চাকরির খবর

১ লাখ বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠানোর আগেই ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে!

  প্রতিনিধি ৩১ মে ২০২৩ , ২:৫৫:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে জট লেগেছে।প্রায় ১ লাখ বাংলাদেশি কর্মীর ভিসার সত্যায়নের আবেদন বাংলাদেশ হাইকমিশনে পড়ে আছে।প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাগাদা দিলেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি।আগামী শুক্রবার এসব ভিসার অধিকাংশের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন,এমন অবস্থা চলতে থাকলে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, চেনদানা মেওয়াহ রিসোর্স নামের মালয়েশিয়ার নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে চায় ১ হাজার জন।কোটা অনুমোদনের পর এই কর্মীদের নেওয়ার জন্য ভিসা সংগ্রহ করে তারা। গত ডিসেম্বরে তারা সত্যায়নের জন্য আবেদন করে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনে।আবেদনের পর পাঁচ মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সেই সত্যায়ন করেনি হাইকমিশন।এখন ভিসার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২ জুন।ঢাকা থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাতেও এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি হাইকমিশন।

জনশক্তি রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, সত্যায়নের অপেক্ষায় হাইকমিশনে আবেদনের স্তূপ জমা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ কর্মী নিয়োগের আবেদন জমা আছে সত্যায়নের জন্য।এর মধ্যে মেয়াদ শেষের দিকে প্রায় ১০ হাজারের মতো ভিসার।সত্যায়ন না করায় অনেক ক্ষেত্রে আগ্রহ হারাচ্ছে নিয়োগকর্তারা।সাধারণত ডিমান্ড নোট ও অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে হাইকমিশনের সত্যায়ন করে দেওয়ার কথা। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও ভিসার মেয়াদ শেষের দিকে চলে আসায় চলতি মাসে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে হাইকমিশনের চিঠিও পাঠানো হয়।চেনদানা মেওয়াহ রিসোর্সের সিইও বাংলাদেশ হাইকমিশনের লেবার মিনিস্টারের কাছে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেন—ইতিমধ্যেই দুই ধাপে ৭৫ জন কর্মী কুয়ালালামপুর এসে পৌঁছে কাজে যোগ দিয়েছে।মে মাসের শেষ নাগাদ ৩৫০ জন ও জুন মাসে আরো ৩৫০ জন কর্মী এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।তারা সবাই ক্যামেরন হাইল্যান্ড ও জোহর বাহুতে কাজে যোগ দেবেন। তাদের চাকরি, বাসস্থান, যাতায়াত ও বেতনের জন্য সব দায়দায়িত্ব আমার বলে চিঠিতে উল্লে­খ করে ক্লিয়ারেন্স দেওয়ার অনুরোধ জানান প্রতিষ্ঠানের সিইও দাতো সানদানাতাভান। কিন্তু এর পরও সত্যায়ন পাওয়া যায়নি হাইকমিশনের।

 

সূত্র জানায়, সাধারণত সত্যায়নগুলো করে থাকে মিশনের লেবার উইং।কিন্তু লেবার উইং অনুমোদন করে দিলেও হাইকমিশনের অন্য অংশে আটকে যায় অনুমোদন।আগামী ২ জুন এই আবেদনের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে, এমন পরিস্থিতির কথা জেনে ঢাকা থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তি যোগাযোগ করে হাইকমিশনে।কাগজপত্র ঠিক থাকলে ভিসার নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে সত্যায়নের আবেদন অনুমোদনের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আবিদ এয়ার ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরের স্বত্বাধিকারী কে এম মোবারক উল্ল্যাহ শিমুল বলেন, বেশির ভাগ কোম্পানির নিজস্ব জমি নেই,তারা লিজ নিয়ে ব্যবসা করে।হাইকমিশন এটা জানে।তাই হাইকমিশন থেকে লিজের কাগজ চাওয়া হয়েছিল।সেই জমির লিজের সব কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে।লিজের কাগজের পর ব্যাংক স্টেটমেন্ট চাওয়া হয়েছে, তাও দেওয়া হয়েছে।এরপর শর্ত দেওয়া হয়েছে,২৫০ কর্মীকে আগে নিয়ে এসে কাজে যোগ দেওয়ার, তাও করা হয়েছে।কোম্পানির মালিক সব দায়দায়িত্ব নেওয়ার অঙ্গীকারও করেছেন।কিন্তু তার পরও এই ভোগান্তি। তার মতে,সত্যায়নের নামে এই দীর্ঘ ভোগান্তি ও কিছু লোকের বাণিজ্যের অবসান করা দরকার।

জনশক্তি রপ্তানিকারকদের দাবি,কর্মী পাঠাতে কিছু সমস্যা হতে পারে,সেজন্য মন্ত্রণালয় থেকে শাস্তির ব্যবস্থা আছে।অভিযোগ পেলে শাস্তি দেওয়াও হয়। হাইকমিশন থেকে সত্যায়ন দিতে যেহেতু এত দীর্ঘ সময় লাগছে, তাই মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়িত করার ব্যবস্থা করতে পারলে কর্মী পাঠানোয় গতি আসত।না হলে এখনকার এই ধারা অব্যাহত থাকলে সংকটে পড়বে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার।

আরও খবর

Sponsered content