অপরাধ-আইন-আদালত

আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন

  প্রতিনিধি ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:৫০:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।আদালতে বিচারকাজ বাংলা ভাষায় হলেও বোধগম্য বাংলা ভাষার অভাব থেকে যায়।আবার উচ্চ আদালতে বাংলার পরিবর্তে ইংরেজির প্রাধান্য থাকায় সৃষ্টি হয় বিড়ম্বনা।ইংরেজি ভাষায় রায় ঘোষণা হওয়ায় বিচারপ্রার্থীর রায়ের বিষয়বস্তু বা কারণ বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে।এসব বিড়ম্বনা এবং আদালতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে ‘আদালতের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন’ নিয়ে এক মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন।

হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয় এই মুক্ত আলোচনা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ ‘বাংলা ভাষা প্রচলন আইন’ প্রণয়ন করা হয়। এ আইনের ৩ ধারায় আইনটির প্রবর্তন ও কার্যকরী ব্যবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সর্বত্র তথা সরকারি অফিস,আদালত,আধা সরকারি,স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র,আইন-আদালতের সওয়াল-জবাব এবং অন্যান্য আইনি কার্যাবলি অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. আবদুল মতিন বলেন,চাইলে রাতারাতিই আদালতের সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন সম্ভব।এটা জনগণকে ভয়াবহভাবেই চাইতে হবে।রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা বলেন,এটা অত্যন্ত দুঃখের যে স্বাধীনতার ৫১ বছর পর আমরা বলছি আমাদের আইন বাংলায় হতে হবে। যখন বাংলা ভাষা বিশ্বের ভাষা হয়ে গিয়েছে।কিন্তু এখনও রাষ্ট্রের ভাষা হয়ে ওঠেনি।

সাবেক জেলা জজ মাসদার হোসেন বলেন,সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না কেন তার শাস্তি হচ্ছে বা ফাঁসি হচ্ছে।এটা বোঝার জন্য তাকে আইনজীবীকে অতিরিক্ত ফি দিয়ে বুঝতে হয়।আমাদের সুপ্রিম কোর্ট আছে,সেখান থেকে যদি বলে দেয়,আজ থেকে নিম্ন আদালত বাংলায় রায় দেবে,তাহলে তো আর আইন করা লাগে না।সুপ্রিম কোর্ট একবার বললে সেটা সব কোর্টের জন্য মেন্ডেটরি হয়ে যায়।

সভাপতির বক্তব্যে হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন,ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর পর আজকে আমরা এ দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি,এ দায় আমাদের পূর্বপুরুষদের এবং সমকালীনদের। অথচ স্বাধীনতাযুদ্ধের সূতিকাগারই ছিল এই ভাষা আন্দোলন।

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাহিদ ফেরদৌসী।এ ছাড়া সভায় আরও আলোচনায় অংশ নেয় শিক্ষাবিদ ও দার্শনিক অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের প্ল্যানিং এডিটর আসজাদুল কিবরিয়া,সিনিয়র জেলা জজ (অব.) ড. মো. শাহজাহান, কলামিস্ট ও লেখক ফারুক ওয়াসিফ,লেখক ও প্রাবন্ধিক ফিরোজ আহমেদ,কলামিস্ট ও গবেষক রাখাল রাহা প্রমুখ।

আরও খবর

Sponsered content