অপরাধ-আইন-আদালত

হিজলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজ দলের কর্মীকে হত্যা, নির্দোষ আ’লীগ নেতাদের অব্যাহতির দাবীতে মানববন্ধন

  প্রতিনিধি ৩১ মার্চ ২০২৪ , ১:৪৭:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মেহেন্দিগঞ্জ(বরিশাল)প্রতিনিধি।।প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলে অবৈধ ব্যবসা ও দুই জোড়া হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে নিজ গ্রুপের কর্মী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল মাঝিকে কুপিয়ে গুপ্ত হত্যা করে স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথ এর অনুসারীরা।ওই ঘটনায় প্রকৃত খুনিদের আড়াল করে দুই উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং ৪জন চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে হত্যা মামলা দায়ের করার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

রোববার সকাল ১১টায় পাতারহাট বন্দরের তেমহুনী চত্বরে এক বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

ব্যানার প্লেকার্ড সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ গ্রহণ করেন মানববন্ধন কর্মসূচিতে।এতে বক্তব্য রাখেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র আলহাজ্ব কামাল উদ্দিন খান,উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাব আহমেদ,মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলু,উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চেয়ারম্যান আব্দুল মকিম তালুকদার,কাজীরহাট থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদের সদস্য জিল্লুর রহমান,মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোতালেব জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

বক্তারা বলেন হিজলার ধুলখোলা ইউনিয়নে আলোচিত গুপ্ত হত্যার সাথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং চেয়ারম্যানদ্বয়রা জড়িত নয়।হত্যার সাথে স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথ এর অনুসারীরা জড়িত।ডিবি পুলিশের হাতে তার অনুসারী ৫-৬ জন আটক হয়েছে।তাদের আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যায় সরাসরি জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।আটককৃত সকলেই সাংসদ পংকজ নাথ এর অনুসারী। আওয়ামীলীগের ৪জন চেয়ারম্যান এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা মামলাটি হয়রানির উদ্দেশ্য দাবী করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

ধুলখোলার জামাল মাঝি হত্যা,এ যেন দক্ষিণ উলানিয়া ইউনিয়নে ৩ বছর আগের সেই লোমহর্ষক ঘটনারই পুনরাবৃত্তি। সেখানেও সাইফুল নামের এক যুবককে পংকজ নাথ এর অনুসারীরা খুন করে দায় চাপায় সংরক্ষিত নারী এমপি ড.শাম্মি আহমেদ এর অনুসারী নৌকার চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর।পরবর্তীতে পুলিশের দক্ষতায় হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয় এবং আসামী হয় পংকজ নাথ এর অনুসারীরা।এর আগেও পংংকজ নাথ এর অনুসারীরা একাধিকবার মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।নেশা জাতীয় গাম খেয়ে মারা যায় এক ব্যক্তি।সে ঘটনায় হত্যার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের এর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় পংকজ নাথ,উত্তরচর এলাকায় এক যুবতী গলায় ফাঁস লাগিয়ে ভর দুপুরে নিজ ঘরে আত্নহত্যা করেন।সে ঘটনাকে হত্যা দাবি করে চেয়ারম্যানসহ আওয়ামীলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন,যা পরবর্তীতে পিবিআইর তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হয়।স্ট্রোক করে মারা যাওয়া এক ব্যক্তিকে হত্যা বলে প্রচার চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ।মেহেন্দিগঞ্জে পংকজ নাথ এর অনুসারীরা ১২জন দলীয় নেতাকর্মী হত্যা করেছে।

এছাড়াও মন্দির পোড়া,মন্দিরে হামলা,পুজামন্ডপে মূর্তি ভাঙ্গা, হিন্দু বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরসহ একাধিক ডাকাতির নাটক সাজিয়ে মামলা করার অপচেষ্টা চালালেও পুলিশের তদন্তে সেসব মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

ধুলখোলার আলোচিত গুপ্ত হত্যাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রকৃত খুনিদের আড়াল করে প্রতিপক্ষের উপর দায় চাপিয়ে প্রচার শুরু করেন স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথ।যেমন প্রচার তেমন কাজ।নিহতের স্ত্রীকে চাপ সৃষ্টি করে বিরোধী মতের লোকদের চাপে রেখে ২টি জোড়া খুনের মামলা থেকে বাঁচতে দুই উপজেলা আওয়ামী লীগের মনোনীত ৪ জন চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী।

পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার মামলার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।

গত ১৮ মার্চ সোমবার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি জামাল মাঝিকে হত্যার অভিযোগে ধুলখোলা ইউপি চেয়ারম্যান জামাল ঢালী,উলানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জামাল মোল্লা,গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বেল্লাল মোল্লা,দক্ষিণ উলানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল হালিম চৌধুরী মিলন গাজীসহ ৪৯ জনকে জ্ঞাত আর ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী।মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসাবে স্বতন্ত্র এমপি পংকজ নাথ এর অনুসারী ৬জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। সুত্র জানায় গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন।এরা হলেন,ইউপি সদস্য লিটন,বিএনপি নেতা আমির সরদার,স্পীড বোড চালক শহিদুল, ইউপি সদস্য আলমগীর ও রাসেল মাঝি।এদের মধ্যে ইউপি সদস্য রাসেল মাঝি ও আলমগীর এবং লিটন এর রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করে পুলিশ।এর আগে আমির সরদারকে রিমান্ডে দেওয়া হয়।

আরও খবর

Sponsered content