অপরাধ-আইন-আদালত

হামলার হুমকির লেখা চিরকুট দুষ্টু পোলাপাইনের কাজ-ডিএমপির কমিশনার, গোলাম ফারুক

  প্রতিনিধি ১৩ এপ্রিল ২০২৩ , ২:০৪:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রায় হামলার হুমকি দিয়ে লেখা যে চিরকুট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে পাওয়া গেছে,সেটা নিয়ে ‘চিন্তিত হওয়ার’ কিছু দেখছেন না ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

বর্ষবরণ উৎসবের আগের দিন বৃহস্পতিবার ঢাকার রমনা বটমূলের নিরাপত্তা প্রস্তুতি পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে বলেন,আমাদের কাছে মনে হয়েছে,কোনো দুষ্টু পোলাপান অতি উৎসাহী হয়ে ওই চিরকুট লিখছে।”

গত শতকের আশির দশকে সামরিক শাসনের অর্গল ভাঙার আহ্বানে পহেলা বৈশাখে চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হয়েছিল; সেটিই পরে মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম নেয়।২০১৬ সালে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতিও পায় এ কর্মসূচি।

রাজধানীতে বর্ষবরণ আয়োজনের অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ হয়ে ওঠা এই শোভাযাত্রা আয়োজনের মূল ভূমিকায় থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাবেকরা।মাসখানেক আগে থেকেই শুরু হয় তাদের প্রস্তুতি।

সেই কাজ চলার মধ্যে গত ১১ এপ্রিল রাতে চারুকলা প্রাঙ্গণে একটি সাদা কাগজ ও ৫০ টাকার নোট পাওয়া যায় একটি চেয়ারের ওপর।

ওই কাগজে লেখা ছিল ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা কাজটা শিরকের, এখানে এসে ক্ষতি করো না তোমাদের,হামলা হতে পারে এনিটাইম ঐ দিনের,দাজ্জালী বাহিনী পাবে না টের মোদের।’

এ ঘটনায় পরে শাহবাগ থানায় একটি জিডি করেন মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজক কমিটির অর্থ ও নিরাপত্তা বিষয়ক সদস্য আবতাহী রহমান।

তবে পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলছেন, “যে থ্রেট,চিরকুট দিয়েছে,তা দেওয়া হয়েছে দাজ্জাল বাহিনীর নামে।দাজ্জাল বাহিনী নামে বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি সংগঠন নেই,কোনো বাহিনীও নাই।”

সাংবাদিকদের তিনি বলেন,“আপনারাও জানেন,আপনারাও আমাদের মত সত্যের সন্ধান করেন।বাংলাদেশে দাজ্জাল বাহিনী পাওয়া যায়নি।এখানে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই।তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা খুঁজে বের করা হচ্ছে।”

ঢাকার আদালতপাড়া থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন,“ওই ঘটনায় জড়িত ১০ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছি।পলাতক জঙ্গিরা নজরদারিতে,তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।”

পহেলা বৈশাখে জঙ্গি হামলার ‘সরাসরি কোনো হুমকি নেই’ জানিয়ে তিনি বলেন,ব্যক্তিগতভাবে বাঙালি হিসেবে তিনি মনে করেন,দুই-একটা বোমা দিয়ে’ বাঙালিকে দমিয়ে রাখা যাবে না।

“১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী আর তাদের দোসররা ট্যাঙ্ক,কামান-বন্দুক নিয়ে এই বাঙালিদের দমন করতে পারেনি।আর কোথাকার কোন জঙ্গি একটা-দুইটা বোমা মেরে আমাদের দমন করবে আমরা ওই রকম ভীতু জাতি নই। আমরা বীরের জাতি।

“কাজেই কোনো জঙ্গি,কোনো শকুন আমাদের প্রতি নখ দেখাবে,আমার সেই জাতি নই।এরপরও যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।কেউ কোনো ধরনের দুঃসাহস দেখাতে পারবে না।”

বর্ষবরণের আয়োজন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে গোলাম ফারুক বলেন,পুলিশের ২৭শ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।

“যারা নববর্ষ উদযাপন করতে চান,তারা নিশ্চিতে উদযাপন করতে পারবেন।”

তিনি বলেন,বিকাল ৪টার পর আর রমনায় কেউ ঢুকতে পারবেন না।ওই সময়ের মধ্যে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে।

আরও খবর

Sponsered content