আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভুক্তভোগীদের ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন-ইউএনও

নাটোর প্রতিনিধি।।নাটোরের গুরুদাসপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর দেওয়ার নামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলামের নেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায়। শুক্রবার সকালে সাতজন অভিযোগকারীকে তার বাসভবনে ডেকে ওই টাকা ফেরত দেন তিনি।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অভিযোগকারী আসমা বেগম ইঞ্জিরা বেগম,রাবিয়া বেগম,রিজিয়া বেগম,হাবিয়া বেগম,সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগমকে ইউএনও তার বাসভবনে ডেকে নেন।সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে অভিযোগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউএনও।

ঘুষের টাকা ফেরত পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে গুরুদাসপুর থানা মোড়ে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা হয় ওই অভিযোগকারী নারীদের।তারা বলেন,টাকা ফেরত দেওয়া জন্য ইউএনও শ্রাবনী রায় বৃহস্পতিবার রাতে ফোনে শুক্রবার তার সরকারি বাসভবনে আসতে বলেছিলেন।সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এসেছিলেন তারা।সেখানে বিষয়টি গোপন রাখার শর্তে অভিযোগকারী সাতজনের মধ্যে চারজনকে ৫০ হাজার করে এবং একজনকে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগমের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের পর টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইউএনও।পরে ফেরত পাওয়া টাকার বান্ডিল সংবাদকর্মীদের দেখান অভিযোগকারী নারীরা।

ভুক্তভোগী নারীরা অভিযোগ করে বলেন,গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছিলেন।এই ঘুসের টাকা ফেরত পেতে গত বুধবার সাহারা খাতুন ও মমতাজ বেগম বাদী হয়ে নাটোর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন।

এনিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও জেলা প্রশাসকের নজরে আসে।এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নূর আহমেদ মাসুম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগকারীদের শুনানি গ্রহণ করেন।এ সময় অভিযুক্ত আ.লীগ নেতা নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন না।

এ শুনানিতে ইউএনও শ্রাবনী রায় ছাড়াও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ভুক্তভোগীদের শুনানি গ্রহণের একদিন পরই শুক্রবার ইউএনও শ্রাবনী রায় ঘুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন অভিযোগকারীদের।

ভুক্তভোগী ওই নারীরা জানান,শুনানি গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে এসেছেন।তাদের টাকা ইউএনওর মাধ্যমে ফেরত পাবেন বলেও জানিয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ইউএনও অভিযোগকারী নারীদের তার বাসভবনে ডেকে ঘুসের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার কাছে ভুক্তভোগীরা আবেদন করলে হতদরিদ্র অসহায় মানুষের সহযোগিতায় মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করেছেন মাত্র।