সারাদেশের খবর

১৬ বছর ধরে আলো জ্বলছে না-তবুও বিদ্যুৎ বিল ৩কোটি টাকা!

  প্রতিনিধি ৯ মার্চ ২০২৩ , ৫:৪০:১৩ প্রিন্ট সংস্করণ

বগুড়া প্রতিনিধি।।প্রায় ১৬ বছর ধরে বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে রাতের খেলায় ফ্লাড লাইটগুলোতে আলো জ্বলছে না। এই সময়ের মধ্যে ডে-নাইট কোনো খেলাও হয়নি।কোনো প্রয়োজনেও ফ্লাড লাইট জ্বালানো হয়নি।অথচ বিদ্যুৎ খাতে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করতে হয়েছে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষকে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই স্টেডিয়ামের আন্তর্জাতিক খেলা না থাকলেও ১৬ বছরে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা গুনতে হয়েছে।এই বিল পরিশোধ করতে হয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে।কোনো কোনো মাসে জরিমানাসহ প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা বিলও দিতে হয়েছে।

বিষয়টি বগুড়ার এই স্টেডিয়ামের কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছে।‌

শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামটিতে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড থেকে সংযোগ নেওয়া হয়েছে। শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ বলছে,বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বিশেষ লাইন নেওয়ার কারণে এখানে প্রতি মাসে সর্বনিম্ন বিল পরিশোধ করতে হয় অন্তত ৯০ হাজার থেকে লাখ টাকার ওপরে।গত কয়েক বছরে স্টেডিয়ামে গড়ে বিদ্যুৎ বিল এসেছে ১ লাখ ১০ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।গত ১৬ বছরে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামকে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার ওপর বিল পরিশোধ করতে হয়েছে।

স্টেডিয়াম সূত্রে জানা যায়, ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ২১ কোটি টাকায় বগুড়া স্টেডিয়ামটি ফ্লাড লাইটসহ অন্যান্য উন্নয়ন করা হয়।২০০৬ সালের ৩০ জানুয়ারি চান্দু স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে ঘোষণা করে আইসিসি। একই বছরে স্টেডিয়ামটি আন্তর্জাতিক টেস্ট ভেন্যুর স্বীকৃতিও পায়।

কিন্তু ২০০৬ সালের পর থেকে এ মাঠে আন্তর্জাতিক খেলা হয়নি।তবে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় লিগ,স্থানীয় প্রিমিয়ার লিগ, প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ ও করপোরেট লিগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।এসব ম্যাচের সবগুলোই দিনের আলোয় হয়েছে। কর্মকর্তারা জানান,দিনে খেলার জন্য এই মাঠের ফ্লাড লাইট জ্বালোনোর কোনো প্রয়োজন নেই।

স্টেডিয়ামের চারটি টাওয়ারে ১০০টি করে মোট ৪০০ লাইট রয়েছে।এই লাইলটগুলো ৮ লাখ ওয়াট বিদ্যুতের আলো সরবরাহ করতে পারে।আন্তর্জাতিক খেলা বন্ধের পর কোনো লাইট নষ্ট রয়েছে কি না,তাও বলতে পারেনি স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।দূর থেকে দেখা যায়,লাইটের সুইচ বক্সগুলো ফাঁকা পড়ে আছে। ফ্লাড লাইটের সংযোগ তারও চুরি হয়েছে একাধিকবার।

সোমবার চান্দু স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা গেছে,টাওয়ারে অনেক লাইট নেই।সংযোগ তারও নেই।সুইচগুলোও নষ্ট।১৬ বছরের মধ্যে একবারেও লাইটটি জ্বলেছে কি না,তা দেখা হয়নি। ফ্লাড লাইটের বালভগুলো ঠিক আছে কি না,সেটাও কেউ জানাতে পারেনি।

স্টেডিয়ামের বিদায়ি ভেন্যু ম্যানেজার জামিলুর রহমান জামিলও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।তিনি বলেন,স্টেডিয়ামে ফ্লাড লাইট সংযোগ থাকার জন্য বিলের পরিমাণ বেশি হয়। ফ্লাড লাইটের কিলোওয়াট অনেক বেশি,সেজন্য বিদ্যুত্ বিভাগের ডিমান্ড চার্জও বেশি। না জ্বালালেও মিনিমাম বিল দিতে হয়।প্রতি মাসে গড়ে সোয়া লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হয়েছে।তিনি ফ্লাড লাইটের বিষয়ে বলেন, যে লাইট জ্বলেই না সেটি ভালো আছে,না খারাপ তা কীভাবে বলা যাবে।

আরও খবর

Sponsered content