স্বাস্হ্য ও জীবন পরিচর্যা

রোগী সম্পর্ক উন্নয়নে চিকিৎসকদের মনোনিবেশ করার প্রতি আহ্বান-বিএসএমএমইউ

  প্রতিনিধি ১৩ আগস্ট ২০২৩ , ৬:১৩:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রোগীদের সমস্যা মনোযোগ দিয়ে শোনা ও সে অনুযায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করা এবং রোগী সম্পর্ক উন্নয়নে চিকিৎসকদের মনোনিবেশ করার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

রোববার সকালে (১৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক মিলনায়তনে ‘চিকিৎসক ও রোগীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে যোগাযোগ বিষয়ক দক্ষতা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটি।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের মতো করে সারাদেশে রোগীকে কনসালটেন্সি করা গেলে রোগী ও তার স্বজনদের কোনো অভিযোগ থাকতো না।সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ৩ ঘণ্টায় ২০ জনের বেশী রোগী দেখা হয় না এবং রোগী প্রতি চিকিৎসকে কমপক্ষে ১০ মিনিট সময় ব্যয় করতে হয়।

হাসি মুখে রোগীর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন,রোগী কেমন আছেন,কি চায়,কি সমস্যা নিয়ে আসছে এসব বিষয় চিকিৎসককে মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।প্রয়োজনে চিকিৎসককে রোগীর মূল সমস্যা কি তা জানার জন্য একাধিকবার প্রশ্ন করা যেতে পারে।রোগীকে তার কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।রোগী যদি একই কথা বার বার বা ঘুরিয়ে বলে,তবে এর মধ্য দিয়েও একজন চিকিৎসক মূল সমস্যাটি বের করতে পারবেন।’

রোগীদের অযথা পরীক্ষা দিয়ে কমিশন না নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,কোনো কোনো রোগী চিকিৎসককের কাছে আসেন যাদের কোনো পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হয় না।চিকিৎসকরাও পরীক্ষা নিরীক্ষা দেন না।কিন্তু কিছু কিছু রোগী পরীক্ষা নিরীক্ষা না লেখার কারণে চিকিৎসকের প্রতি অসন্তুষ্ট হন।কিন্তু যে সব ইনভেস্টিগেশন প্রয়োজন নেই, সেটি আমরা কোনো অনুরোধেও দেবো না।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চোখের চিকিৎসকদের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বসার সুযোগ কম হয়।কারণ চোখের চিকিৎসায় পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রয়োজন কম হয়,এ জন্য চিকিৎসকরা পরীক্ষা নিরীক্ষা কম দেন। আর কমিশন সব চিকিৎসক নেন না।অল্পকিছু চিকিৎসক কমিশন নেন।যার ফলে সব চিকিৎসকের বদনাম হয়।আমরা চিকিৎসকরা কখনো কোনো কমিশন নেবো না,আসুন আজ থেকে শপথ গ্রহণ করি।

সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন,সেন্ট্রাল হাসপাতালের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর জন্য হাসপাতালের সব কাগজপত্র আপডেট রাখা প্রয়োজন।যে রোগী যে চিকিৎসকের কাছে আসেন, সেই চিকিৎসককেই আগত রোগীকে দেখতে হবে।রোগীর কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসক না থাকলে সেটিও ভর্তি রোগীকে অবহিত করা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি এসময় চিকিৎসকদের সততা,ডিসিপ্লিন,টাইম মেনটেন করার আহ্বান জানান।

সেমিনারে কি নোট স্পিকার ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।

চিকিৎসক ও রোগীর সম্পর্ক বিষয়ে অধ্যাপক প্রাণ গোপাল বলেন,আগে রোগীরা চিকিৎসকদের প্রতি আস্থাশীল ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে আমরা চিকিৎসকরা সে জায়গা থেকে অনেক দূরে সরে এসেছি।এটি শুধু আমাদের (চিকিৎসক) ভুল নয়। বর্তমানে রোগীরা চিকিৎসকদের কাছে যা কিছু প্রত্যাশা করেন তা সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছাড়া পূরণ করা সম্ভব নয়।

তিনি এসময় রোগীদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় চিকিৎসকদের আন্তরিক হতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী।সেমিনারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন,বিভাগীয় প্রধান,বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মনোরোগবিদ্যা বিভাগরে সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাতিমা জোহরা।

আরও খবর

Sponsered content