সম্পাদকীয়

একাকী বিয়ের আনন্দের মতো,একাকী বিয়ের প্রাশ্চিত্তও কর!

  প্রতিনিধি ২৮ অক্টোবর ২০২২ , ১২:২৮:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।পালিয়ে বিয়ে করার আড়াই বছর পর বাচ্চা-কোলে বাড়ি ফিরলো বিশ বছরের সুমি।হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বাচ্চাটা মায়ের কোলে দিয়ে বললো–মা,আমি আর ওই বাড়িতে যাবো না,ছেলের মা আমারে দিয়ে সারা দিন খাটায়,আমার জামাইও ভালো না,আমারে টাকা দেয় না,সব টাকা ওর মারে দেয়!তোমাদের না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করে আমি অনেক অপরাধ ও ভুল করেছি মা,আমায় ক্ষমা করো দাও।

সুমির হঠাৎ আগমনে বাড়িতে মানুষ ভরে যায়।খারাপ খবর বাতাসের আগায় ছড়ায়!

সুমির মা বাচ্চাটাকে কিছুক্ষণ কোলে রাখলেন।ভাবছেন এইভাবেই তো একদিন পৃথিবী আলো করে তার কোল জুড়ে সুমি এসেছিলো।মেয়েকে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল মায়ের।মেয়ে লেখাপড়া করবে,মেয়ে আদর্শবান হবে, উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সরকারি অফিসার হবে,সবাইকে জানিয়ে একদিন মহা ধুমধামে মেয়ের বিয়েও হবে।

কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেলো!সেই যে একদিন মেয়ে কলেজে গেলো,সে যাওয়াই তার শেষ যাওয়া। সুমির মা আর কিছু ভাবতে পারে না।বাচ্চাটাকে নিজের কোল থেকে মেয়ের কোলে দিয়ে কি যেন খুঁজতে চলে গেলেন?!

কিছুক্ষণ পরে ঝাড়ু হাতে মেয়ের সামনে এসে বললেন–যেভাবে একদিন একা এই বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলি,এখন এই বাচ্চা নিয়েও সেভাবে চলে যা।এই বাড়িতে তোর কোনো স্থান নেই।একাকী বিয়ের আনন্দের মতো,একাকী বিয়ের প্রাশ্চিত্তও কর!

বাড়ি ভরা মানুষ,সবাই থইথই করছে।সুমি চলে যাচ্ছে চিরদিনের জন্য,হয়তোবা এই অপমানের পর আর কোনোদিন এদিকটায় পায়ে মাড়াতেও আসবে না সে!

বহুদিনের ক্লান্তিকর সফরের মাঝে একদিন হাজারো স্মৃতি সাঁতরে স্বামীর বুকে মাথা রেখে সুমি ভাবছে সেইসব অতীত দিনের কথা।মায়ের সেই রুষ্ট আচরণ সুমিকে বদলে দিয়েছিল পুরপুরি।নিজের ভুল বুঝতে পেরে শ্বশুর বাড়িতে ফিরে এসে সুমি নিজেকে সবার-প্রিয়-মতন-ধাঁচে সাজিয়ে নেয়।

এভাবেই সে শাশুড়ীর চোখে মেয়ে,স্বামী চোখে একজন বিশ্বস্ত বন্ধু হয়ে উঠে।আজ বিশ বছর পর স্বামী-সংসার নিয়ে সুমির সুখের কোনো অন্ত নেই।

আরও খবর

Sponsered content