স্বাস্হ্য ও জীবন পরিচর্যা

নিয়ম মেনে ডায়াবেটিস রোগীরাও রোজা রাখতে পারবেন-এসিইডিবি

  প্রতিনিধি ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ , ১২:৫৭:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রমজানের দুই-তিন মাস আগে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়ম মেনে ডায়াবেটিস রোগীরাও রোজা রাখতে পারবেন বলে জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট ও ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশ (এসিইডিবি)।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির নেতা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

সংবাদ সম্মেলনে এসিইডিবির নেতা ও চিকিৎসকরা বলেন,রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম। তাই রোজা রাখা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের জন্য অবশ্যই করণীয়।গবেষণায় দেখা গেছে,বাংলাদেশের প্রায় ৮০ ভাগ ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখেন।আরেক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে,সারা বিশ্বের প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখেন।কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে যারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোজা রাখেন তারা বেশ কিছু জটিলতার সম্মুখীন হন।বিশেষ করে রক্তে সুগারের স্বল্পতা (হাইপোগ্লাইসেমিয়া),রক্তে সুগারের আধিক্য (হাইপারগ্লাইসেমিয়া),ডায়াবেটিস কিটোএসিডোসিস এবং পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনে ভোগেন।

ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন জানিয়ে তারা আরও বলেন,যাদের সামর্থ্য আছে তাদের ডায়াবেটিস এমন কোনও বাধা নয়।তবে প্রয়োজন পূর্ব প্রস্তুতি।ডায়াবেটিস রোগীরা রমজানের কমপক্ষে ২-৩ মাস পূর্বে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নেবেন। সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে,রমজানের পূর্বে প্রস্তুতি নিয়ে যারা রোজা রাখেন তাদের হাইপোগ্লাইসেমিয়াসহ অন্য জটিলতা রমজানের পূর্বের চেয়েও অনেক কম হয়।আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি সহজে এবং নিরাপদে রোজা রাখার সুযোগ করে দিয়েছে।রোজা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলেও বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত।

রোজা মানুষকে সুশৃঙ্খল জীবন যাপনে উদ্বুদ্ধ করে জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন,সুশৃঙ্খল জীবন ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অপরিহার্য।ডায়াবেটিস রোগীরা রোজা রাখার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে আগে থেকে পরামর্শ করে সুগার কন্ট্রোলের মাধ্যমে রোজা রাখলে আরও বেশি সুবিধা হবে।সুতরাং এ কথা বলা অত্যুক্তি হবে না যে,রোজা রাখার আকাঙ্ক্ষা ডায়াবেটিক রোগীর ডায়াবেটিস কন্ট্রোলের ব্যাপারে আরও বেশি উদ্যোগী করবে।

ডায়াবেটিস রোগীর রমজানের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পর্কে যেসব পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা সেগুলো হলো- রমজানের ফরজ রোজা সঠিকভাবে আদায়ের জন্য রোজার ২-৩ মাস আগে থেকে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে রোজার প্রস্তুতি নেওয়া; ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে রোজার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাগুলো জানা এবং এর উত্তরণের উপায়গুলো সম্পর্কে জানা; হাইপো বা হাইপার গ্লাইসেমিয়া না হওয়ার জন্য খাদ্য,ব্যায়াম এবং ওষুধের সমন্বয় করা; দিনে রাতে সুগার পরিমাপ করে ওষুধ সমন্বয়ের ব্যাপারে রোগী ও রোগীর পরিবারে সকলের জেনে নেওয়া; প্রত্যেক রোগীর জন্য একই ব্যবস্থা প্রযোজ্য না,তাই রোগীর অবস্থা অনুযায়ী আলাদা আলাদা ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে ৩ বারের ওষুধ ১ বার বা ২ বারে পরিবর্তন করে নেওয়া; রমজানের পূর্বে থেকে দুপুরের ওষুধ রাতে খাওয়া শুরু করা; এবং রমজানের পূর্বে একাধিক নফল রোজা রেখে প্রস্তুতি নেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার,এসিইডিবির সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন,সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ।এসিইডিবির দফতর সম্পাদক ডা. মোবারক হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসিইডিবির ফোকাল গ্রুপের সদস্য ডা. মাহমুদুল হাসান, ডা. মোর্শেদ আহমেদ খান, ডা. মঈনুল ইসলাম ও ডা. মো. আতিকুর রহমান।

আরও খবর

Sponsered content