চাকরির খবর

টিভির উপস্থাপিকা তন্নী ৪১তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন

  প্রতিনিধি ১৬ আগস্ট ২০২৩ , ১:৫১:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।গ্লোবাল টিভির উপস্থাপিকা তন্নী ৪১তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।একজন কর্মজীবী নারীর দিন যেভাবে শুরু হয়,তন্বীর দিনটিও সেভাবেই শুরু হয়েছিল সেদিন।চিন্তা আর উৎকণ্ঠায় দুরুদুরু বুকে সকাল ৯টায় উপস্থিত হন অফিসে।তিনি একই সঙ্গে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠান সঞ্চালনার কাজ করেন।তাই এক অফিস শেষেই পড়ন্ত বিকেলে দৌড়াতে হয় আরেক অফিসে।সেদিনও তা-ই করেছিলেন।বিকেলের পর গিয়েছিলেন টেলিভিশন চ্যানেলে। সেখানে অনুষ্ঠানের বিরতিতে স্টুডিওতে বসে জানতে পারলেন,বিসিএসের ফল প্রকাশিত হয়েছে।দেখলেন ৪১তম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে তিনিও সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন!

ফারজানা রহমান তন্বীর জন্ম নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায়। দুটি চাকরিতে সময় দিয়ে বিসিএসে সাফল্য পাওয়া যে মোটেও সহজ ছিল না,সেটা বলাই বাহুল্য।সরকারি কর্মকর্তা মা-বাবা খুব করে চাইতেন,তাঁদের আদরের মেয়ে হবে বিসিএস ক্যাডার।৪১তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই তন্বী হারান বাবাকে।মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।এ অবস্থায় মায়ের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি চাকরি আর বিসিএসে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছিল একই সঙ্গে। সেই কষ্টের ফল তিনি পেয়েছেন।ফল জেনেই তিনি প্রথমে ফোন করে সংবাদটি জানান মাকে।

নরসিংদীর শিবপুর থেকেই স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন তন্বী।স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষ থেকে নিতে থাকেন বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি।২০১৭ সালের শেষ দিক থেকে তা আরও জোরালো হয়।

তন্বী জানান,একেবারে ‘মুখস্থ’ বলা হয় যাকে,তা তিনি কখনো করেননি।বিষয়গুলোকে তিনি বিস্তারিতভাবে পড়তেন, খুঁটিনাটি জানার চেষ্টা করতেন।এ জন্য লিখিত পরীক্ষা তাঁর জন্য সহজ হয়ে যায়। টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতে গিয়ে কথা বলায় সাবলীল ছিলেন তিনি।এ বিষয়টি তাঁকে মৌখিক পরীক্ষায় অনেক সহায়তা করেছে।মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতিও তিনি বেশ গুছিয়ে নিয়েছিলেন।একটি প্রশ্নের উত্তর দিলে পরের প্রশ্ন কী হতে পারে,সে চিন্তা করে ভাইভার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তন্বী।

সবার মতো বিসিএস ক্যাডার হওয়া ছিল তন্বীর অনেক দিনের স্বপ্ন।তবে তিনি জানিয়েছেন,বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিজে যতটা দেখেছিলেন,তার থেকে বেশি দেখেছিলেন তাঁর বাবা।বাবার ইচ্ছা আর জীবনসঙ্গীর অনুপ্রেরণাতেই তন্বী নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করতে থাকেন বিসিএস পরীক্ষায় সফল হতে।

তন্বী ২০১৭ সালে আরটিভি-ডাবর ভাটিকা ক্যাম্পাস স্টারে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্যাম্পাস স্টার হন।তখন থেকে তিনি টেলিভিশনে কাজ করতে শুরু করেন।২০১৮ সাল থেকে দীপ্ত টিভিতে জনপ্রিয় দীপ্ত কৃষিবিষয়ক অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা শুরু করেন তিনি।এখন তিনি গ্লোবাল টিভিতে উপস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।

তন্বী বিশ্বাস করেন,বিসিএস ক্যাডার হওয়া অনেকটাই ভাগ্যের বিষয়।প্রত্যেকের প্রচেষ্টা থাকে। যাঁরা লিখিত পরীক্ষা দিয়ে মৌখিক পরীক্ষা পর্যন্ত আসেন এবং যাঁরা শেষ পর্যন্ত যেতে পারেন,তাঁরা যেমন মেধাবী, যাঁরা এ পর্যন্ত আসতে পারেন না,তাঁরাও মেধাবী।মেয়েদের ক্ষেত্রে পড়ালেখা শেষ করে বিসিএস প্রস্তুতি নেওয়া ভীষণ কষ্টসাধ্য বিষয় বলে মনে করেন তন্বী।

আরও খবর

Sponsered content