রাজনীতি

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের যৌথ বার্ষিক সম্মেলন

  প্রতিনিধি ২ ডিসেম্বর ২০২২ , ১০:১২:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ পথে চোখে পড়ল ‘ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন সফল–সার্থক হোক’লেখা কয়েক ডজন পদপ্রার্থী নেতার ব্যানার, বিলবোর্ড ও ফেস্টুন।ভেতরে ও আশপাশে ঘুরে এ রকম দুই শতাধিক ব্যানার ও হাজারের বেশি ফেস্টুন চোখে পড়ে।

রাজধানীর নীলক্ষেতের গাউসুল আজম সুপার মার্কেট থেকেই বানানো হয় এসব ব্যানার ও ফেস্টুন। বাজারের দোকান ঘুরে জানা গেল প্রতিটি ব্যানার বানাতে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত লাগে (প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ২০ টাকা হিসাবে), বিলবোর্ড করতে লাগে আরও বেশি। ফেস্টুন করতে লাগে ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত৷ সেই হিসাবে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকার ব্যানার, ৬ থেকে ৯ লাখ টাকার ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে সম্মেলন উপলক্ষে,সঙ্গে আছে খাবার ও টি–শার্টের খরচ।

নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের যৌথ বার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।বেলা ১১টা থেকে সম্মেলনের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়েছিল। পরে শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ওই বছরের ৩১ জুলাই উত্তর-দক্ষিণের শীর্ষ (সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) চার পদে চারজনের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের৷ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী,এক বছর মেয়াদি ওই কমিটি ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে চার বছর পার করেছে।

প্রায় সাড়ে তিন বছর দেরিতে অনুষ্ঠিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের এই সম্মেলনে দুই ইউনিটে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য প্রায় ৩০০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে বিভিন্ন আকারের দুই শতাধিক ব্যানার,বিলবোর্ড ও হাজারখানেক ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন প্রার্থীরা।

প্রবেশপথ পেরিয়ে উদ্যানের ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল গাছে গাছে ঝুলছে ফেস্টুন,এখানে-সেখানে ঝুলছে কয়েকজন নেতাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চাওয়ার ব্যানার।সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঠে স্থাপিত সম্মেলনের মঞ্চের সামনে চেয়ারে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন প্রার্থীর নামে স্লোগান দিতে দেখা গেল অনুসারীদের।

সম্মেলনে কয়েকজন প্রার্থীর কয়েক শ অনুসারী একই রঙের টি-শার্ট পরে সম্মেলনস্থলে চেয়ারে দাঁড়িয়ে ওই প্রার্থীদের নামের সঙ্গে ‘ভাই’ যুক্ত করে তাঁদের পক্ষে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছেন৷মঞ্চ থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ কয়েকবার ব্যক্তির নামে স্লোগান দিতে তাঁদের নিষেধও করেছেন।দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এ ধরনের আচরণে নিরুৎসাহিত করা হয় নেতা–কর্মীদের।

মহানগর উত্তরের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী তরিকুল ইসলাম ওরফে রাফির অনুসারীরা সম্মেলনস্থলে এসেছেন তাঁর নাম ও ছবিসংবলিত কমলা রঙের টি-শার্ট পরে, দক্ষিণের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী নিবাস মজুমদার ও দক্ষিণের সহসভাপতি বারেক হোসাইনের অনুসারীদের গায়েও তাঁদের ছবিসংবলিত টি-শার্ট দেখা গেল৷পুরান ঢাকায় এ ধরনের টি-শার্ট বানাতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হয়৷ দুপুরে নেতা-কর্মীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করবেন প্রার্থীরা৷ এতেও জনপ্রতি ১০০-১৫০ টাকা খরচ হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,কোনো কোনো প্রার্থীকে ব্যানার-ফেস্টুন করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতারা,কাউকে পরিচিত ব্যবসায়ীরা, কাউকে আবার টাকা দিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।প্রার্থীদের কয়েকজন ইতিমধ্যেই ঠিকাদারি,চাঁদাবাজিসহ বিভিন্নভাবে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন।নেতা হতে পারলে উপার্জন আরও বাড়বে৷ফলে সম্মেলন উপলক্ষে তাঁরা দুহাতে খরচ করছেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতা হতে চান কয়েক ডজন ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে আছেন—মহানগর উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিবুল ইসলাম,সালমান খান, তরিকুল ইসলাম ও সোলাইমান ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেন, মাইনুল আহসান, তৌহিদুজ্জামান নোবেল ও আকরাম হোসেন, সহসভাপতি চৌধুরী আল ইমরান, আদাবর থানা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুল্লাহ আল গালিব এবং মোহাম্মদপুর থানা শাখার সভাপতি নাইমুল ইসলাম।

মহানগর দক্ষিণেও শীর্ষ নেতা হওয়ার দৌড়ে আছেন কয়েক ডজন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে আছেন—কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক মাইনুল হাওলাদার, দক্ষিণের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাহাদাত হোসাইন, সহসভাপতি বারেক হোসেন, রেহান উল হক ও আসাদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ সায়েম, আবদুল্লাহ আল-মামুন ও ইব্রাহিম নাঈম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত, এস এম রাকিবুল হাসান ও আমিনুল ইসলাম এবং প্রচার সম্পাদক রিয়াজ মোল্লা।

আরও খবর

Sponsered content