আন্তর্জাতিক

ব্রিকস সম্মেলনে জোটটি সম্প্রসারণের নীতি গ্রহণ করায় মিয়ানমার জোটে যোগদানে আগ্রহী

  প্রতিনিধি ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫:১৮:০৬ প্রিন্ট সংস্করণ

অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।সামরিক অভ্যুত্থানে জর্জরিত মিয়ানমারের অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র,ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞায় প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে।এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি পুরোনো মিত্র চীন,রাশিয়া ও ভারতের জোট ব্রিকসে যোগ দিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।চালাচ্ছে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা।থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্রিকস মূলত ব্রাজিল,রাশিয়া,ভারত,চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনৈতিক জোট।তবে সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া জোটের শীর্ষ সম্মেলনে আর্জেন্টিনা,ইথিওপিয়া,সৌদি আরব,সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরকে নতুন সদস্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।তবে সে সময় মিয়ানমার জোটে ঠাঁই পায়নি।

গত ১ সেপ্টেম্বর ব্রাজিলে নিয়োজিত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াও জ্যান ব্রিকসে নিযুক্ত ব্রাজিলের আন্তঃআঞ্চলিক প্রক্রিয়ার সমন্বয়কারীর সঙ্গে বৈঠক।বৈঠকে তিনি ব্রিকস ও নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে যোগদানের পদ্ধতি এবং প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে চান।মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে,গত আগস্ট মাসে হয়ে যাওয়া ব্রিকস সম্মেলনে জোটটি সম্প্রসারণের নীতি গ্রহণ করায় মিয়ানমার জোটে যোগদানে আগ্রহী।এ নিয়ে ব্রিকসের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ব্রিকসে যোগদানের বিষয়টি মাথায় রেখে মিয়ানমারের জান্তা সরকার জোটের মূল সদস্য রাশিয়া,চীন ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে জান্তা সরকার কেবল ব্রিকস নয়, জোটের আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে যোগ দিতেও আগ্রহী।

এদিকে,মিয়ানমারে জান্তা সরকারপন্থী গণমাধ্যমগুলোও ব্রিকসের বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। গণমাধ্যমগুলো ব্রিকসের প্রশংসা করে এবং পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে ব্যাপক মতামত,সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয় প্রকাশ করছে। জান্তাপন্থী একটি সংবাদপত্রে গত ৩০ আগস্ট প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে ব্রিকসকে ‘বিশ্বব্যবস্থায় পরিবর্তন’ আনার উদ্যোগ নেওয়ায় স্বাগত জানানো হয়েছে।বলা হয়েছে,চীন ও রাশিয়া এই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিচ্ছে।

পশ্চিমা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর চীন,ভারত ও রাশিয়ার বাইরেও কূটনৈতিক বলয় বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী মিয়ানমারের জান্তা সরকার। মধ্যপ্রাচ্য ও আরব বিশ্বের সৌদি আরব ও মিসরের সঙ্গে মিয়ানমারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে।বর্তমানে সৌদি আরব,মিসরসহ মধ্যপ্রাচ্যের চারটি দেশে সামরিক সরকারের দূতাবাস রয়েছে। পাশাপাশি আফ্রিকার একমাত্র দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় মিয়ানমারের কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্ব আছে।

উল্লেখ্য,মিয়ানমার কেবল পশ্চিমা বিশ্ব থেকেই বিচ্ছিন্ন নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান থেকেও দেশটি বিচ্ছিন্ন।ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়েছে,জোটের পরবর্তী সভাপতি মিয়ানমার হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির শাসন পদ্ধতি বিবেচনায় দেশটিকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হবে না।তার বদলে ফিলিপাইন জোটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করবে।

আরও খবর

Sponsered content