শিক্ষা

৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির প্রাথমিক সুপারিশের ফলাফল প্রকাশের জোর দাবি জানিয়ে পুনরায় আন্দোলনের প্রস্তুতি

  প্রতিনিধি ৮ মার্চ ২০২৩ , ৪:০৪:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিয়ে পাশকৃত হবু শিক্ষকদের যেন অপেক্ষার পালা শেষই হতে চায় না।২০১৯ সালের ১৫ এবং ১৬ নভেম্বর এ পরীক্ষা আনুষ্ঠিত হয়।এর পর শুরু হয় করোনা মহামারি।এনটিআরসিএ (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে সময় নেয় ১ বছরেরও বেশি।

অথচ কর্তৃপক্ষের পরীক্ষা নীতিমালায় উল্লেখ আছে,সর্বোচ্চ ২ মাসের মধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে পারবে। নিবন্ধন ইতিহাসে এত বেশি সময় কোনও ব্যাচের লাগেনি। এই লিখিত ফলাফল প্রকাশের জন্য আন্দোলন করতে হয়েছে।

এরপর,ভাইভা পরীক্ষা নিতে কর্তৃপক্ষের সময় লাগে প্রায় ৭ মাস।করোনা পরবর্তী সময়ে দ্রুত সময়ে ভাইভা শেষ করার জন্যেও আন্দোলন করতে হয়েছে।যেখানে অন্যান্য ব্যাচগুলোর ক্ষেত্রে এনটিআরসিএ ভাইভা শেষ করতে সর্বোচ্চ দুই মাস সময় নিয়েছিল।

১৬তমদের কষ্ট এখানেই শেষ নয়,মাত্র ৭ দিনের ভাইভা বাকি থাকতে কর্তৃপক্ষ ৩য় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।এতে ১৬তমরা ৩য় গণবিজ্ঞপ্তি হতে বঞ্চিত হয়।১৬তমদের ভাইভা পরবর্তী চূড়ান্ত রেজাল্ট প্রকাশ করা হয় ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর। যেখানে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ করা হয় ১৮ হাজার ৫৫০ জন প্রার্থীকে।

তারপর গণবিজ্ঞপ্তির জন্য আবার অপেক্ষা!এ অপেক্ষার পালা যেন ১৬তমদের পিছু ছাড়ছেই না!এই অপেক্ষার প্রহরে ৩য় গণবিজ্ঞপ্তির পূরণ না হওয়া প্রায় ১৫ হাজার পদ নিয়ে কর্তৃপক্ষ বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।এখানেও হতাশার শেষ নেই।ওই ১৫ হাজার পদের বেশিরভাগই নারী কোটার এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের।১৬তমদের মধ্যে খুব বেশি কেউ আবেদন করতে পারল না।

বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি তাদের গলার কাঁটা হয়ে উঠলো।কারণ, এই বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির কারণে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি পিছিয়ে পড়লো।আবারও অপেক্ষা শুরু হলো ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির জন্য।

আবার শুরু হলো ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির জন্য আন্দোলন। আন্দোলনের মুখে অবশেষে,২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সেই কাঙ্খিত ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।তারপর কর্তৃপক্ষ ১ মাসের বেশি সময় ধরে আবেদন নেয়।

এই সময়ের মধ্যে ইনডেক্সধারি কিছু প্রার্থী ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ না পেয়ে রিট মামলা দায়ের করে।এরপর ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির আবেদন নেয়া শেষ হয় ২০২৩ সালের ২৯ জানুয়ারি।

নতুন এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে যেখানে ফলাফল প্রকাশে সর্বোচ্চ ১৫ দিন লাগার কথা সেখানে কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩৫ দিন পার হয়ে গেলেও ফল প্রকাশ করতে পারেনি।

এনটিআরসিএ এর কর্মকর্তাদের নিকট জানতে চাইলে তাদের কেউ বলেন ফল এখনও প্রস্তুত হয়নি,কেউ বলেন ফল প্রস্তুত কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমতি দেয়নি,কেউ বলেন ফল পূণ:নিরীক্ষার কাজ চলছে।

১৬তম নিবন্ধনধারী ইমরান খান বলেন,‘আমরা দীর্ঘ ৪ বছর অপেক্ষা করে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি পেয়েছি।এখন প্রাথমিক সুপারিশের ফলাফল বিলম্ব হওয়াতে দিনকি দিন আমাদের হতাশা বৃদ্ধি পাচ্ছে।আমরা অতি দ্রুত ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির প্রাথমিক সুপারিশ চাই’।

অপর প্রার্থী এম এ আলম বলেন,আমরা অত্যন্ত হতাশা এবং দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন পার করছি।মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছি।কর্তৃপক্ষ আর কত আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে চান?আমরা এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে চাই।দ্রুত ফল প্রকাশ করা হোক’।

ফলাফল প্রত্যাশিরা ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির প্রাথমিক সুপারিশের ফলাফল প্রকাশের জোর দাবি জানিয়ে পুনরায় আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।সেই লক্ষ্যে ফেসবুকসহ সকল যোগাযোগ মাধ্যমে তারা প্রচার প্রচারণা শুরু করেছে।

আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তির প্রাথমিক সুপারিশের ফল প্রকাশ করা না হলে দুর্বার আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ফলাফল প্রত্যাশিরা।

আরও খবর

Sponsered content