সারাদেশ

বিশ্ব ইজতেমা ১৫ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটবে

  প্রতিনিধি ২৬ নভেম্বর ২০২২ , ৩:৪৭:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

টঙ্গী(গাজীপুর প্রতিনিধি)।।গাজীপুরের টঙ্গীর সোনাভানের শহর তুরাগ নদের তীরে আগামী বছর সংক্ষিপ্ত আকারে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ইজতেমা।প্রথম পর্বে ১৩ থেকে ১৫ জানুয়ারি জমায়েত হবে মাওলানা জোবায়েরপন্থি মসুল্লিরা। আর ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বে ওয়াসিফপন্থিরা বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেবেন।

১৫ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটবে। মাঝে চার দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি ওয়াসিফপন্থি মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয়পর্বে অংশ নেবেন। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।

এর আগে আগামী ২, ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর স্বল্প পরিসরে ময়দানের উত্তর-পূর্ব কোণে স্থাপিত টিনশেডে দেশ-বিদেশের তিন চিল্লার সাথিদের সমন্বয়ে প্রথম পর্বের আয়োজকদের চার দিনের জোড় ইজতেমা (পুরোনো সাথিদের সম্মেলন) হওয়ার কথা রয়েছে।

ইতোমধ্যে স্বেচ্ছাশ্রমে প্রস্তুত হচ্ছে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। ময়দানে কাজ করতে আসা স্বেচ্ছাসেবীরা জানান, তুরাগ তীরের ১৬০ একর সুবিশাল ময়দান প্রস্তুত করতে শত শত স্বেচ্ছাসেবী কাজ করে যাচ্ছেন। ২০২০ সালে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ২০২১ ও ২০২২ সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি। আসন্ন বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে রেখে ময়দানের প্রস্ততি কাজ স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে চলছে। টঙ্গী, গাজীপুর, তুরাগ, কামারপাড়া, আশুলিয়া, মিরপুর, উত্তরার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্র ও মসজিদের মুসল্লিরা পালাক্রমে কাজ করছেন। কেউ কেউ আগাছা-ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, মাটি কাটা, পুরোনো ড্রেন সংস্কার, বাঁশের খুঁটি স্থাপন, পাটের চট দিয়ে সামিয়ানা তৈরি, ময়দানের চারপাশের ওজু-গোসলের চৌবাচ্চাগুলো সংস্কারের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন।

সরেজমিন বিশ্ব ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা যায়, টঙ্গী চেরাগ আলী এলাকার বাইতুল আকরাম জামে মসজিদের একদল মুসল্লি স্বেচ্ছাশ্রমে ময়দানে বাঁশের খুঁটি স্থাপন, ময়লা আর্বজনা পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কাজ করছেন।

চেরাগ আলী এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন বাবু মুন্সী তার ছেলে ইশরাক হোসেন রাফি মুন্সীকে নিয়ে ময়দানে স্বেচ্ছায় কাজ করতে এসেছেন। তিনি বলেন, ছেলেকে নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় কাজ করতে এসেছি। আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমা যাতে সফল ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হতে পারে সেজন্য আমরা সবাই মিলে কাজ করে যাচ্ছি। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর টঙ্গীর ময়দানে ইজতেমা হয়নি। সরকার জানুয়ারি মাসে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি দেওয়ায় আমরা খুবই খুশি।

ঢাকার মিরপুর থেকে এসে শুক্কুর আলী, বাদল মিয়াসহ ১০-১৫ জনের একদল মুসল্লি ময়দানে স্বেচ্ছাশ্রমে চটের শামিয়ানা তৈরি, ড্রেন পরিষ্কারের কাজ করছেন। তারা জানান, ইজতেমা ময়দানে কাজ করলে আল্লাহ ও তার রাসূলকে (স.) পাওয়া যাবে। দ্বীনের জন্য সবারই উচিত জান-মাল ও সময় ব্যয় করা।

প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি ডা. কাজী সাহাবুদ্দিন বলেন, আগামী ১৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য আলমি শূরার ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমাকে সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য সবাই একযোগে কাজ করে যাচ্ছি। মূল ইজতেমার আগে আগামী ২, ৩, ৪ ও ৫ ডিসেম্বর দেশ-বিদেশের তিন চিল্লাধারী সাথিদের নিয়ে টিনশেডে স্বল্প পরিসরে চার দিনের জোড় অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ দুই বছর পর টঙ্গীর ময়দানে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ খবর শুনে দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা অনেক আনন্দিত। তারা মহান আল্লাহপাকের দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি মো. শাহ আলম বলেন, আগামী ১৩ জানুয়ারি প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে ময়দানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content