ে ফেলছে)
–অনেক কষ্টে মুখ থেকে বের করলেন,,,মিথিলা কি হচ্ছে এইসব?

আসিফ– কেউ,,বাচাও আসিফ প্লিজ,,,আ,,,,(মিথিলা অনেক জোরে চিল্লাচ্ছে!
আসিফ যেখানে ছিল সেখানেই দাড়িয়ে আছে,,,।মিথিলার এমন কান্ডে শরিরের শক্তি হারাই ফেলছিলো আসিফ।

বাহির থেকে দরজা ধাক্কাতে লাগলো মিথিলার দুলাভাই।আর দরজা খুলার জন্য চিল্লাতে লাগলো। মিথিলার
দুলাভাইয়ের চিল্লানি শূনে আসিফের বাবা,মা,ভাই,ভাবি সবাই চলে আসে।

সবাই জোরে দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে দরজা ভেঙ্গে ফেলে।দরজা খুলতেই মিথিলা আসিফের বাবার পিছনে গিয়ে লুকায়,,,।

মিথিলার কাপড় চোপড় ছেড়া দেখেই আন্তাজ করে ফেলেছে মিথিলার সাথে আসিফ খারাপ কিছু হতে যাচ্ছিল।
মিথিলা ন্যাকা কান্না করছে,,, মিথিলাকে আসিফের ভাবি আগলে নেয়।আর সবাই আসিফের দিকে অগ্নি চুক্ষু দেখাতে লাগলো?

আসিফের সামনে এসেই ঠাস,,,ঠাস কয়েকটা চর বসিয়ে দেয় তার বাবা। ভাই এসেও অনেকটা চর মেরেছে। আসিফ কিছু বলতে যাবে, সেই সুযোগ নাই।সব কিছু এত দ্রুত হচ্ছিল।

আসিফের ভাবী– মিথিলা,,আসিফ তো তোমাকে কলেজে যেতে ডাকতে আসছিল?তোমাকে এত খারাপ অবস্থায় দেখা যাচ্ছে,কেন?আসিফ কি তোমার সাথে কিছু করেছে?(আসিফের ভাবি হয়ত বিশ্বাস করতে পারছে না! আসিফের মত ছেলে এমন একটা কাজ করবে!!!!

মিথিলা– ভাবি আমি সুয়ে ছিলাম।আসিফ এসে আমাকে একা পেয়ে আগের মতো ভালোবাসার প্রস্তাব দেয়।আমি বড় আব্বুকে জানাবো।এই বলাতে আসিফ আমাকে বলে, আমি নাকি অনেক মাইর খাওয়াইছি।তাই আজ তার ইজ্জত কেড়ে নিব।তারপর আসিফ আমার সর্বনাশ করতে থাকে।আপনারা না আসলে আজ আসিফ আমার কি যে করতো?(মিথালা আসিফের ভাবিকে জড়িয়ে ধরে নেকা কান্না কাঁদছে!!!!

মিথিলার কথা অবিশ্বাস করার কোনো কারনই নাই। আগেই বলেছি সারাদেশের সকল গ্রাম খুঁজেও এমন মেয়ে পাওয়া যাবে না!

আসিফের বাবা মিথিলার কথা শুনেনে যেন আরো রেগে গেলেন?
আসিফ–তুই আমার ছেলে ভাবতেই লজ্জা লাগছে।যে নিজের চাচাতো বোনের সাথে এমন করতে পারে সে অন্য মেয়েদের কি না করবে?তোর এই বাড়িতে কোনো জায়গা নেই।বের হয়ে যা এই বাড়ি থেকে?আসিফের বাবার কথা শুনে চোখ বেয়ে পানি পরছে।

আসিফ– আব্বু আমি কিছুই করি নাই?(মাথা নিচু করে কান্না করতে করতে বললেন)
— অই তুই আমাকে আব্বু বলবি না।আজ থেকে আমার একটা ছেলে তুই মরে গেছিস।(আব্বুর মুখে এই কথা শুনার থেকে মরে যেতে পারলেও অনেক সুখের হতো)
আসিফ– আম্মু,,আমি কিছু করিনাই,,মিথিলা,,(কথা আটকিয়ে দিয়ে)
— তুই আমাকে আম্মু বলবি না,,জানিনা কোন পাপে তোকে পেটে ধরেছিলাম।(আম্মু কেঁদে কেঁদে)
আম্মুর মুখে কথা শুনেনে মনে হচ্ছে কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে।

আসিফ–আর কাউকে বলবো যেখানে আমার গর্ভধারিণী মা বিশ্বাস করে না।আমাকে কিছু বলতেও দেয় নাই।
আসিফের দুলাভাইয়ের দিকে তাকালেন,,,মুখে পৈচাছিক হাসি।,,আর মিথিলা এখনো ন্যাকা কান্না করছে।

সুমিও চলে এসেছে।যার আদরে আসিফের বড় হওয়া।যেই সুমিও আসিফকে আপন ভাইয়ের মতো ভালোবাসে। আমাকে এখনো মুখে খাবার তুলে খাইয়ে দেয়।।সেও সব কিছু শুনে,, কান্নায় বুক ভাসাচ্ছে। আজ আসিফ সুমির চোখেও খারাপ হয়ে গেল!!!

মিথিলার রুম থেকে বের হয়ে,,, আসিফের রুমে গিয়ে কাপড় চোপড় গোছাচ্ছি কারন আসিফের বাড়িতে জায়গা নেই।আর আসিফ কোন মুখে থাকবে!সবাই আমাকে ধর্ষক বলে জানে!

আসিফের কাপড় গোছানো শেষ,,রুম থেকে বের হবে। এমন সময়েই আসিফের ভাবি আসিফের রুমে আসলেন।আসিফ ভাবিকে দেখ মাথা নিচু করে দাড়িয়ে ছিল।

কারন আসিফের ভাবি আসিফকে মায়ের মতো আদর করেম।আসিফের টাকা পয়সার অভাব ভাবিই পুরন করে।ভাবি সুমির মতই আসিফের একটা বড় আপু।

আসিফের ভাবি—- এটা তুমি কি করলা আসিফ,,?আমরা তো মিথিলার সাথে তোমার বিয়ে দিতে রাজি ছিলাম আব্বুকে না হয় আমরা বুজিয়ে নিতাম।তার জন্য জোর করে?

আসিফ—-ভাবি আমাকে মাফ করে দিও আমি পারি নাই সবার সামনে সত্য টা বলতে?(কান্না করছিলেন আসিফ)

আসিফের ভাবি– কি সত্য বলতে পারো নাই?
— ভাবি কথা দেন কথা গুলো কাউকে বলবেন না?(ভাবির কাছে কথা নিয়ে)

আসিফের ভাবি– হুম,, বলো বলবো না কাউকে?

আসিফ—- ভাবি,,আমি মিথিলার সাথে এমন কিছুই করি নাই?(কান্না সুরে)

আসিফের ভাবি– তাহলে মিথিলার কাপড় ছেড়া ছিল কেন?
আসিফ—- ভাবি আমি মিথিলাকে ডাকতে গিয়ে,, দুলাভাই আর মিথিলাকে পাপ কাজে লিপ্ত থাকতে দেখি।আমি তাদের অপমান করি।ভয় দেখাই বাড়ির সবাইকে বলে দিব।

কিন্তু পরে আপুর সংসার,,আর মিথিলার সম্মানের কথা ভেবে থমকে যাই।।আমি রুম থেকে বের হতে যাচ্ছিলাম দুলাভাই বাহির থেকে দরজা লক করে দেয়।মিথিলা জোরে জোরে কাঁদতে থাকে আর কাপড় গুলো ছিড়তে থাকে।তার পর ভিতর থেকে লক করে দেয় মিথিলা। বাহির থেকে দুলাভাই দরজা ডাককাচ্ছে আর চিল্লানি শুনে তোমরা এসে আমাকে এই পরিস্থিতে ‘দেখলা।।আমি কাকে বলবো এই কথা।কে বিশ্বাস করবে বলো।।(কেঁদে কেঁদে রুম থেকে বের হতে যাচ্ছিল।

আসিফের ভাবির চোখেও পানি,,,,ভাবি বিশ্বাস করলেও নিরুপায়।
আসিফের ভাবি– কি বলছো আসিফ,,,তাদের পাপের বোজা তোমার উপর চাপিয়ে দিয়েছে?

আসিফ—-ভাবি– তুমি কাউকে বলো না প্লিজ,,,মিথিলার সম্মান।।আর আপুর সংসার নষ্ট হয়ে যেতে পারে?

(আসিফের ভাবি
— জানি না আসিফ,,,কে মিথ্যা কে সত্য বলছে?মিথিলার,, আর সুমির জামাইর ত এমন কোনো বাজে লক্ষন দেখি নাই!!?

আসিফ—- ভাবি তুমি আমাকে বিশ্বাস করছো না তাহলে এটা দেখো?(আমি সুযোগে সব কিছু ভিডিও করে রেখেছিলাম)।

ভেবেছিলাম কাউকে দেখাবো না,,কিন্তু পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় মানুষ টার চোখে নিজেকে খারাপ বানাতে পারি নাই!

আসিফের ভাবি– আসিফ এই ভিডিও এখনই আব্বুকে দেখাবো।।(ভাবি মোবাইল নিয়ে যেতে চায়)

আসিফ—- ভাবি প্লিজ,,,কথা দিয়েছো কাউকে বলবা না।।সবার চোখে খারাপ হলেও তোমার চোখে যেন ভালো হয়ে থাকতে পারি তাই তোমাকে সব বললাম।।(কথা শেষ করতেই।।।।

ভাইয়া ভাবিকে বলছে এই ধর্ষকের সাথে কিসের এত কথা)
ভাবির চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।ভাবি আমার হাতে অনেক গুলো টাকা দিয়ে বলে টাকার দরকার পড়লে যেন ভাবিকে জানাই।।।ভাবি চোখ মুছে আমার রুম থেকে বের হয়।

কিন্তু আসিফের চোখের পানি জোরায় না।রুমটার প্রতি মায়া লাগছিল আসিফের।।আসিফ মায়ের পায়ে একবার সালাম করতে মন চাচ্ছে, কিন্তু সেই সাহস আজ আসিফের নেই।আসিফ চলে যাওয়া আসিফের ভাবি সবার চোখের আড়ালেলে বার বার চোখ মুছছে!!!!

এরপর আসিফ ১২টার বাসে রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে,,,
চলবে,,,

আরও খবর

Sponsered content