রাজনীতি

বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে যানজট নাকাল নগরবাসী

  প্রতিনিধি ১৯ জুলাই ২০২৩ , ৪:২৮:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে দ্বিতীয় দিনের মতো দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে।

আজ বুধবার বিকেলে আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীরা শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার জন্য তেজগাঁও সাতরাস্তা এলাকায় জড়ো হওয়ার পর রাজধানীর কেন্দ্রস্থলের আশপাশের সড়কগুলোতে যানজট ছড়িয়ে পড়েছে।

এর আগে সকালে টঙ্গীর আবদুুল্লাহপুর থেকে বিএনপি পদযাত্রা শুরু করে।পদযাত্রা শুরুর আগে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়।এতে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়ে আজকে যানজটের শুরু হয়।বিএনপির এই পদযাত্রা বিমানবন্দর সড়ক হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড,নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ, মালিবাগ, বাসাবো, মুগদা, সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ীর দিকে যাচ্ছে। তাদের এই পদযাত্রা শুরু হচ্ছে সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ রেখে। এতে যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ব্যক্তিদের।

দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে গতকালও সকাল থেকে দিনভর যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে।গাবতলী থেকে বিএনপি পদযাত্রা নিয়ে শহরের কেন্দ্রস্থলের দিকে যতটা এগিয়েছে,ততটা বেড়েছে যানজট। এর মধ্যে সকাল থেকে মগবাজার মোড়ে তারা সমাবেশ করায় আশপাশের সড়ক দিয়ে যান চলে ধীরগতিতে।বিকেলে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট থেকে আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রার কারণে যানজট আরও তীব্র আকার ধারণ করে।

সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দিনের মতো আজ পদযাত্রা করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।তার পাল্টায় বিকেলে তেজগাঁও থেকে মহাখালী পর্যন্ত শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা করছে আওয়ামী লীগ।এ উপলক্ষে দুপুর থেকেই তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা এলাকায় দলটির নেতা–কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। রাস্তার এক পাশ বন্ধ করে সেখানে শুরু হয় সমাবেশ। এতে আশপাশ এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে।

ট্রাফিক পুলিশ সূত্র জানিয়ে, সকালে আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রা শুরু করে।এতে উত্তরা,কুড়িল বিশ্বরোড,বাড্ডা ও গুলশান এলাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় এলাকায় আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার কারণে ওই এলাকা থেকে রমনা পর্যন্ত তীব্র যানজট শুরু হয়েছে।এই যানজট হাতিরঝিল,মগবাজার,বাংলামোটর,কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যে বিকেলে অফিস ছুটির পর তেজগাঁও ভূমি অফিস থেকে পায়ে হেঁটে জোয়ার সাহারা এলাকার দিকে রওনা দিয়েছেন ওই অফিসের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শোভাযাত্রার কারণে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি না পেয়ে তাই বাধ্য হয়েই পায়ে হেঁটে বাসায় যাচ্ছি। কয় ঘণ্টা লাগবে, বলতে পারছি না।’ তেজগাঁও থেকে জোয়ার সাহারা এলাকার দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার।

ভূমি অফিসের ওই কর্মকর্তার মতোই বেকায়দায় পড়েছেন আবদুুস সবুর নামের এক ব্যক্তি। বাস না পেয়ে মগবাজার থেকে পায়ে হেঁটেই আবদুল্লাহপুরের দিকে রওনা দেন তিনি। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আবদুস সবুর প্রথম আলোকে বলেন,রাস্তায় তীব্র যানজট। যানজটের কারণে গাড়ি চলছে না।তাই পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন। সামনে যানজট না পেলে কোনো এক জায়গা থেকে গাড়িতে উঠবেন। মগবাজার থেকে আবদুল্লাহপুরের দূরত্ব ২১ কিলোমিটার।

যানজটের কথা স্বীকার করে ট্রাফিক পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার জয়নুল আবেদিন বিকেলে বলেন, গাড়ি খুব ধীরগতিতে চলছে। যানজটের কারণে সবাইকে তেজগাঁওয়ের সড়ক বাদ দিয়ে বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট হয়ে চলাচলের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

ট্রাফিক পুলিশের তেজগাঁও,মতিঝিল ও বাড্ডা এলাকার একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,সমাবেশের কারণে পুরো ঢাকায় যানজট ছড়িয়ে পড়েছে।তবে বেশি যানজট হচ্ছে মতিঝিল, কাকরাইল, রমনা, মগবাজার, সাতরাস্তা থেকে মহাখালীর রাস্তায়। এর প্রভাবে শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট এলাকায়ও যানজট ছড়িয়ে পড়েছে।

ট্রাফিকের তেজগাঁও বিভাগের সহকারী কমিশনার স্নেহাশীষ কুমার দাস বলেন, আমরা কিছু এলাকায় বিকল্প পথ দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।’ বেলা তিনটার পর থেকে মৌচাক ফ্লাইওভার দিয়ে তেজগাঁওয়ে যাওয়া একেবারে বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content