প্রতিনিধি ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৪:৫৫:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
ডা. মুনা তালুকদার।।শীতকালীন সবজি হিসেবে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে নানা ধরনের মুলা।সাদা,লাল ও বেগুনি রঙের মুলা পাওয়া গেলেও সাদা মুলাই মানুষ পছন্দ করে বেশি।খুবই অল্প দামের প্রচুর পুষ্টিকর একটি সবজি হলো এই মুলা।জানেন কি,মুলা কোলন,পেট,অন্ত্র,মুখ ও কিডনি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে।ক্যানসারের কোষগুলোকে পুনরুৎপাদন করতে বাধা দেয় এ সবজি।এ ছাড়া মুলা খুব কম ক্যালরিযুক্ত সবজি।যাঁরা ডায়েট করেন,তাঁরা নিয়মিত মুলা খেতে পারেন।এতে কোনো কোলেস্টেরল নেই।মুলায় আছে ভিটামিন সি,যা দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে,জানালেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন ট্রেইনি (এফসিপিএস পার্ট ২) ডা. মুনা তালুকদার।
শীতকালে প্রতিদিন মুলা খেলে সর্দিকাশির সমস্যা এড়ানো যায়।
মুলা খেলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে।
মুলা পাচনতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে এবং হজমের উন্নতি ঘটায়।
মুলা রক্তে শর্করার পরিমাণও অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
মুলা শরীরে লোহিত রক্তকণিকা সংশ্লেষণে সাহায্য করে।
এত যে গুণ এই মুলার,তা খেতে অনেকেরই আছে আপত্তি। কারণ,বেশির ভাগ মানুষই মুলা খেলে গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন,প্রায়ই যা বিব্রত হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।আবার মুলার উটকো গন্ধ অনেকেরই অপছন্দ।
এ প্রসঙ্গে আকিজ কলেজ অব হোম ইকোনমিকসের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমাইয়া হোসেন জানান,মুলায় আছে প্রচুর ফাইবার,সেই সঙ্গে আছে সালফারসমৃদ্ধ অ্যামিনো অ্যাসিড।এই উপাদানগুলো পেটে থাকা ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে গাঁজনপ্রক্রিয়ায় প্রচুর গ্যাস তৈরি করে।
তাই বলে কি এই সবজির পুষ্টি মিলবে না?অবশ্যই মিলবে। এ জন্য কিছু বিষয় মেনে মুলার তরকারি খাওয়ার পরামর্শ দিলেন পুষ্টিবিদ।যেমন মুলা ঝোল করে অথবা ভাজি করে খাওয়া ভালো।তবে তার সঙ্গে অন্য সবজি মিশয়ে নিতে হবে। চাইলে মাছ বা মাংস দিয়েও মুলা রান্না করতে পারেন।
শুধু মুলার তরকারি খেলে গ্যাস হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।কাঁচা মুলা খাওয়া একবারেই ঠিক নয়। মুলা ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে।মুলার গন্ধ এড়াতে রান্নার সময় তেল একটু বেশি ব্যবহার করতে হবে।যাঁরা ক্যালরি-সচেতন,তাঁরা মুলার ঝোল খেতে পারেন।আর সকালের নাশতায় মুলার কোনো পদ রান্না না খাওয়াই ভালো।আর একবারের খাবারে মুলা তিন থেকে চার টুকরার বেশি খাওয়া যাবে না।
মুলা হজম হতে অনেক সময় নেয়।আর এ জন্য মুলার তরকারি খেয়েই ঘুমাতে যাবেন না।একটু হাঁটাহাঁটি করুন। কারণ,এক জায়গায় বসে থাকলে হজমপ্রক্রিয়ার গতি ধীর হয়।আর মুলার তরকারি খেতে হবে দিনের বেলা।রাতে মুলা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।