অর্থনীতি

চার বছরে রিটার্ন জমা দ্বিগুণ বাড়ছে

  প্রতিনিধি ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৫:৪২:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।চার বছরের ব্যবধানে দেশে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেছেন,’২০২০ সালে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা ছিল ২১ লাখ,২০২৪ সালে (আগামী জুন নাগাদ) এটি ৪০ লাখে উন্নীত হতে যাচ্ছে।অর্থাৎ চার বছরে রিটার্ন জমা দ্বিগুণ বাড়ছে।’

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে অর্থনীতি-বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে অনুষ্ঠিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় গত চার বছরে ভ্যাট নিবন্ধনের সংখ্যা আড়াই গুণ বেড়ে পাঁচ লাখ হয়েছে বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি এই অগ্রগতির পরও যে সমালোচনা চলছে তা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।সভায় এনবিআরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

সভায় রহমাতুল মুনিম টিআইএনধারী ও প্রকৃত রিটার্ন দাখিলের ব্যবধান কমানোর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন।

দেশে বর্তমানে টিআইএনধারীর সংখ্যা প্রায় এক কোটি। এনবিআরের বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী,প্রায় সব টিআইএনধারীকে রিটার্ন জমা দিতে হয়।সেই বিবেচনায় রিটার্ন জমায় বড় পার্থক্য রয়ে গেছে।

এর কারণ ব্যাখ্যা করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘অনেকে ওয়ান-টাইম টিআইএন নিয়েছেন (জমি ক্রয়, বিক্রয় বা ছোট প্রয়োজনে এনবিআরের নিয়মের কারণে)।এই সংখ্যা বিশাল।আমরা ঠিক করতে পারিনি এই টিআইএন থেকে ফেজ আউট করা যায় কীভাবে।’

অর্থবছরের শেষে নভেম্বরের মধ্যে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হয়। এ বছর নির্বাচনসহ বিভিন্ন কারণে এনবিআর জরিমানা ছাড়া এই সময়সীমা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করে।

এনবিআরের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী,৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন দাখিলের পরিমাণ ছিল ৩৫ লাখ ৪০ হাজার। অবশ্য সোমবার এনবিআর চেয়ারম্যান জানান,এই সংখ্যা ৩৬ লাখে উন্নীত হয়েছে,যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।আগামী জুন নাগাদ তা ৪০ লাখে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন,অন্যান্য উন্নত দেশের মতো রাজস্ব বাড়াতে হলে ডাইরেক্ট ট্যাক্সে নজর দিতে হবে।এজন্য টিআরপির (ট্যাক্স রিটার্ন প্রিপেয়ার) বিকল্প নেই।’

তিনি আরও বলেন,এটি নিয়ে বাধা এসেছে।আমরা কোর্টে যাব এবং এটি চালু করার জন্য যা করা দরকার করব।’

গত বাজেটে এনবিআর ট্যাক্স রিটার্ন বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স রিটার্ন প্রিপেয়ারার (টিআরপি) ব্যবস্থা চালু করে।তবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ট্যাক্স আদায় নিয়ে একটি পক্ষের সমালোচনা রয়েছে,সম্প্রতি ট্যাক্স লইয়াররা এ ব্যবস্থার স্থগিত চেয়ে আদালতে যাওয়ার পর তা স্থগিত হয়।

এছাড়া দেশে জিডিপির তুলনায় ট্যাক্স আদায় (ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও) অনেক কম বলে যে আলোচনা চলছে তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবিআর চেয়ারম্যান।

গত কয়েক বছর ধরে ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও কমতির দিকে।সর্বশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা আট শতাংশের নিচে নেমেছে,যা এক সময় ১০ শতাংশের উপরে ছিল।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন,যেখানে যাই সেখানেই বলে ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও কম।তারা স্টেজে দাঁড়িয়ে বলেন, ট্যাক্স টু জিডিপি রেশিও কম,আর রুমে গিয়ে (এনবিআরে) চিঠি দেন ট্যাক্স এক্সেম্পশনের জন্য।’

এনবিআরের তথ্যমতে,২০২০-২১ অর্থবছরে ট্যাক্স এক্সেম্পশনের পরিমাণ ছিল ১.২৬ লাখ কোটি টাকা,যা ছিল জিডিপির ৩.৫৬ শতাংশ।চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ১.৭৬ লাখ কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সভায় অন্যদের মধ্যে ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা,জ্যেষ্ঠ সদস্য দৌলত আক্তার মালা,এনবিআরের সদস্য একেএম বদিউল আলম বক্তব্য দেন।

এ সময় ইআরএফের পক্ষ থেকে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উপায় ও এ খাতের শৃঙ্খলা আনতে ৩৫টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

আরও খবর

Sponsered content