শিক্ষা

মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত আছেন-আর শিক্ষক আছেন ছয়জন

  প্রতিনিধি ১৬ মার্চ ২০২৩ , ১০:২০:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের ১২১ ঘন্টেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৫ জন।অথচ তাদের পাঠদানের জন্য শিক্ষক রয়েছেন ৬ জন।বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে স্কুল গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন,স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নেই।প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ।এসব বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিয়েছে এলাকাবাসী।এসব অভিযোগের তদন্তে ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে,মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত আছেন।আর শিক্ষক আছেন ছয়জন।উপস্থিত শিক্ষার্থীদের পাঠদান না করে অফিস কক্ষে বসে গল্প করছিলেন প্রধান শিক্ষক হেলেনা বেগম,সহকারী শিক্ষক মাহমুদা খানম, নাসরিন আক্তার,রাশিদা খানম,মো. আক্তার হোসেন ও স্নিগ্ধা আক্তার।

স্থানীয়রা জানান,১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ঘন্টেশ্বর প্রাথমিক বিদ্যালয়।সর্বশেষ ২০১১ খ্রিষ্টাব্দেও স্কুলটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৭২ জন।গত ১২ বছর পরে এসে বর্তমানে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র পাঁচজনে।

স্থানীয়দের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক হেলেনা বেগমের হেয়ালিপনা,খিটখিটে মেজাজ আর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণের কারণে প্রতিবছরই কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। অথচ আশপাশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সন্তোষজনক।

স্থানীয় হারুন হাওলাদার বলেন,প্রধান শিক্ষক হেলেনা বেগম নিজের খেয়ালখুশি মত স্কুল পরিচালনা করেন।তিনি স্কুলের একটি কক্ষ দখল করে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় অমনযোগী হলেও বিষয়টি নিয়ে তার কোনো মাথাব্যাথা নেই।এমনকি পঞ্চম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী নিজের নামটাও ভালোভাবে লিখতে জানে না।তাই এই স্কুলে বাচ্চাদের কেউ ভর্তি করতে চাচ্ছে না।

স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব শিকারী বলেন, স্কুলটি একসময় বেশ জনপ্রিয় ছিলো।কিন্তু এখন আর তা নেই। শিক্ষার্থীর সংখ্যা এতোটাই কম যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য মঙ্গলকর নয়।

বামরাইল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মেহেদী হাসান রাব্বি জানান,স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ।তার ওপর এই স্কুলের পাশাপাশি কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক মোসাম্মৎ হেলেনা বেগম দাবি করেন,আমাদের স্কুলে মোট শিক্ষার্থী ৬২ জন।প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত হয় ২৫ থেকে ৩০ জন।তবে রাস্তার বেহাল দশা ও করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেকটা কম।

উজিরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাছলিমা বেগম বলেন, ওই স্কুল এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ তদন্ত করতে দুজন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।তাদেরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার মজুমদার বলেন,অভিযোগের বিষয়টির তদন্ত চলছে।তদন্ত শেষ না করে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি এ কর্মকর্তা।

আরও খবর

Sponsered content