অপরাধ-আইন-আদালত

হাইকোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে!

  প্রতিনিধি ২৭ জুন ২০২৩ , ১০:২২:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মোঃ নুর নবী চৌধুরীর বিরুদ্ধে মহল্লাদার পদে চাকরি দেয়া নামে গড়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আঁতাত করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট মামলা দায়ের করা হয়েছে।তার রীট পিটিশন মামলা ৬৭৩৯/২০২২ ইংরেজি। উক্ত রীট মামলাটি প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত বাদী রাসেল মোল্লাকে নিয়োগের পূর্ণ আবেদন সাপেক্ষে রিসিভ কপি আদালতে উপস্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। উক্ত আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ণ নিয়োগ দেয়ার আবেদন পূর্বক রিসিভ কপি আদালতে জমা দেয়া হলে আউট অব কোর্ট প্রধান বিচারপতির কাছে বেঞ্চ গঠনের জন্য পাঠিয়ে দেন। হাইকোর্টে রিট মামলা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ সম্পূর্ণ করছেন। পরবর্তীতে পূর্ণ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরিশাল এর মাধ্যমে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনপত্রে তা উল্লেখ করা হয়েছে,তা হুবহু তুলে ধরা হলো:-


আমি নিম্নোক্ত স্বাক্ষরকারী সদয় অবগতির জন্যে জানাচ্ছি,যে একজন কৃষক পরিবারের সন্তান।আমাকে রাজমিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে রাজযোগালী দিনমজুরি কাজ করে সংসার চালাতে হয়।কালাবদর নদীর ভাঙনে বাপ-দাদার বসত-ভিটা হারিয়ে অসহায় মানবতায় জীবন-যাপন করছি।ভোলার সদর ভেদুরিয়া ও মেহেন্দিগঞ্জের আলিমাবাদ ইউনিয়নের সিমানা নির্ধারণে মহামান্য হাইকোর্টে রিট ৫৩৮৩-৫৩৮৫/২০০৭ মামলা বিচারাধীন স্বত্ত্বেও আলিমাবাদকে বিভক্ত করে শ্রীপুর গঠন করা হলেও শ্রীপুর ইউনিয়নের সিমানা নির্ধারণ ও ওয়ার্ড পূর্নবিন্যাস চলমান রয়েছে।এরমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)র ওয়েব সাইটে গত ১৯/১/২০২২ স্মারক নম্বর .০৫.১০.৮৩৬.১০১.২৫.০০২.২০২২.৪৪ উল্লেখিত স্মারকে মহল্লাদার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।আমি শ্রীপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের(মধ্যে বাহেরচর) ৫নং ওয়ার্ডের স্হায়ী বাসিন্দা হিসেবে মহল্লাদার পদে চাকরির জন্য আবেদন করছি।গত রোববার(১৫ মে ২০২২) লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে বৃহস্পতিবার(১৯ মে ২০২২) মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা(ইউএনও) শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লার দাবিকৃত নজরয়ানা সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতে না পারায় আমাকে খাটো অজুহাত দেখিয়ে অযোগ্য ঘোষণা করেন।সংবিধানের ২৯ (১) অনুচ্ছেদে ‘সরকারি নিয়োগ লাভে সমতা’ শিরোনামে (২) ধারায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে: কেবল ধর্ম,বর্ণ,গোষ্ঠী,নারী পুরুষভেদে… কোনো নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের অযোগ্য হবে না, কিংবা সে ক্ষেত্রে তার প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করা যাবে না।আমাকে অযোগ্য ঘোষণার পর অনেকেরই অভিযোগ ১১টি ইউনিয়নের গ্রাম-পুলিশ,দফাদার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ঘোষিত শর্তগুলো উপজেলা প্রশাসনের একটি অনৈতিক মানসিকতার কৌশল অবলম্বন করে ইউপি চেয়ারম্যানদের যোগসাজশে মহল্লাদার নিয়োগের জন্য প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে গড়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে।উপজেলা বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা এনিয়ে সংবাদ প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা জানতে চেয়েছেন।পরেরদিন শুক্রবার(২০ মে ২০২২) বরিশালের স্হানীয়-জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে ঢালাওভাবে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।উক্ত সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদেও বাহেরচর গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের আব্বাস নামে মহল্লাদার নিয়োগ প্রত্যাশীর বক্তব্য আড়াই লাখ টাকা দিলেও চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লা সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যতীত মহল্লাদার নিয়োগ দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন।সেই বক্তব্যের রেকর্ডিং স্হানীয় মেম্বারের মাধ্যমে বিভিন্ন মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।বাহেরচর গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের নিয়োগ তালিকায় চুরান্ত করতে শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লা তার স্কুল জীবনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মোঃ জয়নাল আবেদীন ফকিরের ভাই মোঃ আবুল কাশেম ফকিরের ছেলে মোঃ রাকিব হোসেন সাগরের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছেন।রাকিব ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৫নং ওয়ার্ডে ভোটার পরিচয়পত্র পরিবর্তনের আবেদন করেছে।বাহেরচর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের মহল্লাদার হিসেবে ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ ইয়াছিন চৌকিদারের ছেলে মোঃ রুহুল আমিন ওরফে চান মিয়াকে সাড়ে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে সেলেক্ট করলেও ভোটার পরিচয়পত্র পরিবর্তন আবেদন করেছে।সুনিদিষ্ট অভিযোগের সংবাদের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবীর মাধ্যমে ২৩ মে ২০২২ লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ পূর্বক ৩দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।লিগ্যাল নোটিশের জবাব না দেয়ায় মহামান্য হাইকোর্টে প্রতিকার চেয়ে রিট পিটিশন দায়ের করি।যার নাম্বার ৬৭৩৯/২০২২।উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রতিকার চাওয়া স্বত্ত্বেও আদালত অবমাননার করে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ গঠন ও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অবৈধ হলেও আদালত মানবিক বিবেচনায় রীট আবেদনকারীর চাকরি নিশ্চিত করতে পূর্ণ নিয়োগ আবেদন দাখিল পূর্বক রিসিভ কপি আদালতে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষকে ১ মাসের মধ্যে রিটকারীকে মহল্লাদার নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে।মহামান্য হাইকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী বরিশাল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) কাছে আবেদন পূর্বক রিসিভ কপি আদালতে জমা দেয়া হয়েছে।উচ্চ আদালতে রিট বিচারাধীন থাকলেও হাইকোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন মহল্লাদার নিয়োগ সম্পন্ন করছেন।যা মারাত্মক অপরাধ ও আদালত অবমাননার শামিল।উক্ত নিয়োগ বাতিল করে আমাকে মানবিক বিবেচনায় নিয়োগ প্রদান পূর্বক আমার স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে বাহেরচর শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ্বে ঘর-বাড়ি করে নিরাপদে বসবাস করতে পারি,তাই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার হস্তক্ষেপ ও সুদৃষ্টি কামনা করছি।

আরও খবর

Sponsered content