খেলাধুলা

বিপিএলের নবম আসরের সেরা দুই দলের লড়াইয়ে ভাগ্য নির্ধারক হতে পারে যে পাঁচটি বিষয়

  প্রতিনিধি ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:৩৬:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।একদিকে বিপিএলে সফলতম দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা আজ ফাইনালে মাঠে নামবে নিজেদের রেকর্ড সমৃদ্ধ করতে।অন্যদিকে বিপিএলে নতুন দল সিলেট স্ট্রাইকার্স।এর আগে সিলেটের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি যা করতে পারেনি,তাঁদের চোখ সেদিকে—বিপিএলের শিরোপা জয়।বিপিএলের নবম আসরের সেরা দুই দলের লড়াইয়ে ভাগ্য নির্ধারক হতে পারে যে পাঁচটি বিষয়, সেটি নিয়ে আলোচনা করা যাক।

‘ব্যাটসম্যানরা ম্যাচ জেতায়। বোলাররা জেতায় টুর্নামেন্ট’-২০ ওভারের টুর্নামেন্ট এলে কোচদের এ কথা বলতে শোনা যায়। লিটন দাস,মঈন আলী,আন্দ্রে রাসেল,জনসন চার্লসের মতো বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানদের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ক্ষেত্রে কথাটা সত্যি। তারকায় ঠাসা ব্যাটিং লাইনআপ থাকলেও দলটির মূল শক্তি কিন্তু বোলিং।

প্রতিপক্ষ দল দ্রুত রান তুলছে,এই দুই স্পিনারের একজন এসে রানের গতি কমিয়ে দেন।উইকেট দরকার,তখনো ডাক পড়ে এ দুজনের।বিপিএলের শুরু থেকে কুমিল্লার হয়ে দায়িত্বটা সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছেন তানভীর।১১ ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়ে তানভীর সেরা উইকেটশিকারিদের তালিকায় দুইয়ে। গত তিন ম্যাচে তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন টি-টোয়েন্টির কিংবদন্তি নারাইন।এই ৩ ম্যাচে তাঁর ইকোনমি ৪.৮৩! ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের জন্য কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের হাতে আছে এখন ৮ ওভার। ফাইনালের ভাগ্যও এই ৮ ওভারেই নির্ধারিত হতে পারে।

নারাইন দলে যোগ দেওয়ায় কুমিল্লার ব্যাটিংও দীর্ঘ হয়েছে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে লিটনের সঙ্গে উদ্বোধনে ব্যাটিং করেছেন তিনি।তাতে বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয়ও পাচ্ছে কুমিল্লা।জনসন চার্লস,ইমরুল,মোসাদ্দেক হোসেন,মঈন আলী,জাকের আলীদের এরপর ম্যাচ-আপ বুঝে নামানো যায়।কুমিল্লার ট্রাম্প কার্ড আন্দ্রে রাসেল প্রথম কোয়ালিফায়ারে নেমেছিলেন আট নম্বরে!তাঁকে ওপরে খেলালেও কুমিল্লা আট নম্বর পর্যন্ত ব্যাটসম্যান পাচ্ছে,যা ব্যাটসম্যানদের হাত খুলে খেলায় সাহস দেবে। প্রথম কোয়ালিফায়ার শেষে দলটির কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনই বলছিলেন এ কথা,এই ধরনের ক্রিকেটার পেছনে থাকলে ওপরের ব্যাটসম্যানের জন্য অনেক সুবিধা।৩০ বলেও যদি ৫০ রান লাগে, সেটা করে ফেলতে পারবে,এই বিশ্বাসটা থাকে।’

বিপিএলের নবম আসরের সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দুই সতীর্থের মধুর লড়াই দেখতে পাবেন।সিলেট স্ট্রাইকার্সের দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন ও তৌহিদ হৃদয় দুজনই বিপিএল জুড়ে ছিলেন ধারাবাহিক।নাজমুল ১৪ ইনিংসে ১১৩ স্ট্রাইক রেটে ৪৫২ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় শীর্ষে আছেন।তিনে আছেন ১৩ ইনিংস খেলা তৌহিদ হৃদয়।১৪১ স্ট্রাইক রেটে হৃদয় ৪০৩ রান করেছেন।আজ শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দুজনের মধ্যে থাকছে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার প্রতিযোগিতাও।

নাজমুল-হৃদয়ের মতো বড় রান না পেলেও ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো বেশ কিছু ইনিংস খেলেছেন জাকির হাসান। ১৩৪ স্ট্রাইক রেটে ২৫০ রান করেছেন এই বাঁহাতি।পাওয়ার প্লেতে বাঁহাতি নাজমুল আউট হলে তিন নম্বরে জাকিরকে দেখা যেতে পারে।প্রথম ১০ ওভারে তারুণ্যনির্ভর এই টপ অর্ডারের দিকেই তাকিয়ে থাকবে সিলেট।ভালো শুরু পেয়ে গেলে মুশফিকুর রহিম,রায়ান বার্ল,থিসারা পেরেরারা শেষ ১০ ওভারে ঝড় তোলার মঞ্চ পেয়ে যাবে।

দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচের স্মৃতি মনে আছে তো?রংপুর রাইডার্সের জয়ের জন্য ১৮ বলে দরকার ৩৩ রান।হাতে ৭ উইকেট।সেখান থেকে সিলেটের ডেথ বোলিংয়ের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ে রংপুর।শেষ পর্যন্ত হেরেছে ১৯ রানে।তরুণ তানজীম হাসান ও বিপিএলে প্রথমবার খেলতে নামা লুক উড ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন দুর্দান্ত বোলিংয়ে।স্লোয়ার বল,ব্যাক অব দ্য হ্যান্ড,বাউন্সার,কাটার ও ইয়র্কার—যখন যেটা দরকার, সিলেটের ডেথ বোলাররা ঠিক সেটাই কাজে লাগিয়েছে সাফল্যের সঙ্গে।ফাইনালেও সিলেটের ডেথ বোলিংয়ে চোখ থাকবে।তবে সাফল্য পেলেও সিলেটের ডেথ বোলারদের অভিজ্ঞতা কম।তার ওপর আজ তাদের বল করতে হবে রাসেল-মঈনদের।সে পরীক্ষায় তাঁরা এমন করেন,সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

এ ক্ষেত্রে মাশরাফি বিন মুর্তজার অধিনায়কত্বের পরীক্ষা হবে। রংপুরের বিপক্ষে তাঁর প্রায় সব সিদ্ধান্তই কাজে লেগেছে।তিন নম্বরে ‘স্পিন-হিটার’ হিসেবে ব্যাট করতে নেমে যে ১৬ বলে ২৮ রান করেছেন তিনি,সেটা দলের রানটাকে বাড়াতে সাহায্য করেছে।ক্রিকেটীয় চাতুর্যের পরীক্ষায় লেটার মার্কস পেয়ে উতরে গেছেন তিনি।শুধু সেই ম্যাচে নয়,পুরো টুর্নামেন্টেই মাশরাফির অধিনায়কত্ব ছিল দুর্দান্ত।তিনি এর আগে চারবার বিপিএল ফাইনাল খেলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চারবারই।নিজের পঞ্চম ফাইনালেও কি ‘ম্যাশ-ম্যাজিক’ দেখা যাবে?

আরও খবর

Sponsered content