অপরাধ-আইন-আদালত

ধর্ষণের দুই মাস পর গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা

  প্রতিনিধি ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১১:৩০:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

গোদাগাড়ী (রাজশাহী) প্রতিনিধি:-রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ললিতা (ছদ্মনাম) (১৬) নামের এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার স্বজনদের অনৈতিক চাঁপে যথা সময়ে থানায় অভিযোগ কিংবা মামলা করতে না পারলেও অবশেষে ধর্ষণের দুই মাস পর গোদাগাড়ি থানায় একটি মামলা হয়েছে।

গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী কিশোরির নানী শেফালি বেগম। যার মামলা নম্বর ০৮। তারিখ ০৫/০৯/২০২২ ইং। গত ২ মাস পূর্বে বেলা ১২টার দিকে দিগ্রাম জোড়সতিন পাড়া
এলাকায় এঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি একই এলাকার জাহাঙ্গীর আলম (৩৬)।সে তিন সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরের বাবার নাম খায়রুল ইসলাম। ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরী জাহাঙ্গীরকে মামা বলে ডাকতেন। গত ১৩ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই কিশোরীকে মুখে গামছা বেঁধে জোড়পূর্বক একটি অটোতে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার কোনো একটি বাসায় ১৮ দিন জিম্মি করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর।

পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়দের চাঁপে গত ১ জুলাই দুপুর ৩টার দিকে বালিয়াঘাটা এলাকায় ওই কিশোরীকে ফেলে পালিয়ে যায় জাহাঙ্গীর।এলাকার স্থানীয়দের মাধ্যমে ওই কিশোরীর মামা বিশু খবর পেয়ে ললিতাকে অসুস্থ্য অবস্থায় উদ্ধার করে গোদাগাড়ী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।

রামেকের ওয়ান ষ্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) বিভাগে মোট পাঁচদিন চিকিৎসা নিয়েছিলেন ধর্ষণের শিকার হওয়া কিশোরী ললিতা (ছদ্মনাম)। এদিকে, ২ মাস অতিবাহীত হলেও অপরাধের বিপরীতে মামলা না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কিশোরীর নানি সেফালি বেগম জানান, ঘটনার পর থানায় যোগাযোগ করা হয়েছিল কিন্তু থানার এসআই সাইদ মামলাটি আদালতে করার পরামর্শ দেন।

এছাড়াও তিনি ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনকে বলেন, থানায় মামলা করতে হলে চেয়ারম্যনের প্রত্যয়ন সাথে নিয়ে আসতে হবে !

ভুক্তভোগীর নানী সেফালি বেগম আরও বলেন, ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন মিমাংসার জন্য নানামুখি চাঁপ সৃষ্টি করতে থাকে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী ললিতাকে (ছদ্মনাম)) সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি বাড়ি, নগদ ২৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার বানিয়ে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন গোদাগাড়ি উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলাম। চেয়ারম্যানের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম সম্পর্কে বিপরীতমুখি মন্তব্য করেন।

তিনি অভিযুক্তের সম্পর্কে আরো বলেন, তার বিরুদ্ধে একই ধরণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে অত্র গ্রামে। মিমাংসার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, কিশোরীর ইচ্ছা ছিলো জাহাঙ্গীরকে বিয়ে করার। তাই চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র। মিমাংসার নামে নানামুখি প্রলোভন দেখানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। অন্যদিকে, থানায় মামলা করতে হলে চেয়ারম্যন প্রত্যয়নের বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

এবিষয়ে, গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন আমি এসআই সাইদকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে ভিকটিমের পরিবারকে থানায় আসতে বলেছিলাম এবং এজাহার দায়ের করার পরামর্শ প্রদান করি। কিন্তু, তারা রাজি হননি মামলা করতে।

আরও খবর

Sponsered content