প্রতিনিধি ২২ জুলাই ২০২৩ , ১২:২৪:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
দুমকী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।পটুয়াখালীর দুমকীতে ভোটে জিতে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নারী–শিশু নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেছেন তার তালাকপ্রাপ্ত দ্বিতীয় স্ত্রী।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক দুটি মামলা করেন তিনি।মামলা আমলে নিয়ে আদালত সমন জারি করেছেন বলে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী হুমায়ুন কবির বাদশা।
জানা যায়,গত সোমবার অনুষ্ঠিত পাঁচ নম্বর শ্রীরামপুর ইউপি নির্বাচনে এক নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে বিজয়ী হন নাসির উদ্দিন মৃধা (৫৪)।ভোটে জয় লাভের কয়েক ঘণ্টা পরই তার দেড় বছরের শিশুকন্যা নাফিজাকে রেখে দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস বেগমকে (৪১) তালাক দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন নাসির।এ ঘটনায় নার্গিস নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ও যৌতুক নিরোধ আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়,প্রেমের ফাঁদে ফেলে ইউপি সদস্য নাসির তিন বছর আগে নার্গিসকে প্রথম পক্ষের স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান।এরপর গোপনে নার্গিসকে বিয়ে করেন।তাদের সংসারে দেড় বছর বয়সী মেয়ে রয়েছে।বিয়ের পর বিভিন্ন অজুহাতে নার্গিসের কাছ থেকে নাসির নগদ ২ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে নেন।নির্বাচনে খরচের নামে ও ধারদেনার কারণে আরও টাকা দাবি করে তিনি নার্গিসের ওপর নির্যাতন শুরু করেন।ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার ঘরে আটকে নার্গিসকে মারধর করে এবং সাদা চারটি স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর ও আঙুলের ছাপ নিয়ে ঘর থেকে বের করে দেন নাসির।এ সময় তিনি শিশু নাফিজাকে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেন বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন,পারিবারিক সমঝোতার ভিত্তিতে তালাক দেওয়া হয়েছে।তার শিশু নাফিজাকে জোর করে রেখে দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন,নার্গিস ইচ্ছা করেই শিশুকে রেখে চলে গেছেন।এর স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ (ভিডিও ফুটেজ) রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ঘটনার সময় প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী হাসি বেগম (৫০) জানান,তাদের যৌথ সমঝোতার ভিত্তিতেই তালাক সম্পন্ন হয়েছে।জোর করে কিছু করা হয়নি।
নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) মাওলানা জাকারিয়া বলেন,তার ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দুপক্ষের সম্মতিতেই তালাক সম্পন্ন হয়েছে।
দুমকি থানার ওসি তারেক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, তিনি বিষয়টি জানেন না।তবে আদালতের আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।