প্রতিনিধি ১৮ জুন ২০২৩ , ১২:২৮:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক।।গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের প্রক্রিয়া ‘আইনানুগ ছিল না’ বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ রায় দেয়।
রায়ের পর জাহাঙ্গীরের আইনজীবী বেলায়েত হোসেন আদালতপাড়ায় সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত রিট মামলাটির নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন।রায়ে আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন,গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের ক্ষেত্রে যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।”
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত জাহাঙ্গীর আলম পদ ফিরে পেতে ২০২২ সালের ১৪ অগাস্ট হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
সে বিষয়ে প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ অগাস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করে।মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না,তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।সেই রুলের নিষ্পত্তি করে রোববার রায় দেওয়া হল।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তখনকার আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্যের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।সেখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন।জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলাও হয়।
এর জেরে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীরকে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।এর এর এক সপ্তাহের মাথায় ২৫ নভেম্বর গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গতবছর অগাস্টে হাইকোর্টে যান জাহাঙ্গীর।আদালত রুল জারির পর চলতি বছরের মার্চে ওই রুলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
২৮ মার্চ শুনানি শেষে ৩০ মার্চ রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করে আদালত।কিন্তু ওইদিন রাষ্ট্রপক্ষ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শুনানি করতে আবেদন করে।
তাতে রায় পিছিয়ে ৪ এপ্রিল নতুন তারিখ রাখা হয়।সেদিনও রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করলে আদালত ২ মে রায়ের তারিখ দেয়।শেষ পর্যন্ত সেই রায় হল রোববার।
এরই মধ্যে গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়েছে।তাতে অংশ নেওয়ার জন্য জাহাঙ্গীর স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেও তা বাতিল হয়ে যায়।
নির্বাচনের আগে জাহাঙ্গীরকে ক্ষমাও করেছিল আওয়ামী লীগ,কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ভোটে প্রার্থী হতে চাওয়ায় তাকে ফের বহিষ্কার করা হয়।
শেষ হাসি অবশ্য জাহাঙ্গীরই হেসেছেন।মা জায়েদা খাতুনকে মেয়র পদের প্রার্থী করে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে ভোটে জিতিয়ে এনেছেন তিনি।