সারাদেশের খবর

বান্দরবানে দিনদুপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যাংক ডাকাতি

  প্রতিনিধি ৩ এপ্রিল ২০২৪ , ৫:১৬:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

বান্দরবান প্রতিনিধি।।বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলার পর সশস্ত্র ব্যক্তিরা পাশের একটি চায়ের দোকানে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভল্টের চাবি নেয় এবং তালা খোলার চেষ্টা করে বলে জানিয়েছেন শাখার ক্যাশিয়ার উথোয়াইচিং মারমা।

মঙ্গলবার রাতে শতাধিক সশস্ত্র ব্যক্তির হামলার সময় ব্যাংকটি খোলাই ছিল জানিয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত ক্যাশিয়ার বলছিলেন,তখন তিনি আসলে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এই ব্যাংক কর্মকর্তা বলছিলেন, “সোমবার সাড়ে ৮টার দিকে অফিসের পেছনের একটা দোকানে চা খেতে যান।তখন ব্যাংক খোলাই ছিল।হঠাৎ করেই তিন লোক এসে তাকে ঘিরে ফেলে।সবার হাতেই অস্ত্র ছিল।

“তার পর আমার পকেট হাতড়ে টাকা ও চাবি নিয়ে নেয়। ১২০০ টাকা মতো ছিল তাও নিয়ে নেয়।চাবি নিয়ে আমাকে বলে,সামনে দাঁড়িয়ে থাক।আমার দিকে অস্ত্র ধরছে। বলছে, লড়লেই গুলি করে দেব।আমি ওই জায়গাতেই দাঁড়িয়ে থাকি। ভয়ে তো আমি আধামরা।

হামলাকারীরা শতাধিক ছিলেন এবং তারা ব্যাংক ও আশপাশের এলাকা ঘিরে রাখে উল্লেখ করে ক্যাশিয়ার বলেন, “কিন্তু ব্যাংকের ভেতরে কী ঘটছে আমি বলতে পারব না। তারা চলে যাওয়ার পর সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ আসে। তারপর আমি আস্তে আস্তে আগায়া আসলাম।

“ব্যাংকে ঢুকে দেখি,সবকিছু ভাঙা।কাগজপত্র সব ছিঁড়ে ফেলছে। কম্পিউটার ভাঙা।ড্রয়ার খুলছে,খরচের যে টাকা ছিল সব নিয়ে গেছে।তারা ভেতরে সবকিছু তছনছ করে ফেলে।”

উথোয়াইচিং মারমা বলেন, “ভল্ট খুলতে গেলে দুইজনের চাবি লাগবে-ক্যাশিয়ার এবং ম্যানেজাররের।আমার মনে হয়, আমার কাছে থাকা চাবি তারা ভল্ট খোলার চেষ্টা করেছে। ম্যানেজার থেকে চাবি না পেয়ে তাকে হয়ত তুলে নিয়ে গেছে।”

তিনি আরও বলেন,“সামনে পাহাড়িদের বর্ষবরণ উৎসব এবং ঈদের জন্য বেতন ভাতা দেওয়ার জন্য ব্যাংকে মোট এক কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা ছিল।”

রুমা বাজারে প্রবেশের প্রায় এক কিলোমিটার আগেই সোনালী ব্যাংকের কার্যালয়টি।তার বিপরীতেই রয়েছে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স।ব্যাংক থেকে থানার দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। আর রুমা বাজারে সেনাবাহিনী ও বিজিবির ক্যাম্পও রয়েছে।

সশস্ত্র ব্যক্তিরা এখানে অবস্থান নেওয়ার সময় রাস্তা ব্লক করে রাখে যেন কেউ সেখানে আসতে না পারে।তারা প্রায় এক ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন।এই সময় রুমায় কোনো বিদ্যুৎ ছিল না। সশস্ত্র ব্যক্তিরা চলে যাওয়ার ১৫ মিনিট পর বিদ্যুৎ আসে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছিলেন,ঘটনার সময় ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন পাশের উপজেলা কমপ্লেক্সের মসজিদে নামাজ পড়ছিলেন।সেখান থেকে তাকে নিয়ে আসা হয় ব্যাংকে।পরে তাকে তুলে নিয়ে যায় সশস্ত্র ব্যক্তিরা।

আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান,ব্যাংক লুটের পর সশস্ত্র ব্যক্তিরা রুমার সাংগু কলেজের পাশ দিয়ে যে রাস্তাটি পাহাড়ের দিকে গেছে সেদিকে চলে যায়।

এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা,নিরাপত্তা রক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করা হয় এবং অপহরণ করা হয় ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে।

এ ঘটনায় পাহাড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও খবর

Sponsered content