সম্পাদকীয়

কেন হবু সঙ্গীর ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা জরুরি?

  প্রতিনিধি ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ , ১:১৩:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।বিয়ের আগে হবু সঙ্গীর পারিপার্শ্বিক অবস্থা যাচাই করলে বিয়ের পর আপনাকে ঠকতে হবে না।উভয় অংশীদারেরই উচিত বিয়ের আগে একে অপরের সম্পর্কে অবগত হওয়া।বিয়ের আগে হবু সঙ্গীর ব্যাকগ্রাউন্ড বা পারিপার্শ্বিক অবস্থা যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।সঙ্গীর পরিচয় ও প্রকৃততা যাচাই সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য অপরিহার্য।বিয়ে সবার জীবনেরই সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি।বিয়ের মাধ্যমে সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা,সম্মান, প্রতিশ্রুতি ও বিশ্বাসের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।ডেটিং সাইট ও অ্যাপের এই যুগে এখন সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন।প্রযুক্তির নানা সুবিধা থাকলেও এর মাধ্যমে মিথ্যা,প্রতারণা ও কেলেঙ্কারির অনেক ঘটনায় প্রতিদিন সংবাদপত্রে চোখে পড়ে কমবেশি সবারই।

সঙ্গীর অতীত জানুন:-এক্ষেত্রে প্রথমেই সঙ্গীর অতীত সম্পর্কে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করুন।এতে করে বিয়ের পরে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়।সঙ্গীর করা ছোট বা বড় ভুল সম্পর্কে আপনার সঠিক ধারণা থাকলে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারবেন।

যৌতুকের চল আছে কি না:-বিয়ের সঙ্গে জড়িত সবচেয়ে বড় কুফল হলো যৌতুক।যখন আপনার সঙ্গী ও তাদের পরিবার যৌতুক দাবি করে,তখন বুঝতে হবে তাদের হাঁটুর গভীরে ঋণী।আর এমন পরিবারে বিয়ে হলে প্রায়শই যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটতে পারে আপনার সঙ্গে।

চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য জানুন:-একই সঙ্গে সঙ্গীর চরিত্র সম্পর্কে জানাও গুরুত্বপূর্ণ।এমনও হতে পারে আপনি যাকে নিয়ে নতুন জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি চারিত্রিকভাবে ভালো নন কিংবা অপরাধমূলক রেকর্ডে ভরা তার অতীত।বিয়ের পর সহিংসতা ও হয়রানি এড়াতে এই দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করতে হবে।

গার্হস্থ্য নির্যাতনের ঘটনা আছে কি না:-পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী প্রতি ৩ জনের মধ্যে ১ জন নারী ও ৪ জন পুরুষের মধ্যে ১ জন সঙ্গীর হাতে কোনো না কোনো ধরনের গার্হস্থ্য সহিংসতার সম্মুখীন হন।এ কারণে নিশ্চিত করতে হবে, আপনার সঙ্গীর অতীতে কোনো গার্হস্থ্য নির্যাতনের ঘটনা আছে কি না।

পরিচয় যাচাইকরণ:-হবু সঙ্গীর পরিচয় যাচাই করাও জরুরি। কারণ অনেকেই তাদের বাসস্থান,বয়স,আর্থিক অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে মিথ্যা বলেন।সততা ও বিশ্বাস একটি সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।তবে এটি পরিচয় জালিয়াতির মতো গুরুতর কিছু সম্পর্কে সতর্ক থাকতেও সহায়তা করে।

নেশাগ্রস্ত কি না:-এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে আপনার সঙ্গীর খারাপ কোনো অভ্যাস আছে কি না তা জানা।হতে পারে তিনি একজন নেশাগ্রস্ত বা মাদকাসক্ত ব্যক্তি।এমন ক্ষেত্রে বিষয়টি হবু সঙ্গীর পরিবারের কাছে গোপন করা হয়।ফলে বিয়ের পরে বাড়ে সহিংসতা।এমন ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক গড়বেন না ভুলেও।

বৈবাহিক অবস্থা নিশ্চিতকরণ:-আপনি সরাসরি সঙ্গীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।তবে যদি তারা সন্দেহজনক উত্তর দেয় তাহলে বুঝবেন তিনি আপনাকে সম্পূর্ণ সত্য বলছেন না।এক্ষেত্রে সঙ্গীর ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করুন।তিনি আদৌ কি অবিবাহিত,বিবাহবিচ্ছেদ বা আগে কোনো সন্তান আছে কি না তা সহজেই আপনি প্রতিবেশি,আত্মীয় কিংবা বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে জানতে পারবেন।

পরিবারের সঙ্গে পরিচিত হন:-কারও সঙ্গে নতুন সম্পর্কে শুরু করতে চাইলে জানতে হবে তার পরিবার ও পরিজন কেমন। যদি দেখেন সঙ্গী তার আত্মীয়দের সঙ্গে পরিচয় করাতে ইচ্ছুক নন,তাহলে বুঝবেন পারিবারিক কোনো সমস্যা আছে। পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যা কিন্তু সম্পর্কে খারাপ প্রভাব ফেলে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।

আর্থিক অবস্থা কেমন:-হবু সঙ্গীর আর্থিক পরিস্থিতি কেমন তা বিয়ের আগে অবশ্যেই যাচাই করতে হবে। এমনও হতে পারে তিনি ঋণগ্রস্ত।সেক্ষেত্রে বিয়ের পরে আর্থিক সমস্যা নিয়ে নানা ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে। এছাড়া তার ইনকাম সোর্স কী কিংবা আর্থিক অবস্থা কেমন সে বিষয়েও নিশ্চিত থাকুন।

সঙ্গীর ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এ কাজ এমনভাবে করুন যাতে হবু সঙ্গী ও তার পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ন না হয়।

আরও খবর

Sponsered content