পর্যটন শিল্প ও সাহিত্য প্রাকৃতিক রুপচর্চার খবর:-

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভটির পাশেই মাটির নিচে স্বাধীনতা জাদুঘরটির অবস্থান

  প্রতিনিধি ২৬ এপ্রিল ২০২৩ , ৫:১২:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।ঢাকায় বেড়াতে আসা যুবক হৃদয় হোসেন। তার মতো আরও অনেকেই প্রথমবারের মতো ঘুরতে এসেছেন দেশের প্রথম ও একমাত্র এই মাটির নিচের স্বাধীনতা জাদুঘর দেখতে।এর পাশ দিয়ে এতবার গিয়েছি, কিন্তু জানতামই না যে এখানে মাটির নিচে এমন একটা আস্ত জাদুঘর আছে। আরও অবাক হয়েছি যে, এই জাদুঘরে ঢুকতে কোনও টাকাও খরচ করতে হয় না’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভটির পাশেই মাটির নিচে এই স্বাধীনতা জাদুঘরটির অবস্থান।শিখা অনির্বাণ থেকে সোজা স্বাধীনতা স্তম্ভের দিকে হেঁটে গেলে হাতের বামে জাদুঘরের প্রবেশ পথ।সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতেই চোখে পড়বে বিশাল এক গ্যালারি।সেখানকার দেয়ালে সাঁটানো বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের বিভিন্ন ধাপের বিভিন্ন চিত্র।পাশাপাশি ফ্লোরেও কাঁচের ফ্রেম করে বসানো হয়েছেন নানান দুর্লভ চিত্র।

মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) সেখানে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই ঘুরতে এসেছেন জাদুঘরে।অনেকের সঙ্গেই কথা বলে জানা গেলো,এমন একটি জাদুঘর এখানে থাকলেও অনেকেই সেভাবে জানেন না।তাই দর্শনার্থী কিছুটা কমই আসেন।তবে এবারের ঈদের ছুটিতে অনেকেই এসেছেন এখানে ঘুরতে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ায় কর্মব্যস্ত জীবন শুরু করেছেন কর্মজীবীরা।আবার যারা বাড়তি ছুটি নিয়েছেন,তারা এখনো ঘুরেফিরে বেড়াচ্ছেন রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে।আবার অনেকেই ছুটিতে আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় ঘুরতে এসেছেন।পরিবার কিংবা বন্ধুদের নিয়ে তাদের ঘোরাঘুরি এখনও চলছে।

ছুটি পেয়ে অনেকে পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।অনেকেই আবার এসেছেন শাহবাগের শিশুপার্কে।পার্কটি বন্ধ থাকায় আশপাশে ঘোরাঘুরি করে গিয়েছেন স্বাধীনতা জাদুঘরে।

 

রাজধানীর বাসাবো এলাকা থেকে স্বাধীনতা জাদুঘরে ঘুরতে এসেছেন আলী হোসেন।তিনি জানান, এই জাদুঘরে এর আগে একবার এসেছিলেন।এবার এসেছেন বন্ধুদের নিয়ে।এর আগেরবার এসে জাদুঘরে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। সেই ছবি দেখে বন্ধুরা এখানে আসার কথা জানায়।তাই এবার বন্ধুদের নিয়ে এখানে এসেছেন।

 

চট্টগ্রাম থেকে আসা হৃদয় হোসেন বলছিলেন, ‘আমি আগে কখনও এখানে আসিনি।ফেসবুকে বন্ধুর ছবি দেখে এখানে আসতে ইচ্ছে করছিল,তাই এসেছি। এখানে এসে আমার খুবই ভালো লাগছে। এখানে মুক্তিযুদ্ধের অনেক পুরান পুরান ছবি দেখলাম, ভালোই লেগেছে।‘

স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে জাদুঘরে বেরাতে এসেছেন মো. লিটন।তিনি জানান,এখানে অনেক আগে একবার এসেছিলেন।এবার স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে এসেছেন। অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় আগে এখানে আরও অনেক কিছু ছিল, আরও অনেক বেশি ছবি ছিল; এখন কমে গিয়েছে।’

শিক্ষার্থী সোয়াদ হোসেন লিখনের ঈদের ছুটি এখনও ফুরায়নি, তাই বাবা মা আর ছোট ভাইয়ের বেরাতে এসেছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।এসময় তিনি ঘুরতে এসেছিলেন স্বাধীনতা জাদুঘরে।ছোট বেলায় একবার এসেছিলেন বলে জানান তিনি। সোয়াদ বলেন, এখানে আসলে ভালো লাগে।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের তথ্যও জানা যায়।

 

পেশায় ব্যবসায়ী শাহ মো. সিকান্দার।তাই ছুটি নিয়ে তার ভাবনা নেই।কিন্তু অন্য সময় ব্যস্ত সময় পার করতে হয় বলে পরিবার নিয়ে বের হওয়া হয় না।তাই ঈদের ছুটিতে স্ত্রী সন্তানদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও স্বাধীনতা জাদুঘরে ঘুরতে এসেছেন।তিনি বলেন, আমি জাদুঘরে আগে অনেকবার এসেছি,কিন্তু পরিবার নিয়ে এবারই প্রথম আসলাম।আমার বাচ্চারা জানতোই না যে, ঢাকায় মাটির নিচে একটি জাদুঘর আছে।তাই ওদের এখানে নিয়ে এসেছি।এছাড়া আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানতো একটা ঐতিহাসিক স্থান,এটা জানাতে ও মুক্তিযুদ্ধের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এই জাদুঘরে আসা।

স্বাধীনতা জাদুঘরে দ্বায়িত্বরত এক কর্মী মো. শাকিল জানান,অন্য সময়ের থেকে ঈদের সময় দর্শনার্থী বেশি হয়েছে।তবে স্বাধীনতা দিবস বা বিজয় দিবসের মতো দিনগুলোতে দর্শনার্থী আরও বেশি হয়।

 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের ৪৪ বছরে ২০১৫ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত হয়েছে স্বাধীনতা জাদুঘর।ওই বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসেই জাদুঘরটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর।

গ্রীষ্মকালে (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) এই জাদুঘর শনিবার থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে।আর শীতকালে (অক্টোবর থেকে মার্চ) সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে শুক্রবার খোলা থাকে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।বৃহস্পতিবার এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে বন্ধ রাখা হয় জাদুঘর।

 

 

আরও খবর

Sponsered content

আরও খবর: পর্যটন শিল্প ও সাহিত্য প্রাকৃতিক রুপচর্চার খবর:-

বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দ্বীপ জনপদ কুকরি-মুকরি

ইসরাইলি হামলায় প্রায় ২৩ মিলিয়ন টন ধ্বংসাবশেষ তৈরি করেছ -জাতিসংঘ

পর্যটকদের কাছ থেকে নগদ টাকা এবং ১৭টি মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী

প্রতি সপ্তাহের বুধবার ধানমন্ডি লেক ঘিরে পরিচালিত সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে-তাপস

লোডশেডিংয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেও কিছুটা সময় লাগবে-বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী,নসরুল হামিদ

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভটির পাশেই মাটির নিচে স্বাধীনতা জাদুঘরটির অবস্থান