প্রতিনিধি ২১ অক্টোবর ২০২২ , ২:১৮:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
মাজহারুল ইসলাম।।বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় না চাইতেই সব পেতো। অধিক ভালোবাসার কারণে শাসন করতে পারেনি তাকে। অসৎ বন্ধুদের সাথে মিশে নানা রকম অসৎ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিল।মাদকদ্রব্য সেবন করতো।বেশিরভাগ সময়ই রাত কাটাতো বাড়ির বাহিরে ছেলে বন্ধুদের সাথে।দু’বছর আগে তাকেসহ সবাইকে পুলিশ আটক করে,তারপর তাদের দু’বছর জেল হয়।জেলের প্রতিটা মুহূর্ত কাটে কষ্টে এবং অনুশোচনাতে।সেখানে থেকে উপলব্ধি করে জীবনের এতোগুলা বছর বৃথাই কাটিয়েছে।দেখতে দেখতে দু’বছর পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে আসে।
কিন্তু সমাজ তাকে সহজভাবে মেনে নেয়না। আত্মীয়স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে।বেঁচে থাকার যতোটুকু ইচ্ছে ছিল,সবার ঘৃণা ততোটুকু ইচ্ছেকেও শেষ করে দিলো।
লাবণ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে আত্মহত্যা করবে। তার ধারণা ঘৃণিত জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া শ্রেয়।রুমের সিলিং ফ্যানে ওড়না ঝুলিয়ে ফ্যানের কাছে এগোতেই, হঠাৎ ঘরে কারো উপস্থিতির টের পেলো।তাকে দেখে থমকে যায় লাবণ্য। বিপরীত দিকের সেই মানুষটা যেনো তারই প্রতিচ্ছবি
-কি করতে যাচ্ছো লাবণ্য? -আত্মহত্যা।-তুমি কি জানোনা, আত্মহত্যা মহাপাপ!- জানি। কিন্তু কি করবো? আমি পাপী! সমাজের মানুষ আমাকে ঘৃণা করে। – ঘৃণা তো তোমাকে মানুষ আগেও করতো।তখন কী তুমি আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছ? না-কি নিজের মতো করে বেঁচে থেকেছো?শোনো লাবণ্য!অতীত জীবনের সকল পাপকাজকে বিসর্জন দিয়ে নতুন করে বাঁচো।এমন একটা জীবন গড়ে তোলো যেনো সবাই তোমাকে ঘৃণা না করে ভালোবাসে।
কিন্তু কীভাবে?তার জন্য প্রয়োজন নিজের মনকে পরিশুদ্ধ করা। ইতোমধ্যে তোমার অনুশোচনা তোমার মনকে পরিশুদ্ধ করেছে। তুমি তোমার রবের অনুগত হও ক্ষমা চাও। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল। লাবণ্য অনুভব করলো সে যেখানে দাড়িয়ে ছিল সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। চারদিকে তাকিয়ে প্রতিচ্ছাবিটা খুঁজে পেলোনা। ফ্যান থেকে ওড়না খুলে গায়ে জড়িয়ে, অযু করে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে পড়ে।কাল সকালের সূর্য নিশ্চয়ই তার নতুন জীবনের শুভ সূচনা ঘটাবে।