বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংবাদ

ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কাজে মাসে মার্জিয়ার আয় প্রায় এক হাজার ডলার

  প্রতিনিধি ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৪:৪৫:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কাজে মাসে মার্জিয়ার আয় প্রায় এক হাজার ডলার।জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক শেষ করার পর মার্জিয়া আক্তারের ইচ্ছা ছিল কিছু একটা করার।ব্যবসা করতে চেয়েও বেশি দূর এগোতে পারেননি।মেয়ের বয়স কম থাকার কারণে বাইরে গিয়ে চাকরি করাও সম্ভব ছিল না।তাই ঘরে বসেই কিছু করতে চেয়েছিলেন জামালপুর শহরের উত্তর কাচারীপাড়ার মেয়ে মার্জিয়া।

তখন শুনলেন,ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং কাজের কথা।এ কাজ ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা যায়।আগ্রহের বিষয় শিখতে থাকেন মার্জিয়া আক্তার।ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে।এপ্রিলে গিয়ে প্রথম কাজ পান।প্রথম কাজে আয় করেন পাঁচ ডলার।আর এখন মাসে মার্জিয়ার আয় প্রায় এক হাজার ডলার,বাংলাদেশি মুদ্রায় যা এক লাখ টাকার বেশি। চার বছরে মার্জিয়া আয় করেছেন প্রায় ৩৩ লাখ টাকা। মার্জিয়া আক্তার গ্রাফিক ডিজাইনে দক্ষ হলেও সাত বছরের সন্তান নিয়ে জীবনবৃত্তান্ত লেখার (সিভি রাইটিং) কাজই বেশি করছেন।গত মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ফ্রিল্যান্সার সম্মেলনে ‘দেশসেরা ফ্রিল্যান্সার’ পুরস্কারও পেয়েছেন।

তিন ভাই–বোনের মধ্যে সবার বড় মার্জিয়া আক্তার।তাঁর বাবা হাবিবুর রহমান ডাক বিভাগে কাজ করতেন।বেশ কয়েক বছর আগে অবসর নিয়েছেন তিনি।মা মমতাজ বেগম,গৃহিণী। ২০০৪ সালে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ালেখার সময় ব্যবসায়ী ফেরদৌস হাসানের সঙ্গে বিয়ে হয় মার্জিয়া আক্তারের।বেশ কয়েক বছর পড়ালেখায় বিরতির পর ২০১৪ সালে স্নাতক শেষ করে ঘরে বসেই ছিলেন মার্জিয়া আক্তার।২০১৬ সালে মা হন।মেয়ের নাম আরিবা তাজমীন ফেরদৌস।ঘরের কাজ আর মেয়েকে সামলিয়েই সময় কাটত।তবে ঘরে বসেই কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিল।মার্জিয়া আক্তার মুঠোফোনে বলেন, ‘টুকটাক শুনতাম যে ঘরে বসে অনলাইনে আয় করা যায়।কিন্তু কীভাবে করা যায়,তা জানতাম না। হঠাৎ একদিন ফেসবুকে খেয়াল করলাম অনলাইনে কোর্স করা যায় বিভিন্ন বিষয়ে,এগুলো শিখলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করা যায়। ২০১৯ সালে গ্রাফিক ডিজাইনের একটি অনলাইন কোর্সে ভর্তি হই।শুরু হয় আমার পথ চলা।’

মার্জিয়া আক্তার জোরেশোরে কাজ শুরু করেন ২০২১ সাল থেকে।তিনি বলেন,এর আগে কাজ পেয়েছি,তবে সেটা খুবই কম। দুই বছর আমি চেষ্টা চালিয়ে গেছি।বসে না থেকে আমার পোর্টফোলিও সমৃদ্ধ করতে থাকি। এগুলো পরে কাজ পেতে বেশ সাহায্য করেছে।’

সবই বিদেশের কাজ
তীব্র ইচ্ছা আর একসঙ্গে ঘর ও মেয়েকে সামলানোর চিন্তা থেকেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন মার্জিয়া।তিনি বলেন,সত্যি বলতে আমি স্থানীয় কোনো কাজ এখনো করিনি।সবাই বিদেশের গ্রাহক।এখন পর্যন্ত ৯০০-এর বেশি গ্রাহকের কাজ করেছি।’ মার্জিয়া আক্তার মূলত একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। ছবি সম্পাদনা,লোগো,ফ্লায়ার নকশা,ভিডিও সম্পাদনার কাজ করেন।

মার্জিয়া বলেন, ‘শুরুর দিকে ছবি সম্পাদনা করতাম বেশি। এরপর ধীরে ধীরে জীবনবৃত্তান্ত লেখার কাজ (সিভি রাইটিং) শুরু করি।সিভি রাইটিংয়ের দক্ষতা বাড়াই।এখন বেশির ভাগ কাজই জীবনবৃত্তান্ত লেখার।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা হতে চান মার্জিয়া আক্তার।যেসব নারীর নিজের কিছু করার ইচ্ছা আছে কিন্তু দিকনির্দেশনা পান না, তাঁদের নিয়ে কাজ করতে চান তিনি।ফ্রিল্যান্সিংয়ে যাঁরা আসতে চান,তাঁদের উদ্দেশে মার্জিয়া বলেন,বসে না থেকে ধীরে ধীরে শিখতে হবে।হতাশ হওয়া চলবে না।নিজেকে এমন ভাবে গড়ে তুলতে হবে,যেন কোথায় কেউ আটকাতে না পারে।’

আরও খবর

Sponsered content