সারাদেশ

গরমের ঠ্যালায় কইলজা ফাটি যায়!

  প্রতিনিধি ২৬ এপ্রিল ২০২৪ , ৫:০৮:০০ প্রিন্ট সংস্করণ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি।।তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে লালমনিরহাটের জনজীবন।বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।জীবিকার তাগিদে তারা বের হলেও কিন্তু আগুন ঝরা গরমে মানুষ ঘরেই বেশি থাকছে। ফলে কর্মহীন হয়ে পড়ছেন শ্রমজীবীরা।

আদিতমারী বাজারের ভ্যানচালক সিরাজুল বলেন, “বৈশাখের চনচনা অইদোত (রোদে) মাল নিয়া ভ্যান চালাইতে কষ্ট হয়।গরমের ঠ্যালায় কইলজা ফাটি যায়। তাও বাইর হয়েছি।”

একটু জিরানোর জন্য গাছের ছায়ায় আশ্রয় নেওয়া এই শ্রমজীবী বলেন, “ঠান্ডাত (গাছের ছায়া) একনা দম নিবার নাগছি।কিন্তু এমনে গরীম মানুষ বাঁচে কেমন করি।”

তিনি আরও বলেন,এভাবে চলতে থাকলে তারা কর্মহীন হয়ে পড়বেন।পরিবার পরিজনের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেওয়া দুরূহ ব্যাপার হয়ে পড়বে।

দুপুরের দিকে দেখা যায় লালমনিরহাট পাটগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন ও পথচারীর সংখ্যা কম,জরুরি কাজ ছাড়া কেউ বাহিরে বের হচ্ছেন না।তার মধ্যেই যাত্রীর অপেক্ষায় ছিলেন রিকশাচালক হামিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, “গরমে গত চার-পাঁচ দিন ধরে আয় রোজগার কমে গেছে।বেলা সাড়ে দশটা থাকি এগারটার পর রাস্তায় আর কোনো যাত্রী থাকে না “

বাসচালক রমজান আলী বলেন,চরম তাপের কারণে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় পিচ (বিটুমিন) উঠে গাড়ির চাকার সাথে লেগে যাচ্ছে।এতে খুব সতর্ক অবস্থায় গাড়ি চালাতে হচ্ছে।”

এই প্রকৃতির এমন বিরূপ আচরণে ভুগছেন মাঠে কাজ করা কৃষকরাও।  আদিতমারী উপজেলার বসুনিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক বলেন, “এই অইদের (রোদ) ঠ্যালায় জানটা ব্যার হয়া যাবার নাগছে বাহে!জারের (শীত) সমায় (সময়) কনকনা ঠান্ডা আর গরমের সমায় গরম। হামরা ঘর থাকি ব্যার হওয়া যায় না।জানটা শ্যাষ (শেষ) হয়া গেইল।”

এদিকে আগুন ঝরা বাতাসে নারী-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ দিন দিন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

লালমনিরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রমজান আলী জানান,প্রচণ্ড গরমে শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দৈনিক শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।জেলার প্রতিটি হাসপাতালে শিশু রোগী ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

<div class="paragraphs"><p>জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের না হওয়ায় সড়কে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে।</p></div>

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের না হওয়ায় সড়কে মানুষের উপস্থিতি কমে গেছে।

এই সময়ে বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ,যথাসম্ভব বাহিরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।তিনি বলেন,জরুরি প্রয়োজনে বের হতে হলেও সঙ্গে খাবার পানি রাখা,ছাতা ব্যবহার করা উচিত।

কুড়িগ্রাম আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বলেন,শুক্রবার দুপুরে লালমনিরহাটে তাপমাত্রা ছিল ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।বৃহস্পতিবার যা ছিল ৩৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কার কথা জানান এই আবহাওয়াবিদ।

এদিকে লালমনিরহাট জেলা তথ্য অফিসার শাহজাহান আলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গরম থেকে রক্ষায় জেলার সর্বত্র সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়ে

 

আরও খবর

Sponsered content