প্রতিনিধি ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১:১১:১১ প্রিন্ট সংস্করণ
মাজহারুল ইসলাম।।বাবুল আক্তার তার মামলায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলেন তারা হলেন: পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, পিবিআই চট্টগ্রামের এসপি নাজমুল হাসান, কর্মকর্তা নাঈমা সুলতানা, পরিদর্শক (ওসি খুলশী) সন্তোষ কুমার চাকমা, পরিদর্শক (বর্তমানে ডিবি সিএমপি) এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম ও পুলিশ পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবীর।
প্রশ্ন হচ্ছে: আদালত কি এ মামলা আমলে নিবে? নিলেও কি সে মামলার সুষ্টু তদন্ত হবে? সর্বোপরি ভুক্তোভোগী কি ন্যায় বিচার পাবে?
এত সব প্রশ্ন করার কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথাগত পরিস্থিতি। এখানকার সর্বক্ষেত্রই পক্ষপাতদুষ্ট যা সর্বজন স্বীকৃত।
লোকে বলে, এদেশের আইন-আদালত, বিচার-শালিসি, নিরাপত্তা-অধিকার, সত্য-মিথ্যা এ সবকিছুই প্রভাবশালীদের প্রভাবের পকেটস্থ। আর বর্তমান কালের বাজারে এদেশে দাদাদের যে পরিমাণ পরাক্রমশালী প্রভাব বিদ্যমান তা একজন রিক্সাওয়ালাও খুব ভালো করে জানেন।
অতএব সেই প্রভাবের প্রশ্নে এবং এতো সব প্রভাবশালীদের প্রভাব থেকে রক্ষা পেয়ে কি সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের মামলার আবেদন গৃহীত হবে?
চট্টগ্রামে বিশাল স্বর্ণের খনিতে অভিযান চালিয়ে মূলতঃ সাবেক এসপি বাবুল আক্তার একটি আন্তর্জাতিক সোনা চোরাচালানকারী সিণ্ডিকেটের টুটি চেপে ধরেছেন আর এতে করে তাদের আঁতে যে ঘা লাগেছে এবং বনজ কুমার মজুমদারও যদি সেই চক্রের সদস্য হনই তবে তো তিনি পোষ্ট পজিশনের দিক দিয়ে বিগবসই হবেন, আশা করি একথাটা না বললেও চলে, নয়কি?
বাবুল আক্তারের সাথে বনজ কুমার মজুমদারের চোরাই স্বর্ণ নিয়ে কন্ট্রিডাকশনটা আর কিছুতেই অস্বীকার করা যাবে না বাবুল আক্তারের সাথে তার উর্ধোতনদের মোবাইলের কথোপকথন শোনার পরে।
এছাড়াও বাবুল আক্তারকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়াটাও তো অস্বীকার করতে পারবেন না দাদা বনজ কুমার মজুমদার, আর তারই যথাযোগ্য পদক্ষেপ হিসেবে বাবুল আক্তার আজ সত্যি সত্যিই তার চাকরী হারা, বাবুল আক্তার তার প্রিয়তমা স্ত্রী হত্যার আসামি।
সাবেক এসপি বাবুল আক্তার যে এক জন সৎ ও দক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা তা তার কর্মকান্ডের রেকর্ড ও সাবেক আইজিপি শহীদুল হকও বলেছেন। আশা করি বর্তমান আইজিপিও তার বিষয়ে নিশ্চয়ই অবহিত।
ওদিকে বাবুল আক্তারের সাথে তার স্ত্রীর যে অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক ছিলো তার প্রমাণ তো তার শশুর বাড়ীর লোকজন দিয়েই দিয়েছেন তাদের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন আচরণ ও কনভারসেশনে।
তাছাড়াও মিতু হত্যার পর বাবুল আক্তারের জীবন যাপন তো পরিস্কার ভাবেই প্রমাণ করে যে সে তার স্ত্রী সন্তানদের প্রতি খুবই অনুরাগী একজন মানুষ।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে,বাবুল আক্তার কেনো তার স্ত্রীকে খুন করবেন তার কারণ হিসেবে যা বলা হয়েছে তার কোনো শক্তপোক্ত প্রমাণ কিন্তু দেখানো হয়নি এবং এই সামান্য কারণে একজন বাবুল আক্তার তার সোর্সকে দিয়ে নিজস্ত্রীকে এভাবে খুন করাবেন,একথা কোনো সুস্থ মস্তিষ্ক কখনোই মেনে নেবে না।
কেননা এতোবড়ো আহাম্মকী একজন পকেটমারও কখনো করতে পারে না,সেখানে বাবুল আক্তার তো একজন ব্রিলিয়ান্ট আইকন পুলিশ অফিসার।
আমাদের বাঙ্গালী জাতিটার জীবনে সবচেয়ে বড়ো পরাজয় হচ্ছে, আইন ও বিচার প্রতিষ্ঠায় যে পুলিশ ছাড়া কারো উপায় নাই বর্তমানের সেই পুলিশ নামক সর্ষের ভিতরেই গড়ে উঠেছে নীতিহীন ও দুর্নীতি নামক মানসিক রোগাক্রান্ত ভুতের আকড়া! এক্ষেত্রে আমরা মনে করি, ‘চলো বদলে যাই’এই মানসিকতার রিভেঞ্জ নিয়ে বর্তমান আইজিপি সাহেব চাইলে বিদায় বেলায় কিঞ্চিত হলেও বদলে দিয়ে যেতে পারেন এদেশের পরিবেশ ও পরিস্থিতি আর তিনি নিজেও হয়ে যেতে পারেন এক অদ্বিতীয় ইতিহাস।
তিনি পারেন দুঃসময়ের অন্ধকারে আচ্ছন্ন এই বাংলাদেশে হঠাৎ করেই এক নতুন সূর্য্য হয়ে জ্বলে উঠতে।
আমরা মনে করি, একজন মানুষ কখনোই বদলাবে না তা হতে পারে না।
…..এক ঘেয়ে স্বার্থপর জীবনও তো একজন মানুষের আজীবন ভালোলাগার কথা নয়, যদি না সেই মানুষটার সমস্ত চিন্তা চেতনা, আখলাকগুলো একেবারেই পঁচেগলে নষ্ট হয়ে না যায়।