রাজনীতি

সেরনিয়াবাত সাদেক আব্দুল্লাহর নেতৃত্বের লড়াইয়ে টিকে থাকার সর্বশেষ স্বপ্ন ভেঙ্গে চূরমার হয়ে গেল!

  প্রতিনিধি ২৫ নভেম্বর ২০২৩ , ৩:৩৪:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।ব্যাপক সমালোচিত ও বহুমাত্রিক বিতর্কের জন্ম দিলেও সাংগঠনিক দিক থেকে দূরদর্শী ও বরিশালের রাজনৈতিক মাঠ দখলে থাকা সাবেক মেয়র এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদেক আব্দুল্লাহর নেতৃত্বের লড়াইয়ে টিকে থাকার সর্বশেষ স্বপ্ন ভেঙ্গে চূরমার হয়ে গেলো,বঞ্চিত হলেন বহুল প্রত্যাশিত বরিশাল সদর আসনের দলীয় প্রার্থিতা থেকে।বরিশালে ক্ষমতাসীন দলের বিভাজনের রাজনীতিতে ক্ষমতার ভারসম্য ধরে রাখতে সাদিক আব্দুল্লাহ জোরতর চেয়েছিলেন দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করা।কিন্তু শুক্রবার অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে বর্তমান সংসদ ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমকে পুনরায় সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত গ্রহনকল্পে উপস্থিত দায়িত্বশীল একজন সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় একাধিক প্রভাবশালী নেতা নিশ্চিত করেছেন,বহুল আলোচিত জাতীয় সংসদের আসন বরিশাল সদরসহ আগৈলঝাড়া-গৌরনদী এই ২টি আসনের প্রার্থিতার কোন পরিবর্তন ঘটেনি।সাদিক আব্দুল্লাহ ব্যর্থ হলেও তার বাবা বর্তমান সংসদ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ আগৈলঝাড়া গৌরনদী ১ আসনে পুনরায় মনোনয়ন পেয়েছেন।চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে,মাত্র দুটি আসনের বর্তমান সংসদ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও জাহিদ ফারুক শামীম ব্যতিত অপর ৪টি আসনে নতুন মুখকে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।এর মধ্যে সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের পঙ্কজ দেবনাথকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় আ.লীগ নেতা সাবেক সাংসদ শাম্মি আক্তার মনোনয়ন পেয়েছেন।নতুনদের মধ্যে আর যারা স্থান পেয়েছেন এদের মধ্যে মেজর অবসর হাফিজ মল্লিক,তালুকদার মোঃ ইউনুস ও খালেদ মাহামুদ স্বপনের নাম রয়েছে।যদিও এখনো প্রার্থিতা চূড়ান্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়নি সম্ভব্য রাজনৈতিক কৌশলগত কারনে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এতো আলোচনা ও হিসেব-নিকেশের পালা শেষে এখন বলা যায় বড় ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলো বরিশাল সদর ও হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ আসন নিয়ে।মেয়র নির্বাচনের পর থেকেই বরিশাল সদর আসনে আ.লীগের প্রার্থিতা প্রত্যাশায় সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিলেন সাদিক আব্দুল্লাহ।অনেকের ধারণা ছিলো,রাজনৈতিক হিসেব নিকেশের সবচেয়ে বড় প্রেক্ষাপট স্থানীয় সাংগঠনিক নেতৃত্ব বিবেচনায় শেষ মেশ সাদিক আব্দুল্লাহ দলীয় মনোনয়ন পেতে পারেন।যদিও সাদিক বিরোধী বলয় এবং একটি জনগোষ্ঠী তার মনোনয়ন বিরোধিতায় আনুষ্ঠানিক মনোভাব প্রকাশ না করলেও তাদের ধারণা ছিলো অন্তুত সাদিক আব্দুল্লাহ মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হোক বা হচ্ছেন।

সূত্র জানায়,সাদিক আব্দুল্লাহ বিরোধিতার সব দিক আমলে নিয়ে তিনি যে কোন উপায় সদর আসনের নৌকার কাণ্ডারী হতে চেয়েছিলেন অন্তত চাচা সদ্য সিটি মেয়রের দায়িত্বভার নেয়া খোকন সেরনিয়াবাতের সাথে ক্ষমতার ভারসাম্য ধরে রাখতে।বর্তমানে বরিশালে ক্ষমতার রাজনীতিতে শীর্ষ কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা খোকন সেরনিয়াবাত প্রথম থেকেই চেয়ে আসছিলেন তার সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাদিক বিরোধী শক্তিশালী বলয় তৈরীতে ভূমিকা রাখা বর্তমান সাংসদ জাহিদ ফারুক শামীম তার সমর্থিত প্রার্থী এমনটি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যভাবে বলায় অনুমান করা হয়েছিলো সাদিকের মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি দূরহ হয়ে পরবে। অবশেষে ঘটলোও তাই।কারন মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত বর্তমান সময় বরিশাল রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ঘনিষ্ট আত্মীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন এবং উভয়ে পরস্পর প্রায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে টেলি যোগাযোগ রাখেন।সেখানে জাহিদ ফারুক শামীমের জন্য সুপারিশ রাখাটা অসম্ভব কিছু নয়।

তাছাড়া একাধিক সূত্রের অভিমত,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে একটি বৃহৎ অংশ চায় না খোকন সেরনিয়াবাতের বরিশাল রাজনীতিতে এই উত্থান পর্বে কোনভাবেই সাদিক আব্দুল্লাহকে বাড়তি কোন শক্তি বা পদ-পদবি দিয়ে কোন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হোক।এমনকি খোকন সেরনিয়াবাত ও একই মনোভাব প্রকাশ করে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাদিক আব্দুল্লাহর লাগাম টেনে ধরার দীর্ঘদিন ধরে অনুরোধ রেখে আসছেন।তদুপরি দলের নেতা কর্মিদের একটি বৃহৎ অংশের প্রত্যাশা ছিলো সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সদর আসনে আ.লীগের চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে রাজনীতির মাঠে নূতন করে দ্যূতি ছড়াক।সাদিক আব্দুল্লাহও তার প্রার্থিতা চূড়ান্ত করনে পিছনের ভুল-ত্রুটি ফেলে তার যোগ্যতা উপস্থাপনে ব্যাপক প্রচারণা এবং নানা কৌশলী পথে হাটতে থাকেন।

একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়,সব বিবেচনায় সাদিক আব্দুল্লাহ মনোনয়নের দৌড়ে ৭ প্রার্থী অপেক্ষা এগিয়ে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী অনঢ় অবস্থানের কারনে দলীয় প্রার্থিতা চূড়ান্ত পর্বে এসে বঞ্চিত হলেন।যদিও তার অপেক্ষা বর্তমান সংসদ জাহিদ ফারুক শামীম রাজনীতিগতভাবে বরিশালের মাঠে প্রভাব গত ৮ বছরের চেষ্টায় সর্বশেষ গত ৪ বছর একাধারে মন্ত্রী ও সদর আসনের মতন জায়গায় সাংসদ নির্বাচিত হয়েও তার অপেক্ষাকৃত বয়সে তরুণ ও শিক্ষা-দিক্ষায় অনেক পেছনে থাকা সাদেক আব্দুল্লাহর সাংগঠনিক কারিশমার কাছে তার অবস্থান একেবারেই নিচে।

ওই সূত্র মতে সাদেক আব্দুল্লাহর মনোনয়ন ঠেকাতে খোকন সেরনিয়াবাতকে সামনে রেখে সংসদীয় বোর্ডের একাধিক সদস্য জোটগতভাবে বিরোধিতার ভূমিকায় অদৃশ্য থেকে কাজ করছিলেন এবং নেত্রীকে নেতিবাচক বার্তা দিয়ে বারবার সতর্ক করে আসছিলেন।একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা একই ভূমিকায় থাকলেও সাদিকের সাংগঠকি শক্তি সামর্থের দিক থেকে যোগ্য বলে নেত্রীকে আভাস দিয়ে আসছিলেন যে,এই নেতা প্রার্থিতা থেকে ছিটকে পড়লে বরিশালের সাংগঠনিক কাঠামো অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে।এদিকে খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর তার প্রতি যে মানুষের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছিলো তা হঠাৎ করে ভাটা পড়েছে রাজনৈতিক কিছু অদূরদর্শিতার কারনে।এমনকি খোকন সেরনিয়াবাদের চারপাশে থাকা অনেক দায়িত্বশীল নেতা সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বভার নেয়ার অনুষ্ঠানে কেন্দ্র করে প্রভাব বিস্তারে গ্রæপিং লবিং এর বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং বর্তমান সংসদ মন্ত্রী সমর্থিতদের প্রাধান্য দেয়ায় নাখশ হয়ে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন বলে শোনা যায়,দেখাও যাচ্ছে।এই পরিস্থিতিতে ধারনা করা হয়েছিলো বরিশালের সাংগঠনিক কাঠামো ধরে রাখতে শেষাবধি সাদিক আব্দুল্লাহকে সদর আসনে প্রার্থী করা হতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রের বিরোধী বলয় সক্রিয় থাকায় ও খোকন সেরনিয়াবাদের বরিশাল রাজনীতিতে অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে প্রত্যাশার সাথে সম্ভাবনার দুয়ার থেকে ফিরে আসতে হলো সাদিক আব্দুল্লাহকে।

ওই অভিন্ন সূত্রটি নিশ্চিত করতে চাইছে যে,সাদিক আব্দুল্লাহর মনোনয়ন নিয়ে দলের অন্দর মহলে ষড়যন্ত্র ঠেকাতে পিতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ তার পুত্রের মনোনয়ন নিশ্চিত করতে নানা কৌশল গ্রহন করলেও অভিমানগত কারনে নিজের থেকে ছোট বোন সম্পর্কের প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে এবার কোন সুপারিশ রাখেননি।সদ্য অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে পুনরায় মেয়র পদে মনোনয়ন চূড়ান্তে সাদিক আব্দুল্লাহর জন্য জোরতর দাবী জানিয়েও ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই তিনি অকেনকটাই মনোবেদনায় ভূগছেন কিন্তু সাংগঠনিক কাছে সরব থাকলেও তার অন্তর নির্হিত কষ্ট বহিঃপ্রকাশে সতর্কতা অবলম্বন করে চলছিলেন তবে বিভিন্ন মাধ্যমে নেত্রীকে বুঝাতে চেয়েছেন বরিশাল প্রশ্নে তার আবদার কতটুকু।শেষে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারলেও পুত্র সাদিক আব্দুল্লাহর প্রত্যাশা পুরনে ব্যর্থ হওয়ায় এখন পিতা-পুত্রের ঐক্যে তাদের গতিপথ কোন দিকে প্রভাবিত হয় তা নিয়ে জাতীয় নির্বাচনে ফলাফল নির্ভর করতে পারে বলে মাঠ পর্যায় থেকে অভিমত পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে নির্বাচনী এলাকা ৪ এর হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের বর্তমান সংসদ পঙ্কজ দেবনাথ বহু বিতর্কের জন্ম এবং কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছা সেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হারানোর পর প্রবল ক্ষমতা থেকে পতন এবং কোন ঠাসা হয়ে পড়লেও অনেকের ধারনা ছিলো বিশেষ একটি রাষ্ট্রের সাথে তার সু-সম্পর্ক এবং দলের মধ্যে শক্তিশালী অবস্থান থাকার কারনে সম্ভবত আবার তিনি মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন।

ঢাকার সূত্র জানায়, পঙ্কজ দেবনাথ এলাকায় যথেষ্ট উন্নয়ন কর্মকান্ড করলেও স্থানীয়ভাবে সংগঠনকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে,তিনি ওই রাজ্যের রাজা, তার কথার কোন বিকল্প নেই। সংগত কারনে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী ও মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্য তার বিরুদ্ধে অবস্থান থাকায় দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ শাম্মি আক্তারকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করনের ক্ষেত্রে সভাই একমত প্রশন করেন। তাছাড়া এলাকা থেকেও শাম্মি আক্তারকে প্রার্থী করার দাবী পঙ্কজ দেবনাথ অপেক্ষাকৃত জোরতর ছিলো।

বরিশাল ৬ আসনে চমক সৃষ্টি করলেন মেজর অবসর হাফিজ মল্লিক। সাবেক জনপ্রিয় প্রয়াত সংসদ রেজার মৃতে্যুর পর থেকেই বাকেরগঞ্জ আসনে এই সেনা কর্মকর্তা দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আসছিলেন। সেই সাথে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুল আলম চুন্নুও অভিন্ন দাবীতে অনঢ় ছিলেন। কিন্তু ১৪ দলের জোট শরিক দল এরশাদের জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের কারনে তার স্ত্রী রত্না আমিনের পক্ষে ইতিপূর্বে আসনটি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। এবার ব্যতিক্রম ঘটলো বটে তবে একটি হিসাব-নিকেশের আলামত পাওয়া গেছে। কারন জাতীয় পার্টি এবারও আ.লীগের সমর্থনে নির্বাচনে অংশ নিতে আনুষ্ঠানিক মত প্রকাশ করায় সম্ভবত তারা চাইবে না এই আসনটি হাতছাড়া করতে। সে ক্ষেত্রে এই আসনটিতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে আ.লীগ কোন প্রভাব বিস্তার না করে জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে বেরিয়ে আসতে কিছুটা ছাড় দিতে পারে। বিশেষ করে সামছুল আলম চুন্নু সমর্থকরা কোনভাবেই চান না মেজর হাফিজ মল্লিক এলাকার সাংসদ হিসেবে রাজনীতির মাঠে ছড়ি ঘোরানোর সুযোগ পাক।মুলাদী-বাবুগঞ্জ ৩ নির্বাচনী আসনেও নূতন মুখকে প্রার্থী করার মধ্য দিয়ে আরো একটি চকম লক্ষ্য করা গেছে। যেখানে বর্তমান সংসদ জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী নেতা গোলাম সরোয়ার টিপুর এলাকায় আ.লীগের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে খালেদ মাহামুদ স্বপনকে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাহামুদ স্বপন গত উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর থেকে দলের মধ্যে নিজেস্ব একটি বিলয় তৈরী করে এক ধরনের কোন ঠাসা অবস্থায় রয়েছেন। সেখানে তাকে প্রার্থী করার যৌক্তিকতা খুঁজছে কেউ কেউ। আলাপ আলোচনায় জানা গেছে এই আসনের নির্বাচনেও বাকেরগঞ্জের মতো নাটকীয় ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ মোটা দাগে বলা যায় মূলত আ.লীগ বরিশালের দুটি আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিতে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শেষমেষ কপাল পুড়লো বানারীপাড়া-উজিরপুর আসনের সাংসদ শাহে আলমের। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এই নেতাকে গত নির্বাচনে নাটকীয়ভাবে প্রার্থী করা হয়। প্রথমে তৎকালীন সংসদ বরিশাল জেলা আ.লীগের সভাপতি তালুকদার মোঃ ইউনুসের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু এক দিনের ব্যবধানে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মাঠে আসেন শাহে আলম। সংসদ নির্বাচিত হয়ে শাহে আলম ব্যাপক দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়ায় এবং ক্যাডার ভিত্তিক রাজনীতির উপর ঝুকে পড়ায় বিতর্কের ষোল আনাই পূর্ণ করে ফেলেন। তাছাড়া নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আগ মূহূর্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাথে দ্ব›েদ্ব জড়ালে তার প্রার্থির দাবীর বদলে তাকে মনোনয়ন না দেয়ার এক ধরনের শ্লোগান ওঠে। অথচ শাহে আলম এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলেন যে, তালুকদার মোঃ ইউনুস সমর্থিত বলয়কে তার অনুকূলে এনে এই আসনে প্রার্থী হওয়ার প্রেক্ষাপট তৈরীর ক্ষেত্রে এক ধরনের কাটা বিছিয়ে রাখেন। রাজনীতির শেষ খেলায় স্থানীয় আ.লীগসহ শাহে আলম পন্থিরাই তালুকদার মোঃ ইউনুসের প্রার্থী হওয়ার পথ পরিস্কার করে দেন। যদিও উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক চেয়েছিলেন এই আসনের প্রার্থী হতে। মাঠে হাক-ডাকও দিয়েছিলেন, মাঝে মাঠ কাঁপিয়েও তুলেছিলেন। শুধু মাত্র তালুকদার মোঃ ইউনুসকে জায়গা দিতে গিয়ে গোলাম ফারুকের আকাঙ্খা পণ্ড হয়ে যায়। অবশ্য কেউ কেউ বলছে গোলাম ফারুকের সাথে শাহে আলমের দ্ব›েদ্বর কারনেই তালুকদার মোঃ ইউনুসের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়ে ওঠে।

ঢাকার সূত্রগুলো জানান, আজ বিকেলে অনুষ্ঠিত বরিশাল বিভাগের প্রার্থিতা নিয়ে মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক সন্ধ্যার আগ মূহূর্ত পর্যন্ত বরিশালের ৫টি আসনের উপর গুরুত্ব দেয়া হয় বেশি। সেখানে সিদ্ধন্ত আসে বিতর্কিত বর্তমান সংসদদের বাদ দিয়ে নূতন মুখ নিয়ে আসার বিষয়টি। এ ক্ষেত্রে বরিশাল সদর আসন নিয়ে মনোনয়ন বোর্ডের এক ধরনের স্নায়ু যুদ্ধ চলে সাদেক আব্দুল্লাহ ও জাহিদ ফারুক শামীমকে নিয়ে।

সূত্র আভাস দেয় যে, দলীয় সভানেত্রী আগে থেকেই বরিশাল সদর আসনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখায় সাদিক আব্দুল্লাহর বিষয় কারো কোন মতামত প্রাধান্য দেননি। তবে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এ আসনে প্রার্থী হতে চাইলেও খোকন সেরনিয়াবাতের বিরোধিতায় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয় জোর না দেয়ায় প্রভাবশালী এই নেতা নিজের আকাঙ্খার জায়গা থেকে নীরব থাকেন। আর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, প্রার্থী চূড়ান্তের ক্ষেত্রে প্রাধানমন্ত্রীও দলীয় সভানেত্রী আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সাথে পূর্ব আলোচনা করেই মনোনয়ন বোর্ডে বসেন। বিশেষ করে খালেদ মাহামুুদ স্বপন ও তালুকদার মোঃ ইউনুসের বিষয় আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর সম্মতি তাদের দু জনার প্রার্থী চূড়ান্ত করনের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। কিন্তু পুত্র সাদিক আব্দুল্লাহর জন্য পিতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছিলেন নিরুপায়।

আরও খবর

Sponsered content