সারাদেশ

প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি

  প্রতিনিধি ৬ এপ্রিল ২০২৩ , ২:০৪:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।দৈনিক প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল চেয়ে রাজধানীতে একটি মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী,জোট ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীদের শাস্তিও দাবি করেন তারা।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘স্বাধীনতা-সচেতন নাগরিক সমাজ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

এতে বিনোদন জগতের অনেকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সাতবারের মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার জয়ী চিত্রনায়ক রিয়াজ,তিন বার এই পুরস্কার পাওয়া অভিনেত্রী তারিন আহমেদ ও অভিনেত্রী তানভিন সুইটিসহ আরও বেশ কয়েকজন।

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর করা ‘মাছ মাংস আর চালের স্বাধীনতা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ তুলে ওই প্রতিবেদনে দেশের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে দাবি করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়।

প্রতিবেদনটি নিয়ে এরই মধ্যে মামলা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে।গ্রেপ্তার হয়ে পাঁচদিন কারাগারে কাটিয়ে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন এর প্রতিবেদন শামসুজ্জামান শামস। জামিনে আছেন আরেক আসামি প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান।

ওই ঘটনায় প্রথম আলোর শাস্তি চেয়ে এর আগে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।বৃহস্পতিবারের মানববন্ধনের দাবির সঙ্গে সংহতি জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতাজ্জামান।

উপাচার্য প্রথম আলোর নাম না উল্লেখ করলেও বক্তব্যে দৈনিকটির শাস্তি দাবি করেন।এ সময় তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ অভাবনীয় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত।উন্নত দেশগুলোতে বাংলাদেশের নাম উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বারবার উচ্চারিত হয়।একই সঙ্গে একটি নির্বাচিত সরকারের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে নির্বাচন এগিয়ে আসছে।এ সময়ে নানা অপকৌশল শুরু হয়েছে।এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মৌলিক দায়িত্ব।’

উপাচার্য বলেন,একটি বিশেষ পটভূমির উদ্দেশে আমাদের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে।যেসব পত্রিকা এসব অপকর্মে যুক্ত আছে,তাদের বিরুদ্ধে সবার সম্মিলিত সোচ্চার হওয়াই সময়ের দাবি। মহান স্বাধীনতার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এ ধরনের প্রয়াস অব্যহত থাকবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া বলেন,প্রথম আলো এখন স্বাধীনতা বিরোধীদের মুখপাত্র।তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। তাদের এসব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা স্বাধীনতা বিরোধীদের একত্রিত করার চেষ্টা করেছে।

‘আমরা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শিক্ষকরা কোনো বিবৃতি দিলে তারা আমাদের নাম ছাপায় না,যেখানে অন্য পত্রিকায় আমাদের বিবৃতি ছাপায়।খলনায়ক হওয়ার চেষ্টা করবেন না।’

সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন,বাংলাদেশ বিরোধী যে অপশক্তি তাদেরকে জানিয়ে দেয়ার জন্য এখানে সমবেত হয়েছি।বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যে শক্তিগুলো আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ তাদের কখনো মেনে নেয় নাই,আর নেবেও না।’

নাট্যব্যক্তিত্ব পীযুষ বন্দোপাধ্যায় বলেন,বঙ্গবন্ধুর সময়ে বাসন্তীকে জাল পরিয়ে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছিল তৎকালীন জাতীয় দৈনিক।ঠিক তেমনি স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রথম আলোর অর্বাচীন সাংবাদিক ষড়যন্ত্রের জাল তৈরি করল।

‘এটি হঠাৎ করেই হয়নি।একজন মফস্বল সাংবাদিক সংবাদ পাঠাল,এটি হঠাৎ করেই পাবলিশড হয়ে গেছে এরকম না। ওই গোষ্ঠি সুপরিকল্পিতভাবে এটি করেছে।’

ঘাতক দালাল নিমূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন,এত বড় সাহস কারোরই হওয়া উচিত না যে,দেশের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করবে।যারা আমাদের স্বাধীনতাকে অবমাননা করবে তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।প্রয়োজনে এর জন্য আইন করতে হবে।’

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন,আজকে আমরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছি না বরং পাক হানাদার বাহিনীর প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছি। প্রথম আলো ২৬ মার্চ যে সংবাদ প্রচার করেছে তা স্বাধীনতা বিরোধী।এটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রেরই অংশ।এর জন্য প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।’

প্রথম আলোর বিরুদ্ধে রমনা থানায় করা মামলার বাদী আইনজীবী মশিউর মালেক প্রথম আলো পত্রিকাকে কালো তালিকাভুক্ত করে পত্রিকা বাতিলের দাবি জানান।

কর্মসূচিতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী,জোট ও সংগঠন অংশ নেয়।সেগুলো হলো-স্লোগান ৭১,বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, জাতীয় ওলামা সমাজ,জয় বাংলা সাংস্কৃতিক জোট, আন্তর্জাতিক শিল্পী সাহিত্যিক সম্মিলিত পরিষদ,বাংলার মুখ, বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া স্মৃতি পাঠাগার,বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পরিষদ,বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংঘ,বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম ব্রিগেড,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ,বিচ্চু বাহিনী,মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যমঞ্চ,বৃত্তান্ত ৭১ ফাউন্ডেশন।

আরও খবর

Sponsered content