রাজনীতি

হেফাজতের শাপলা চত্বর ফর্মূলায় ঢাকা অচল করার পরিকল্পনা করছে বিএনপি!

  প্রতিনিধি ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৩:৪১:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

মাজহারুল ইসলাম।।আবার ইশরাক হোসেন,তাবিথ আউয়ালের মত তরুণরা রাজনীতিতে আগের চেয়ে অনেক সক্রিয় হয়েছেন ।তারেক রহমানের সরাসরি অধীনে তারা কাজ করছেন। বিএনপি নেতাদের অতি বাগাড়ম্বর এবং বক্তব্যে উজ্জীবিত কর্মীরা ভাবছেন ঢাকায় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে আগের চেয়ে দুর্বল,পুলিশের সহায়তা ছাড়া তারা কোথাও দাঁড়াতে পারবে না।ফলে বাধা দেয়ারও কেউ নাই।তবে বিএনপি খুব করে চাইছে,তাদের সভা-সমাবেশে উস্কানি ও বাঁধা আসুক এবং হামলা হোক।তাহলে আন্দোলন আরও চাঙ্গা হবে। আর নেতা-কর্মীরা নির্যাতিত হয়েছে বলে একটা হাইপ তোলা যাবে।

২০১৩ সালের ৫ই মে তারিখে বিএনপি-জমায়াতের বিপুল অর্থায়নে রাষ্টক্ষমতা দখলের লক্ষ্য নিয়ে সারাদেশ থেকে যেভাবে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় জড়ো হয়ে ব্যাপক নাশকতা চালিয়েছিল,ঠিক একইভাবে এবার বিএনপি ঢাকা অচল করতে চায়।এবার তাদের পাশে সরাসরি হেফাজতের নেতা-কর্মীরা না থাকলেও আছে গণ-অধিকার পরিষদ, জামায়াত থেকে পদত্যাগের নাটক করা কতিপয় নেতাসহ বিচ্ছিন্ন অনেকেই।মূলত এই পরিকল্পনাগুলো হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কে বসে।সেখানে পলাতক মাহমুদুর রহমানের (আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক)সাথে গোপন বৈঠক হয় রেজা কিবরিয়ার।যার সাথে আবার বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ গোপনে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন বলেও তথ্য রয়েছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী বিএনপি আগামী ২৭শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন রকম কর্মসূচি দিয়েছে।যার মধ্যে অন্যতম হলো ঢাকার বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ।বিএনপি নেতাদের মতে,এসবে কর্মসূচিতে যতটা সাড়া পড়বে ভেবেছিলন তারা, বাস্তবে তারচেয়ে বেশি সাড়া পড়েছে। বিশেষতঃ মিরপুর ও বনানীতে আওয়ামী লীগ কর্মীরা বাধা দেওয়ায় রাজনীতির মাঠ অনেকটাই চাঙ্গা।বিএনপি নেতাদের মূল লক্ষ্য হলো ঢাকা দখল করা, অচল করার জন্য তাণ্ডব চালানো। যেন সরকারের গদি নড়বড়ে হয়ে যায়।তারেক রহমানের কাছ থেকে এই দায়িত্ব পেয়েছেন মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং ইশরাক হোসেন।নেপথ্যে কাজ করবে জামায়াত ও শিবির।

২০১৩ এবং ২০১৪ সালের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ এটা জানেন,যতক্ষণ পর্যন্ত ঢাকায় তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত সরকারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি হবে না।একারণেই বিএনপির সমস্ত পরিকল্পনা ঢাকাকে ঘিরে। আগে বিনএপি ঢাকার বাইরে সভা-সমাবেশ ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করেছিলো,ঢাকার বাইরে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দে গিয়েছিলেন,ঢাকার বাইরে জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর,অগ্নিসংযোগও করেছিলেন।কিন্তু সেসব কর্মসূচিতে খুব একটা ফল হয়নি।বরং বিএনপি ঢাকা দখল করতে না পারায় আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে বলে নেতৃবৃন্দ মনে করেন।

আর এ কারণেই এবার বিএনপি ঘোষিত লাগাতার কর্মসূচিগুলোর প্রাইম টার্গেট হলো ঢাকা।বিশেষ করে সচিবালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তর এবং রাষ্ট্রায়ত্ব পরিষেবাদাতা বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রমের ওপর আঘাত হানাই বিএনপির লক্ষ্য।এতে সাধারণ মানুষের সেবাপ্রাপ্তি ব্যাহত হবে। তারা ক্ষুব্দ হবেন সরকারের ওপর।এসব যদি করা যায়, তাহলে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া খুব কঠিন ব্যাপার হবে না।ঢাকা দখলের লক্ষ্যে বিএনপি ইতিমধ্যে উত্তর এবং দক্ষিণের কমিটি গঠন করেছে।এতে নতুন উদ্যমী কিছু নেতা-কর্মী মিলেছে।

তবে এখন প্রশ্ন, বিএনপির ঢাকা দখল ও অচলের পরিকল্পনা কি আদৌ বাস্তবায়ন করা সম্ভব?বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন,ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে।মির্জা আব্বাস, আমীর খসরুরা নিয়মিত উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে জনগণকে উত্তেজিত করে তুলবেন।পেছন থেকে জামায়াত-শিবির বিভিন্ন ইস্যুতে ইন্ধন যোগাবে।আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর টার্গেট করে হামলা চালানো হবে।রাজধানীর পরিস্থিতি বেসামাল করতে পারলে এবং ক্রমাগত সহিংসতা ছড়াতে পারলে ক্ষমতার পালা বদল সম্ভব হয়ে উঠবে-এমনটাই পরিকল্পনা করছে বিএনপি ও জামায়াত নেতারা।আর মার্কিন দালাল রেজা কিবরিয়া তো আছেনই।বিদেশি প্রভুদের দিক থেকে বাকি কাজটা সমাধান করবেন তিনি।

মূলত ২০১৩ সালে হেফাজত যেখানে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে, বিএনপি এখন শুরু করতে চায় সেখান থেকে।এ কারণেই লোকের চোখে ধুলো দিতে জামায়াত আগেই ঘোষণা দিয়ে বিএনপির পাশ থেকে সরে গেছে।যা পুরোটাই স্টান্টবাজি। দেশবিরোধীদের অপতৎপরতা টের পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

আরও খবর

Sponsered content