প্রতিনিধি ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ২:৪৭:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ
বন্ধুর মতোই কথা বলুন
ভাই–বোনের সঙ্গে কথা বলুন মন উজাড় করে।আপনার অনুভূতি ভাগ করে নিন তাঁদের সঙ্গে।হয়তো জীবনের প্রয়োজনে দূরে থাকেন।তাতে কী? প্রযুক্তির সহায়তা নিন। কথা বলুন,ভিডিওতেও দেখুন তাঁদের।নিদেনপক্ষে মেসেজ আদান–প্রদান করুন।প্রয়োজনের বাইরেও কথা বলুন,যা বলতে চায় মন।হাসি-আনন্দ ভাগ করে নিন।নৈমিত্তিক জীবনে মজার কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে কিংবা কোনো কারণে আপনি কষ্ট পেয়ে থাকলে সেটিও বলুন।
দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ান
ভাই–বোনেরা কেউ বিপদে পড়লে তাঁদের সাহায্য করতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন।তাঁদের ভরসা হয়ে উঠুন। রোগেশোকে আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন কি না,সেদিকেও খেয়াল রাখুন।নিজের মুখে আর্থিক সংকটের কথা স্বীকার করতে দ্বিধা করতে পারেন অনেকেই।তাই নিজে থেকেই বুঝতে চেষ্টা করুন বিষয়টি।এ ধরনের সংবেদনশীল বিষয়ে জানতে চাওয়ার সময় শব্দচয়নে সতর্ক থাকুন।তাঁদের দুঃসময়ে আপনার দায়িত্বশীল আচরণে আপনাদের সম্পর্কের গভীরতা বাড়বে।
পারিবারিক দায়িত্ব ভাগ করে নিন
পরিবারের দায়িত্ব কারও একার ঘাড়ে ফেলবেন না।মা-বাবার চিকিৎসাসহ পরিবারের সব কাজই ভাগ করে নিন।কারও আর্থিক সামর্থ্য কম হলে তাঁকে অন্যদের মতো সমান ভাগ বহন করার জন্য চাপ দেবেন না।আপনি একমাত্র সন্তান হলে মা-বাবার দায়িত্ব নিশ্চয়ই একাই পালন করতেন,তাই না? তাই জবরদস্তি করবেন না।তা ছাড়া দায়িত্ব মানে কিন্তু কেবল আর্থিক সমর্থনই নয়।বয়স্ক মা-বাবার পাশে থেকে তাঁদের সেবা করা একটি বিশাল দায়িত্ব।আপনি হয়তো চাকরিসূত্রে দেশের অন্য কোনো শহরে থাকেন কিংবা বিদেশে থাকেন।আপনার কোনো ভাই কিংবা বোন আপনার মা-বাবার কাছে থাকেন। এ রকম পরিস্থিতিতে অবশ্যই মনে রাখবেন,মা-বাবার পাশে থাকা আপনারও দায়িত্ব ছিল।সেই দায়িত্ব যাঁর কাঁধে অলিখিতভাবে তুলে দিয়েছেন,তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন।তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাও এখন আপনার দায়িত্ব।এই সমাজে অবশ্য এর উল্টোটা দেখা যায়।দূরে থাকা ব্যক্তি মনে করেন,যিনি কাছে আছেন,তিনি হয়তো পারিবারিক আয়ে ভাগ বসাচ্ছেন কিংবা সম্পত্তি হাতিয়ে নিচ্ছেন। এসব অহেতুক ভাবনা দূরে সরিয়ে রাখুন।
অতীতে,বর্তমানে
ভাই–বোনদের সঙ্গে বেড়ে ওঠার মজার সময়ের স্মৃতিচারণা করুন।পুরোনো ছবি দেখুন একসঙ্গে।অতীতের গল্প করুন। জীবনের সেরা সময় অর্থাৎ শৈশব-কৈশোরের রঙিন দিনগুলো একসঙ্গে কাটিয়েছেন আপনারা।গল্পের বিষয়ের অভাব হওয়ার কথা নয়।ছুটিছাটা পেলে একসঙ্গে সময় কাটান।একসঙ্গেই যেতে পারেন স্মৃতিজাগানিয়া কোনো জায়গায় কিংবা নতুন কোথাও।ছুটির দিনে ভাইবোনদের বাড়িতেও হাজির হতে পারেন।পর্যায়ক্রমে সব ভাইবোনের বাড়িতে যেতে পারেন সবাই। তাঁদের বাড়িতে গিয়ে রান্নাবান্নাও করতে পারেন,খাবার নিয়েও যেতে পারেন সবার জন্য।শিশুসন্তানদের নিয়ে ঘুরতে বেরোচ্ছেন?কিংবা স্টেডিয়ামে যাচ্ছেন খেলা দেখতে? ভাইবোনদেরও ডাকুন।তাঁরাও তাঁদের সন্তানদের নিয়ে আসতে পারেন।প্রিয় খেলা দেখবেন টেলিভিশনে?এক বাসায় বসেও দেখতে পারেন সবাই মিলে।
উদ্যাপনের উপলক্ষে
উদ্যাপন করতে সব সময় কিন্তু উপলক্ষের প্রয়োজন হয় না। উৎসবের সময় তো বটেই,যেকোনো সময়ই ভাইবোনদের ছোটখাটো উপহার দিতে পারেন।হঠাৎ কাউকে অবাক করে দিতে পারলে দারুণ হয়,তাই না? আপনার ভাই-বোন কিসে আনন্দ পাবেন,সেটা আপনিই ভালো জানেন।আপনার বোনের সন্তান স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে?উদ্যাপন করতে পারেন সেই উপলক্ষেই।আপনার সন্তান কোথায় পড়ছে, তাঁদের সন্তান কোথায় পড়ছে—এসব নিয়ে মনের ভেতর ঈর্ষা জন্মালে তা অঙ্কুরেই নির্মূল করে ফেলুন।তাঁদের সন্তান তো আপনার সন্তানের মতোই।আর ভাইবোনেরা আপনারই সত্তার অংশ।নশ্বর পৃথিবীতে বেঁচে থাক ভাইবোনের ভালোবাসা।