সম্পাদকীয়

নিষ্ঠুরতা আর হিংস্রতার পেছনে থাকে ইডের প্রভাব

  প্রতিনিধি ১৯ মার্চ ২০২৩ , ১১:১৭:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।নিষ্ঠুরতা আর হিংস্রতার পেছনে থাকে ইডের প্রভাব।ফ্রয়েডের মতে,মানুষের মনের গঠনে তিনটি উপাদান রয়েছে।ইড,ইগো আর সুপার ইগো।ছবিটি প্রতীকী এই ভারসাম্য রক্ষা করাটাই ইগো ডিফেন্স মেকানিজম।মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের মতে,নৃশংস আচরণের পেছনে রয়েছে মানুষের অবদমিত কামনা-বাসনা। একে তিনি অবচেতন মনের খিড়কি খুলে দেওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন।অবচেতনে মানুষ যা কামনা করে; শিক্ষা, সভ্যতা,সামাজিকতা আর নৈতিকতা দিয়ে সেগুলোকে ঢেকে রাখে তার চেতন মন।সেই অবদমিত কামনা সরাসরি পূরণ হয় না বলে হিংস্রতা আর নৃশংসতার মধ্য দিয়ে ঘুরপথে পূরণ করার চেষ্টা চলে।

ফ্রয়েডের মতে,মানুষের মনের গঠনে তিনটি উপাদান রয়েছে। ইড,ইগো আর সুপার ইগো।আমাদের সব কামনা-বাসনার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করে ইড।সে কেবলই আমাদের তৃপ্ত করতে চায়,যেভাবেই হোক না কেন।আমাদের নৈতিকতার মধ্যে বেঁধে রাখতে চায় সুপার ইগো।এই দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে ইগো।

মনের গঠনে থাকা ইড মানুষের কামনার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করে। ছবিটি প্রতীকীমনের গঠনে থাকা ইড মানুষের কামনার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করে।মানুষ যখন ইড দ্বারা পরিচালিত হয়,তখন তার মধ্যে পাশবিক প্রবৃত্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।নিষ্ঠুরতা আর হিংস্রতার পেছনে থাকে ইডের প্রভাব।

ফলে একজন মা যখন নিজের সন্তানকে হত্যা করে তখন তার সুপার ইগো পরাজিত হয়,এলোমেলো হয় ইগো ডিফেন্স, সে হারিয়ে ফেলে তার মানবিক গুণাবলি।এখন কে কীভাবে ইগোকে প্রতিহত (ডিফেন্স) করবে,কীভাবে ইডের প্রভাববলয় থেকে নিজেকে রক্ষা করবে,নির্ভর করে তার শৈশবরে বিকাশ,পারিবারিক পরিবেশ,জেনেটিক গঠন,সামাজিক শিক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং তার সমাজ ও সংস্কৃতির ভৌতকাঠামোর ওপর।

আবার হয়তো পরকীয়ায় জড়িয়েছেন এমন একজন মানুষ যে তাঁর এই সম্পর্কটিকে কোনো রূপ দিতে পারছেন না।সব সময় লুকিয়ে রাখছেন।ফলে তাঁর মধ্যে তৈরি হচ্ছে হতাশা।তিনি এই হতাশা ঢেকে রাখতে সর্বদা আস্ফালন করেন।নিজের হতাশাকে কাটাতে নিজের অপ্রাপ্তিবোধের তাড়না থেকে এমন কাউকে বেছে নেন যিনি প্রতিবাদী নন।

সেই দুর্বলের ওপর হিংস্রতা দেখিয়ে একধরনের মানসিক পরিপূর্ণতা পেতে চান।এই তত্ত্বকে বলা হয় ‘ফ্রাস্ট্রেশন-অ্যাগ্রেসন হাইপোথিসিস’।এ কারণেই আমরা দেখি দুর্বলের ওপর একজন হতাশ আর ব্যর্থ মানুষের আস্ফালন ও হিংস্রতা; যার পেছনে রয়েছে তার অপ্রাপ্তি,এই অপ্রাপ্তি তার পরকীয়ার সম্পর্কটিকে সামাজিকভাবে স্বীকৃতি দিতে না পারার কারণেই তৈরি হয়।তাই দুর্বলের ওপর যিনি আস্ফালন করলেন আদতে তিনি মোটেই সবল নন,তিনি সেই আপাত দুর্বলজনের চেয়ে শতগুণ দুর্বল,ব্যর্থ আর হতাশ।

আরও খবর

Sponsered content