অপরাধ-আইন-আদালত

শ্রীপুরে ব্ল্যাকমেইল করে পর্ণোগ্রাফি, অপহরণ ও চাঁদাবাজ চক্রের দুই নারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১

  প্রতিনিধি ৩০ আগস্ট ২০২২ , ২:৫৩:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অজ্ঞাত মোবাইল নম্বরে পরিচয়ের সূত্র ধরে ব্ল্যাকমেইলিং ও পর্ণোগ্রাফির মাধ্যমে অপহরণ ও চাঁদাবাজ চক্রের মূলহোতাসহ ২জন নারী এবং ৪জন পুরুষ আসামীকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন মুলাইদ মধ্যপাড়া এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-১ এর গাজীপুর ক্যাম্প।

উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো:-চলতি বছরের ২৯ আগষ্ট সোয়া ৭টায় ঘটিকার সময় প্রতারণার স্বীকার এক ভুক্তভোগীর ভাই র‍্যাব ক্যাম্পে অভিযোগ করে যে, অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ভিকটিমকে কৌশলে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।

সেখানে ভিকটিমকে আটক রেখে মারধর করে তার কাছে থাকা সব কিছু ছিনিয়ে নেয় এবং তার মুক্তির জন্য এক লক্ষ টাকা অর্থ দাবী করে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে উক্ত ব্যক্তিকে উদ্ধার এবং বর্ণিত ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে র‍্যাব-১ ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।

গাজীপুরের পোড়াবাড়ী র্যাব ক্যাম্প,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন মুলাইদ মধ্যপাড়া সাকিনস্থ টুটুলের দক্ষিণমুখী বিল্ডিংয়ে আসামী আবু হানিফ(৩৪) এর এক রুম বিশিষ্ট ভাড়াকৃত বাসায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের মূলহোতা ১। মেহেদী হাসান সঞ্চয়(১৯), ২। লিপি আক্তার @ স্বর্ণা(৩৮), ৩। মোছাঃ লাভলী আক্তার(৩৯), ৪। আবু হানিফ(৩৪), ৫। মোঃ বাদল মিয়া (৩৮), ৬। মোঃ গোলাম রাব্বী(২০)এদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

এসময় আসামীদের নিকট হতে অশ্লীল ছবি ও গোপন ভিডিও ধারণ কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ সর্বমোট ৭টি
মোবাইল ফোন, নগদ দুইশত চল্লিশ টাকা ও ১টি লোহার পাত উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য।

এ চক্রের মূলহোতা মেহেদী হাসান সঞ্চয় এবং লিপি আক্তার@ স্বর্ণা, লাভলী আক্তার, আবু হানিফ, বাদল মিয়া, গোলাম রাব্বি তারঅন্যতম সহযোগী।আসামী লিপি আক্তার@ স্বর্ণার স্বীকারোক্তি মোতাবেক,এই প্রতারক চক্রের নারী সদস্যরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মোবাইলে অপরিচিত নম্বরের মাধ্যমে বিভিন্ন পুরুষের সাথে পরিচিত হয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে প্রতারণার স্বীকার ব্যক্তিকে প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় আমন্ত্রণ জানায়।

পরবর্তীতে ভুক্তভোগী উক্ত চক্র কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে কথিত প্রেমিকার সাথে দেখা করতে আসলে চক্রের অন্যান্য সদস্যরা ভুক্তভোগীকে আটকে রেখে,উক্ত স্থানে অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে এই অভিযোগে ভুক্তভোগীদের নগ্ন ভিডিও ধারণ করে। এরপর উক্ত ভিডিও তাদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হবে। এই মর্মে ভয়ভীতি দেখিয়ে সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়।

উক্ত ব্যাক্তির আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে দশ হাজার টাকা থেকে শুরু এক লক্ষটাকা পর্যান্ত মুক্তিপণ দাবি করে।পরবর্তীতে দাবীকৃত টাকা ভুক্তভোগী বিকাশ সহ অন্যান্য মাধ্যমে প্রদান করলে, ভুক্তভোগীকে চক্রটি ছেড়ে দেয়া হয়।

ভুক্তভোগীরা যদি পরবর্তীতে এই ঘটনা আইন শৃংখলা বাহিনীকে জানায় তবে ধারনকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে মর্মে চক্রটি ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।ফলে উক্ত ঘটনা পরবর্তীতে অপ্রকাশিত থেকে যায়।

এব্যাপারে আসামী লিপি আক্তার@ স্বর্ণার কাছ উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনে প্রায় ১৫/২০জনের আপত্তিকর অশ্লীল ভিডিও পাওয়া যায়।

এছাড়াও উক্ত আসামীর উদ্ধারকৃত মোবাইল ফোনে চলতি বছরের মার্চ-অদ্যকাল আসামী লিপি আক্তার@স্বর্ণা কর্তৃক রেকর্ডকৃত বিভিন্ন ভিকটিমকে ফাঁদে ফেলানোর পরিকল্পনার প্রায় ৪শতাধিক অডিও কল রেকর্ড পাওয়া যায়।তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উক্ত চক্রটি এই কৌশল অবলম্বন করে।

চলতি বছরের মার্চ সপ্তাহে অন্তত ২-৩ জনকে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরও খবর

Sponsered content