সারাদেশের খবর

পাঁচ লাখের জায়গায় ৫৫ লাখ লিখে আইনজীবী আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে-হিরো আলম

  প্রতিনিধি ১১ জানুয়ারি ২০২৩ , ১:৫৩:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

বগুড়ায প্রতিনিধি।।আইনজীবীর ভুলের কারণে সঞ্চয়পত্রের টাকার অংক গরমিল হয়েছে বলে দাবি করেছেন বগুড়ার দুটি আসন থেকে উপ-নির্বাচনের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।

নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা ধরে সংবাদমাধ্যমের করা প্রতিবেদনে ৫৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের ব্যাপারে জানতে চাইলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত এ কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এ কথা বলেন।

বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম মঙ্গলবার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এসে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার জন্য আপিল করেন।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,“আমার আইনজীবী আমান উল্লাহ সঞ্চয়পত্রে পাঁচ লাখের জায়গায় ৫৫ লাখ লিখে আমাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছেন।এটা নিয়ে মনোনয়ন বাতিল বিষয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছি।”

পরে এ বিষয়ে বগুড়ার আইনজীবী আমান উল্লাহর সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, “কম্পিউটার কম্পোজে ভুল করেছে।আমার হাতের লেখা যেটি ছিল তা পাঁচ লাখই লেখা ছিল।সেখানে অংকে ৫৫ লাখ লেখা থাকলেও কথায় কিন্তু লেখা নেই।তাড়াতাড়ি করে কাগজ নিয়ে যাওয়ায় আমিও বিষয়টি খেয়াল করিনি।“

১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসহ সমর্থনসূচক তালিকায় ‘গরমিল’ পাওয়ার কথা জানিয়ে গত রোববার বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাতিলের তিন দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আপিল করার সুযোগ আছে।

আপিল করে বেরিয়ে হিরো আলম বলেন, “সকাল ১১টায় নির্বাচন কমিশনে আপিলের আবেদন জমা দিয়েছি। যদি নির্বাচন কমিশন আমার আবেদন বাতিল করে তাহলে হাই কোর্টে যাব।”

“ভোট করবো, যে কোনো একটি আসনে বৈধতা পেলে আমার কোনো অভিযোগ নেই।তবে দুটি আসনে বাতিল হলে আমি সর্বোচ্চ আদালতে যাব।গতবারও হাই কোর্ট থেকে সুবিচার পেয়েছি।আশা করবো,নির্বাচন কমিশনও সুবিচার করবেন।“

উপ-নির্বাচনে ‘সিংহ মার্কা’চেয়েছেন জানিয়ে এই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর বলেন,“মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ার পর সিংহের মতই নির্বাচনী এলাকায় প্রচারে চলে আসবো।বিগত সংসদ নির্বাচনে অতটা ভাবিনি।লোক কম ছিল বলে হামলা করেছিল। এবার নিজস্ব সংগঠন করে লোকজন সম্পৃক্ত করবো নির্বাচনে। ভোটের ফলাফল যাই হোক,ভোটের মাঠে লড়বো সিংহের মতই।“

হিরো আলম আরও বলেন,দুর্নীতিবাজদের টাকার হিসাব নেওয়া হয় না।আমি স্টেজ প্রোগ্রাম,গান,ইউটিউব,ফেইসবুক থেকে উপার্জন করি।আমাকেই কোটিপতি হিসেবে ঘিরে ধরে প্রশ্ন করা হয়।আমি তো কষ্ট করে টাকা উপার্জন করি।

“বগুড়ায় যারা ভোটে দাঁড়িয়েছেন তাদের কোটি টাকার উৎস নিয়ে তো কেউ কথা বলেন না।আমিও দান করেছি,সামান্য উপার্জন থেকে সাধারণ মানুষকে।কিন্তু ভোটের আগে আমি তো বলছি না আমি এটা করেছি,ওটা করেছি।বগুড়া সদরেই তো জনকল্যাণমূলক কাজ করেছি।তবে,আমি কোনো দুর্নীতি করি না।”

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বগুড়া-৪ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন চেয়েছিলেন হিরো আলম।কিন্তু জাতীয় পার্টি তাকে মনোনয়ন দেয়নি।পরে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করলে দুই দফায় যাচাই-বাছাই করার পর তার সেই মনোনয়ন বাতিল করা হয়।

হিরো আলম তখন হাই কোর্টে গিয়ে প্রার্থিতা ফিরে পান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে যান হিরো।

বগুড়ার ওই দুটি আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে মোট ২২ জনের মধ্যে ১১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনের পাঁচজন এবং বগুড়া-৬ আসনের ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন।

বগুড়ার কেবল অপারেটর আশরাফুল আলম নিজের মতো করে গান গেয়ে ও মিউজিক ভিডিও তৈরি করে সোশাল মিডিয়ায় তুলে দেশ এবং দেশের বাইরেও এখন পরিচিত।

গতবছর তিনি রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন। তারপর পুলিশ তাকে ডেকে নিয়ে সতর্ক করে।তা নিয়েও সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।

আরও খবর

Sponsered content