জাতীয়

লোডশেডিং পরিস্থিতি ঠিক হতে আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে

  প্রতিনিধি ৫ জুন ২০২৩ , ৬:৩৫:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং আরো বেড়েছে। উৎপাদন বাড়িয়ে গ্রাহক চাহিদা মেটানোর মতো জ্বালানির সংস্থান নেই।ফলে বৃষ্টি না হলে বা গরম না কমলে আগামী দুই সপ্তাহে পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে না।এমন অবস্থায় গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবনে কষ্ট-ভোগান্তিও কমছে না। শিশুদের দাবদাহ থেকে রক্ষায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।

গতকাল রবিবার বিদ্যুৎ-জ্বালানি পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।তিনি বলেন,বেশ কিছুদিন যাবত গ্রাহকেরা দেখছেন যে লোডশেডিং বেড়ে গেছে।জ্বালানি হিসেবে গ্যাস, কয়লা ও জ্বালানি তেলের জোগান দিতে কষ্ট হচ্ছিল। এ কারণে লোডশেডিং ধীরে ধীরে বেড়ে গেছে।লোডশেডিং পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে গেছে। তবে এ পরিস্থিতি থাকবে না। লোডশেডিং পরিস্থিতি ঠিক হতে আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

রাজধানীতে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন,পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কত দ্রুত কয়লা নিয়ে আসা যায়,তার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি অর্ধেক সক্ষমতায় চলছে।বড়পুকুরিয়া কয়লা কেন্দ্রটিও অর্ধেক সক্ষমতায় চলছে।জ্বালানি তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও অর্ধেক সক্ষমতায় চলছে।দ্রুত সমাধানে বিদ্যুৎ বিভাগ চেষ্টা করছে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাপপ্রবাহ চলছে, তাই বিদ্যুৎ চাহিদা বেড়ে গেছে। আড়াই হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে।ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।গত বছরের জুলাইয়ের মতো সময়সূচি নির্ধারণ করে পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের চিন্তা আপাতত নেই।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনের জন্য তৈরি আছে। দুই মাস আগে থেকেই চেষ্টা করা হচ্ছিল।কিন্তু জ্বালানি আসার পেছনের বিষয় সব সময় তাদের হাতে থাকে না। অর্থনৈতিক বিষয়,জ্বালানি আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলার বিষয় থাকে।সব সমন্বয় করতে হয়।সমন্বয় কোথাও বাধাগ্রস্ত হলেই সমস্যা হয়।এবারও তাই হয়েছে। তনি আরো বলেন, পেট্রোল পাম্পের সমস্যা হওয়ার কথা না।কেননা পেট্রোল ও ডিজেলের সংকট নেই।

এদিকে তীব্র দাবদাহের কারণে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম ৫ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। প্রথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণা অনুযায়ী আজ সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পাঠদান ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,দেশব্যাপী তীব্র দাবদাহের কারণে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এর আগে দাবদাহের কারণে সারা দেশে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের সব খেলা স্থগিত করা হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের চার জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে ছয় বিভাগ ও তিন জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন,দেশে কয়েক দিন ধরে ৩৭ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। এমন গরমে জ্বালানি সরবরাহ ঠিক থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদনও ঠিক রাখা যেত।কিন্তু সে অবস্থা নেই।এখন গরমে লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের কষ্ট দ্বিগুণ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাপমাত্রা না কমলে বা বৃষ্টি না হলে লোডশেডিং কমবে না,মানুষের কষ্টও কমবে না।

আরও খবর

Sponsered content