বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংবাদ

ফ্রিল্যান্সিংয়ে উবাসাই মারমার মাসিক আয় প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা

  প্রতিনিধি ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১০:৫৭:০১ প্রিন্ট সংস্করণ

বান্দরবান প্রতিনিধি।।দিনের পর দিন মানুষের নানা কটূক্তি সহ্য করেছেন উবাসাই মার্মা।কিন্তু দমে যাননি।পার্বত্য চট্টগ্রামে বসে মুক্ত পেশাজীবী বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তির কাজ করেন।এ কাজে এখন তাঁর মাসিক আয় প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা।ফ্রিল্যান্সার হিসেবে দেশি প্রতিষ্ঠানের কাজ যেমন করেন, তেমনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ দেওয়া–নেওয়ার ওয়েবসাইটের (অনলাইন মার্কেটপ্লেস) মাধ্যমে বিদেশের গ্রাহকদেরও কাজ করে দেন তিনি।বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার নতুন পাড়ায় বাড়ি উবাসাই মার্মার। রোয়াংছড়িতে বসেই ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করেন তিনি।

উবাসাই মার্মাসংগৃহীত
উবাসাই মার্মা নকরেক আইটি ইনস্টিটিউটে ডিজিটাল বিপণন বিষয়ে প্রশিক্ষণ কোর্স করেছেন ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য। ২০১০ সালে চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিপণনে স্নাতক হন তিনি।এরপর ২০১৬ সালে লিংকন ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ফিরে আসেন।কিছুদিন চাকরির খোঁজ করতে থাকেন।একটা বেসরকারি সংস্থায় চাকরিও শুরু করেন। এরই মধ্যে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ের খবর পান।

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে উবাসাই মার্মার ফ্রিল্যান্সিংয়ের যাত্রা সহজ ছিল না। ২০২০ সালে তিনি তখন বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন,অফিসে ও মাঠপর্যায়ে ব্যস্ততা ছিল অনেক।উবাসাই প্রথম আলোকে বলেন,ব্যস্ততার মধ্যেও প্রাণপণ চেষ্টা করি ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য কিছু কাজ শেখার।তবে সেটি তখন সম্ভব হয়নি। ২০২২ সাল থেকে ডিজিটাল মার্কেটিং বিষয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কোর্স করি। কিন্তু সফল হতে পারছিলাম না।চলতি বছরের জানুয়ারি নকরেক আইটি ইনস্টিটিউটে পাঁচ মাসের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার পর ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শুরু করি।’

উবাসাই প্রথমে একসঙ্গে দুটি কাজ পান,আয় হয় ১৬৫ ডলার।প্রশিক্ষণ কোর্স চলার সময়ই মোট ৯০০ ডলার আয় করেন উবাসাই।এখন তিনি সোশ্যাল মিডিয়া বিপণন,গুগল অ্যাডস, গুগল অ্যানালিটিকস, জিএমসি, এসইও নিয়ে কাজ করেন।মাসে প্রায় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা প্রায়) আয় করেন উবাসাই মার্মা।

বান্দরবান জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা রোয়াংছড়ি নতুন পাড়ায় বাড়ি উবাসাই মার্মার।তাঁর বাবা মংবাউ মার্মা অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী,মা অংম্যাচিং মার্মা চাকরি করেন রোয়াংছড়ি সরকারি হাসপাতালে।একমাত্র ছোট ভাই রুমা সরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন।

উবাসাই মার্মা বলেন, ‘বান্দরবান জেলায় ইন্টারনেটের অবস্থা দুর্বল।লোডশডিংও আছে,ফলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ আমরা পাই না।এসব কারণে বিদেশের কাজ মাঝেমধ্যে সময়মতো জমা দিতে সমস্যা হয়ে যায়।আমি ভবিষ্যতে পার্বত্য অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর তরুণদের নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি স্বপ্ন দেখি তাঁরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পেশাজীবন গড়ে তুলবে।’

আরও খবর

Sponsered content