অপরাধ-আইন-আদালত

রাজধানী ‘ছিনতাইকারীমুক্ত’ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের অভিযান চলবে

  প্রতিনিধি ৬ জুলাই ২০২৩ , ৫:২৩:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।রাজধানী ‘ছিনতাইকারীমুক্ত’ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের অভিযান চলবে।ছিনতাইয়ের ঘটনায় কেউ থানায় গিয়ে অভিযোগ না করলেও এখন থেকে ঘটনা জানতে পারলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

তিনি বলেছেন,ছিনতাইয়ের একটি ঘটনাও যেন পুলিশের তদন্তের বাইরে না থাকে,সে নির্দেশনাও তিনি দিয়েছেন।

ঈদের ছুটির মধ্যে রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের তৎপরতা নগরবাসীর মনে আতঙ্ক ছড়ায়।ছুটি থেকে ঢাকায় ফিরেই ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান পুলিশ কনস্টেবল মনিরুজ্জামান।আর ঈদের রাতে হাতিরঝিলে ইনডিপেনডেন্ট টিভির সহকারী প্রযোজক রাকিবুল হাসান রানাকে ছুরি মেরে জিনিসপত্র নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

রাজধানীতে প্রতিদিন ছিনতাইয়ের আরও অনেক ঘটনা ঘটে; কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয় না বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য।

ছুরিকাহত রাকিবুল হাসান রানাকে দেখতে মঙ্গলবার ঢাকার জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) গিয়ে পুলিশ কমিশনার গোলাম ফারুক বলেছিলেন,রাজধানী ‘ছিনতাইকারীমুক্ত’ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশের অভিযান চলবে।

যেখানে অধিকাংশ ঘটনা পুলিশের খাতায় আসছে না, সেখানে রাজধানীকে কীভাবে ‘ছিনতাইকারীমুক্ত’ করা যাবে তা জানতে চেয়েছিল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

“কারো হয়ত একটি মোবাইল নিয়ে গেছে,কারো ৫০০ টাকা নিয়ে গেছে,এগুলো নিয়ে মামলা মোকদ্দোমার ঝামেলার কারণে আসতে চাইত না।এখন আমরা কড়া নির্দেশ দিয়েছি, একটি ঘটনাও ‘আনট্রেসড’ থাকবে না,এখন আমরা আশা করছি,যতটুকু পারা যায়,বাদী না থাকুক,পুলিশ বাদী হয়ে মামলা নেবে।”

পুলিশ কমিশনার জানান,গত সোমবার থেকে তিন দিনে ঢাকায় ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় ৮০ শতাংশ মামলা পুলিশ বাদী হয়েছে করেছে।আর গ্রেপ্তার হয়েছে প্রায় দেড়শ ছিনতাইকারী।

ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় মনিরুজ্জামানকে ছুরিকাঘাত: পুলিশ
“ওভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা কেউ রিপোর্ট করতে চায় না। এজন্য আমরা ছিনতাইকারী ধরে ছিনতাইয়ের চেষ্টা অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা নিচ্ছি।”

বুধবার কমিশনার তার কার্যালয়ে বসে সহকর্মীদের সঙ্গে ছিনতাইয়ের এসব ঘটনা নিয়ে কথা বলার সময় একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাকে জানান,রাজধানীতে অন্তত ২০টি গ্রুপ রয়েছে যারা মটরসাইকেলে করে শহরে ছিনতাই করে বেড়ায়। প্রতিদিন এক একটি গ্রুপ ৫ থেকে ৬টি করে ছিনতাই করে। এদের অধিকাংশই পুলিশের তালিকায় নেই।

ওই কথার সূত্র ধরে রাজধানীতে এলাকাভিত্তিক ছিনতাকারী গ্রুপের প্রসঙ্গও আনেন তিনি।ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরে এরকম একটি গ্রুপের হাতেই খুন হয়েছিলেন কনস্টেবল মনিরুজ্জামান।

পুলিশ কমিশনার বলেন,এখন আমরা প্রত্যেক এলাকায় যে গ্রুপ আছে,সেই গ্রুপরে সদস্য কারা,এটা আইডেন্টিফাই করছি।এই গ্রুপগুলোর প্রতিটি মেম্বারকে আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।গ্রুপগুলোর কোনো সদস্য যেন বাইরে থাকতে না পারে।”

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঈদুল আজহার পরের দুই দিনে অন্তত ৩৭ জন বিভিন্ন ধরনের জখম নিয়ে ওই হাসপাতালে গেছেন,যাদের সবাই ছিতাইকারীর কবলে পড়েছিলেন।

এর বাইরে প্রতিদিনই এক থেকে দেড় ডজন আহত ব্যক্তি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে জখম নিয়ে এ হাসপাতালে আসেন বলে চিকিৎসকদের ভাষ্য।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পুলিশ কমিশনার বলেন, “এখনো হচ্ছে নাকি?এখন তো হওয়ার কথা না।এখন আমাদের চারদিকে রেইড চলছে।তারপরেও যদি এরকম হয়, তাহলে হাসপাতালে লোক (পুলিশ) রেখে এগুলো নিয়ে আসব।”

পুলিশ কমিশনার বলেন,ছিনতাইকারীদের ব্যাপারে তাদের নীতি– ‘জিরো টলারেন্স’।তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

আরও খবর

Sponsered content