লেখক ও কলামিস্ট এবং মন্তব্য কলাম:-

আমি চাইলে ডিভোর্স দিতে পারতাম কিন্তু দুটো নিষ্পাপ মানুষের জন্য আমি নির্বাক-সাদিয়া আক্তার

  প্রতিনিধি ২০ অক্টোবর ২০২২ , ১২:৩৩:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।আমার ভাসুরের দেশে ফেরার ডেট একটু পিছিয়ে যায় কিন্তু খবর শোনার পর থেকেই আমার জা বেশ পাল্টে যেতে শুরু করলো।দিনরাত ভিডিও কলে বরের কাছে এটা ওটা আনার বায়না করতে থাকলো।

অনয়কে পাত্তা দিচ্ছে না খুব একটা ইদানীং।অনয় বেচারা ছাঁদে গিয়ে চুপচাপ বসে থাকে। কখনো কখনো দেখি বিছানায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে।মুখভার একরাশ হতাশা নিয়ে।এসবের ভিড়ে আমার সবসময়ই মনে হতে থাকে আমার শাশুড়ী কেন তার বড় ছেলেকে এইভাবে ঠকাচ্ছে?সে তো সব জানে!তবে তার নিশ্চুপ থাকা সবচেয়ে বেশি কষ্ট দেয় আমাকে।

বিয়ের পর জানতে পারি আমার জায়ের ছোট বোন রিশার সাথে অনয়ের বিয়ের কথা হলেও সেটা আমার ভাসুর কোনো অজানা কারণে হতে দেয়নি।তারপর একদিন হুট করেই বাবার সাথে আমার শ্বশুরের বেশ অনেক বছর পর দেখা হয়।তারপর আমাদের বিয়ে হয়।

এরমধ্যে আমার শ্বশুর একদিন আমায় ডেকে বলে পিহুক মা বড় খোকা ফেরার আগেই তুমি আর অনয় গিয়ে কোথাও একটা ঘুরে এসো রিফ্রেশ লাগবে।আজকাল অনয়কে বেশ ক্লান্ত লাগে।সবাই শুধু তার সন্তানের মুখের ছাপ পড়তে পারে অথচ বিয়ের পর থেকে আমার যে সংগ্রাম চলে তা কারো চোখ পড়ে না।

সামনেই তো দুদিন সরকারি ছুটি পড়বে।এ প্রস্তাবে আমি কিছুটা সম্মতি পোষণ করি।তবে অনয় প্রথমে না করলেও পরে আমার শাশুড়ী তাকে রাজি করায়।মানুষটাকে একান্ত নিজের করে পেতে চেয়েছিলাম সবসময়ই কিন্তু সেটা জোরপূর্বক নয়।আর অনয় কতটা ভুলের স্বর্গে বাস করছে সেটা সময়ই বলে দিবে।অনয় যতবার আমার কাছে এসেছে ততবারই মনে হতো এটা একদম মেকি অনুভূতি। যেখানে আদৌ আমার প্রয়োজন ছিলো কি না আমার মনে হয়।বুঝতে পারার পর থেকে নিজে থেকে কখনো আমি তার কাছে যায়নি।

প্রতিনিয়ত মনে হতে থাকে আমি মুখোশ পড়া একজনের সাথে সংসার করছি।আমি চাইলে ডিভোর্স দিতে পারতাম কিন্তু দুটো নিষ্পাপ মানুষের জন্য আমি নির্বাক।

তবে মানুষ যে এত লোভী হতে পারে সেটা আমার জা কে না দেখলে জানতাম না।বিয়ের পর যখন শাশুড়ীর সাথে সখ্যতা শুরু তৈরি হয়েছিলো সেটাকেও তিনিই বাধা দিয়েছে। সারাদিন পায়ের উপর পা দিয়ে বসে থেকে হুকুম করে চলা স্বভাবের মানুষ তিনি।বাড়িতে দুজন কাজের মাসি থাকা সত্ত্বেও আমাকে দিয়ে এ কাজ ও কাজ করিয়ে নিতে শুরু করেছিলো।একদিন অনয়কে বলেছিলাম অনয় এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে বউয়ের দালাল বানিয়ে দিয়েছিলো।

তাদের সম্পর্ক যে অন্য পাঁচটা দেবর-বৌদির মতো নয় এটা আমি খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পেরেছিলাম তাই কিছুটা সংশয় সবসময়ই মনে লাগতো।শ্বশুরের কথা মতো অনয়ের সাথে হানিমুনে কক্সবাজার যাবার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।এমনি সময় হলে হয়তো আমার জা কখনো যেতে দিতো না কিন্তু সে সময় তার কোনো নিষেধ আমার চোখে পড়েনি।

২রাত ২দিন কিছুটা ভালো সময় কাটিয়ে ঢাকা ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় অনয়ের পা ভেঙে যায়।আমি হাতে বেশ চোট পাই।আমি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে গেলেও অনয়ের পুরো বেডরেস্টে থাকতে হয়।আমরা বাসায় ফেরার তেরো দিন পর আমার ভাসুর দেশে ফিরলো।

তবে দেশে সে একা ফিরলেও দেশে এসে জানায় আমার ভাসুর তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিবে।কারণ আমার জায়ের ছোট বোন রিশার সাথে তার বেশ ভালো সম্পর্ক।তারা একে অপরকে ভালোবাসে এবং বিয়ে করবে।

দুই পরিবারে ভীষণ রকমের ঝামেলা শুরু হয়।দুই দিন পর রিশা ব্যাগ পত্র হাতে এ বাড়িতে পালিয়ে চলে আসে।
আমার জা তার স্বামী আর বোনের এ বিশ্বাসঘাতকতা দেখে অসুস্থ হয়ে পড়ে।তাকে হসপিটালে ভর্তি করানো হলো।

আরও খবর

Sponsered content