চাকরির খবর

৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হওয়া মো. নাঈমুর রহমান বিস্মিত হয়েছেন!

  প্রতিনিধি ৫ আগস্ট ২০২৩ , ৪:৩৫:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হওয়া মো. নাঈমুর রহমান।প্রতিদিনের মতো গত বৃহস্পতিবারও অফিস করছিলেন মো. নাঈমুর রহমান।অনলাইনে প্রতিবেদন দেখে জানতে পারেন,বৃহস্পতিবারই ৪১তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হবে।এরপর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ওয়েবসাইটে ফলের জন্য খোঁজ রাখা শুরু করেন। অফিস শেষে সন্ধ্যায় যখন বাসায় ফেরেন,তখন ফল প্রকাশিত হয়।পিএসসির ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখেন,শুরুতেই তাঁর রোল নম্বর।ফলের শুরুতেই নিজের রোল দেখতে পাবেন,এতটা আশা করেননি তিনি।তাই বিস্মিত হয়েছেন।

৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম হওয়া মো. নাঈমুর রহমান বলেন,ফলাফলের প্রথমেই নিজের রোলটা দেখে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল।নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমার এক সহকর্মীকে দিয়ে ক্রসচেক করাই।এরপর নিশ্চিত হই।প্রথম হওয়ায় আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।প্রথম হওয়ায় খুশি হয়েছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগ থেকে বিবিএ ও এমবিএ করেন মো. নাঈমুর রহমান।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। স্নাতকের শেষ বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার পর শুরু করেন বিসিএস ও অন্যান্য সরকারি চাকরির প্রস্তুতি।কিছুদিন চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার পর শুরু করেন বেসরকারি চাকরি।প্রথমে একটি স্কুলে চাকরি করেন।এরপর বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংকেও চাকরি করেছেন।বর্তমানে উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ) অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন।২০১৯ সাল থেকে পিকেএসএফে চাকরি করছেন তিনি।

মো. নাঈমুর রহমান বলেন,চাকরির পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েছি।দিনে চাকরি করে রাতে বাসায় গিয়ে পড়েছি। প্রথম দিকে এভাবে পড়তে কষ্ট হতো।পরে ধীরে ধীরে মানিয়ে নিয়েছি।শুধু বিসিএস নয়,অন্যান্য চাকরির জন্যও প্রস্তুতি নিতে শুরু করি।চাকরির পর যতটুকু সময় পেতাম,তা সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।’

বিসিএসে তিনটি ধাপে প্রার্থী বাছাই করা হয়।ধাপগুলো হলো—প্রিলিমিনারি,লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। ষএই তিনটি ধাপের মধ্যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা সবচেয়ে বেশি কঠিন মনে হয় বলে জানান মো. নাঈমুর রহমান।তিনি বলেন,প্রিলি মাত্র দুই ঘণ্টার পরীক্ষা।ওইদিন কারও শরীর খারাপ থাকতে পারে, কারও মন খারাপ থাকতে পারে।ওই দুই ঘণ্টায় মনোযোগের একটু ঘাটতি হলেই বাদ পড়ে যেতে পারেন।কিন্তু লিখিত পরীক্ষা কয়েক দিনে হয়।একটিতে খারাপ করলে আরেকটিতে ভালো পরীক্ষা দিয়ে ওভারকাম করার সুযোগ থাকে।

এটা যেহেতু একটি দীর্ঘ পথ।তাই ধৈর্য রাখতে হবে।সব সময় পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে।মাঝে মাঝে প্রতিকূল সময় আসতে পারে।পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে,কিন্তু কখনো ধৈর্য হারানো যাবে না।নিজের জন্য সময় বের করতে হবে। ভালো লাগার কাজটা করতে হবে।মানসিক স্বাস্থ্যেরও যত্ন নিতে হবে।

৪১তম বিসিএস নাঈমুরের তৃতীয় বিসিএস পরীক্ষা।এর আগে ৩৮তম বিসিএসে নন-ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে নবম গ্রেডে সহকারী পরিচালক পদে চাকরি পেয়েছিলেন। ০তম বিসিএসে প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি।

২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি।প্রিলিমিনারি,লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পর গত বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়।বিসিএসের দীর্ঘ এ যাত্রায় নিজেকে কীভাবে সামলিয়েছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে মো. নাঈমুর রহমান বলেন,আমি যেহেতু ভালো একটি চাকরি করতাম, তাই আমার জন্য যাত্রাটা কিছুটা সহজ ছিল।ভালো চাকরি করায় চাপ কম ছিল।এটা একটা দীর্ঘ জার্নি।এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো হাল ছেড়ে না দেওয়া।লেগে থাকার মানসিকতা থাকতে হবে।’

নতুন যাঁরা বিসিএসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন,তাঁদের উদ্দেশে মো. নাঈমুর রহমান বলেন,এটা যেহেতু একটি দীর্ঘ পথ।তাই ধৈর্য রাখতে হবে।সব সময় পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে।মাঝে মাঝে প্রতিকূল সময় আসতে পারে।পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে,কিন্তু কখনো ধৈর্য হারানো যাবে না।নিজের জন্য সময় বের করতে হবে।ভালো লাগার কাজটা করতে হবে।মানসিক স্বাস্থ্যেরও যত্ন নিতে হবে।’

আরও খবর

Sponsered content