সারাদেশ

অর্ধশতাধিক ছাত্রের সঙ্গে সমকামিতার অভিযোগ আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে!

  প্রতিনিধি ২ নভেম্বর ২০২২ , ১:৩৫:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ধামরাই(ঢাকা)প্রতিনিধি।।ধামরাইয়ে অর্ধশতাধিক ছাত্রের সঙ্গে সমকামিতা ও অনৈতিক কার্যকালাপের অভিযোগ উঠেছে এক কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মো. আমিনুল ইসলাম তিনি ধামরাইয়ের ভালুম আতাউর রহমান ডিগ্রী কলেজের ভূগোল বিভাগের জেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

জানা যায়, অভিযুক্ত আমিনুল বিভিন্ন সময়ে কলেজটির প্রায় অর্ধশতাধিক সাবেক এবং বর্তমান ছাত্রের সঙ্গে পরীক্ষায় অকৃতকার্য করানো,পরীক্ষার অনুমতি না দেওয়াসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক সমকামিতা ও অনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হতে বাধ্য করতেন।তার এই অসদাচরণের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।সেই কমিটির আহ্বায়ক ওই কলেজের শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান,ভুক্তভোগী ৫০-৬০ ছাত্রের মধ্য থেকে ৩০ জনের (সাবেক ও বর্তমান)সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এই সাক্ষাৎকারে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়,অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম বিগত কয়েক বছর যাবত সমকামিতার কার্যকলাপে লিপ্ত আছেন।তিনি বিভিন্ন সময় পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে এবং অনুচিত প্রভাব বিস্তার করে ছাত্রদেরকে কাছে টানেন।

অতঃপর তিনি তাদেরকে জোরপূর্বক সমকামিতায় অংশ নিতে বাধ্য করেন এবং সমকামিতায় উৎসাহিত করেন।কোনো ছাত্র এ ধরনের কার্যকলাপে রাজি না হলে তাকে পরীক্ষায় ফেল করানোর কথা বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন।

ভিকটিম সৈকত (ছদ্মনাম) নামে কলেজটির মানবিক বিভাগের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমিনুল স্যার আমাকে ক্লাসরুম থেকে কন্ট্রোলরুমে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক আমার গোপন অঙ্গে হাত দেয়।আমি এতে আপত্তি জানালে আমাকে পরিক্ষা দিতে দিবে না বলে ভয়ভীতি দেখায়।

শৈবাল (ছদ্মনাম)নামে কলেজের এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী জানায়,স্যার আমাকে হাত ধরে ফাঁকা রুমে নিয়ে গুপ্তঅঙ্গে হাত দিতেন।রাতে ভিডিও কলে আমাকে উলঙ্গ ছবি দিতে চাপ প্রয়োগ করতেন।এব্যাপারে আমি কলেজের আরও দুই শিক্ষকের কাছে বিচার দিয়েছিলাম।কিন্তু তারা কোনো প্রতিকার করেনি।

সজিব(ছদ্মনাম)নামে কলেজের বিএম শাখার এক শিক্ষার্থী জানায়,একরুম থেকে অন্যরুমে আলমারি স্থানান্তর করার সময় আমিনুল স্যার আমার গুপ্তঅঙ্গে স্বজোরে চাপ দেয় এবং আমাকে অশ্লীল কথা বলে।এঘটনায় ব্যথায় আমি কয়েকদিন ক্লাসে উপস্থিত হতে পারিনি।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত শিক্ষক আমিনুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দিয়ে নাম্বারটি বন্ধ করে দেন।

এব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ মাইন উদ্দিন বলেন,বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিয়েছেন।আমরা এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ইউএনও মহোদয়কে পাঠিয়েছি।বর্তমানে অভিযুক্ত শিক্ষককে কলেজে আসতে বারণ করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এতদিন কেন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি—এমন প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন,এ ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি।সপ্তাহ খানেকের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।

আরও খবর

Sponsered content