অপরাধ-আইন-আদালত

হালিশহর জুড়ে অবৈধ সুদ ও মাদকের অঘোষিত রানী কুলসুম সুন্দরী

  প্রতিনিধি ২৭ আগস্ট ২০২২ , ১০:২৫:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:-চট্টগ্রাম হালিশহর থানা এলাকায় অভিনব কায়দায় গড়ে তুলেছেন মাদক ও সুদের বিশাল সাম্রাজ্য। আর এ সাম্রাজ্যের রানী হলেন মোসাম্মৎ কুলসুম বেগম সুন্দরী।

এমন দাবিতে গত ২৬/০৮/২০২২ ইং চট্টগ্রাম বড় পোল চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনের এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানব বন্ধনের মধ্য দিয়ে করেন এলাকার ভুক্তভোগীরা।

উক্ত সমাবেশে অংশ নেয়া ভুক্তভোগীরা হলেন চট্টগ্রামের বড় পোল,মইন্যাপাড়া, নতুন পাড়া ও নিউমোরিং এলাকায় বসবাসরত স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষজন।প্রতিবাদে জানান এই সুন্দরী নারী অবৈধ পথে আয় করা অর্থ নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে চড়া সুদেবিনিয়োগ করে থাকেন।

সুদের অর্থচালাতে গিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে আসে অমানিশার ঘোর অন্ধকার।হস্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলহ, সংসার বিচ্ছেদ, আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নেয়া এবং ব্যবসায় পুঁজি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে অনেকে।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ তারা আরো দাবী করেন তার মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ সহ এইসব সুদ বাণিজ্যের কারবারে সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যান তার টর্চার সেলে।

সেখানে তাদের উপর নির্মম অত্যাচার করা হয়। তার আঙ্গুলের ইশারায় এইসব অপরাধে জড়িত থাকেন তার বিভিন্ন অপকর্মের পার্টনার এবং অটো রিক্সা সিন্ডিকেটের অবৈধ চাঁদাবাজ ও রাস্তায় দাঁড়ানো ভ্যান গাড়ি থেকে চাঁদা আদায়কারী নিজেকে হালিশহর থানার ক্যাশিয়ার বলে পরিচয়দাতা আলাউদ্দিন নামক ব্যক্তি ও তার বাহিনী।

প্রতিবাদে আরো জানানো হয় কুলসুমের কাছে রক্ষিত সুদের বিনিয়োগের বিপরীতে ব্ল্যাংঙ্ক স্ট্যাম্প ও ব্ল্যাংঙ্ক চেক দিয়ে সে বিভিন্ন সময় ১০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ দিয়ে ঐ ব্ল্যাংঙ্ক চেক এ নিজের খেয়াল খুশি মত অর্থ বসিয়ে তার আইন জিবির মাধ্যমে মামলা দায়ের করেন।

এভাবে একাধিক ব্যক্তি একাধিকবার ঋণের অর্থ পরিশোধ করেও ফেঁসে যান সুন্দরীর দায়ের করা মিথ্যা মামলায়। তার অন্যায় ভাবে দায়ের করা এইসব মামলার কারণে এলাকার স্থানীয় ভাড়াটিয়া সহ অসংখ্য মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য, ভিটা মাটি, গৃহহারা হয়েছেন বলে দাবি করেছেন মানববন্ধনে।

এককালীন অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ ব্যক্তিদের চাপ দিয়ে থাকেন সুন্দরী তার নিজ নামে ও তার সাঙ্গপাঙ্গের নামে ঐ ভিকটিমের শেষ সম্বল জায়গা জমি কিংবা বসতভিটা লিখে দেওয়ার জন্য। তার এইসব অনৈতিক আবেদনে সারা না দিলে সাধারণ মানুষ গুলোর উপরে মারাত্মকভাবে তার টর্চার ও নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়া হয়।

মানববন্ধন থেকে তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন কুলসুমা বেগম প্রকাশ সুন্দরী’র বিষয়ে প্রশাসনিক তদন্ত প্রয়োজন।

তারা প্রশাসনকে তদন্তের মাধ্যমের রহস্য উদঘাটনের আহ্বান জানিয়ে বলেন কোটি কোটি টাকার মামলা বাজিতে সুন্দরীর আয়ের উৎস কি? ফুটপাত থেকে উঠে আসা একজন নারীর কোটি টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে ভ্যাট ট্যাক্স পরিচ্ছন্ন আছে কিনা?

মানববন্ধন থেকে তাদের বিষয়টি সুবিবেচনা করব সাংবাদিক সমাজকে তাদের দেয়া বক্তব্যের উপর সরজমিন তদন্তের আহ্বান জানান।

স্থানীয় আল মামুন জানান তার শশুর সুন্দরীর কাছ থেকে এক লক্ষ সত্তর হাজার টাকা সুদের বিনিময়ে ঋণ গ্রহণ করেন। সেই ঋণের বিপরীতে ৬ লক্ষ টাকার উপরে পরিশোধ করেন সুদসহ। ঋণ গ্রহণের সময় আল মামুনের কাছ থেকে SB 74030418 Dutch Bangla Bank limited এর একটি ব্ল্যাংক চেক সুন্দরীর হাতে সিকিউরিটি হিসেবে জমা দেয়া হয়। টাকা বুঝে পেয়ে সুন্দরী চেক ফেরতে গড়িমসি শুরু করেন এবং ঐ চেকে ১০ লক্ষ টাকার এমাউন্ট বসিয়ে মাননীয় আদালত চট্টগ্রামে ১২/১১/ ২০১৯ ইং তারিখে ৪৩৩/২০১৯ মামলা দায়ের করেন।

মানববন্ধনে আরো দাবি করা হয় একইভাবে সেলিনা আক্তার হতে SB S4098100 NCC Bank Halishahor Branch এর একটি সিকিউরিটি চেক জমা নেন।

পরবর্তীতে ঐ চেকে ৫ লক্ষ টাকার অংক বসিয়ে মাননীয় আদালত চট্টগ্রাম এ মামলা নং ১৮১/২০২০ ইং বিগত ২২/০৭/২০২০ ইং তারিখে দায়ের করেন। প্রতিবাদ সমাবেশে তারা আরো জানান এই ধরনের একাধিক ডকুমেন্টস প্রশাসনের তদন্তের প্রয়োজনে তারা প্রশাসনকে জমা দিবেন।

তারা ভয়ংকর এই নারীর ব্ল্যাংঙ্ক চেকের প্রতারণামূলক মামলা বাজির হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এছাড়াও তারা দুদক, পুলিশ প্রশাসন, RAB-7 , আয়কর বিভাগ সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করে তার অপরাধ জগতের কালো থাবা হতে সাধারন মানুষের জানমাল রক্ষায় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।।

মাবেশ থেকে এলাকাবাসী একের পর এক মামলার জন্মদাতা ব্ল্যাংঙ্ক চেক এবং ব্ল্যাংঙ্ক স্ট্যাম্প গ্রহীতা মামলাবাজ মাদক সম্রাজ্ঞী সুন্দরীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক তাকে সমাজবিনষ্টকার হিসেবে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিতের জোড়ালো দাবিও জানান।

এব্যাপারে হালিশহর থানার অফিসার ইনচার্জ এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। তাতে কি মনে হয় থানা জড়িত?সংবাদটি সমাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

আরও খবর

Sponsered content