সারাদেশ

ব্যাংক শাখায় গ্রাহকে দাঁড় করিয়ে মোবাইলে গেম খেলার ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি

  প্রতিনিধি ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ , ১:৫০:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি।।মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলার সোনালী ব্যাংক শাখায় গ্রাহকে দাঁড় করিয়ে মোবাইলে গেম খেলার ঘটনায় গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি আজ ওই শাখা পরিদর্শন করেছে।রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ সোনালী ব্যাংক প্রিন্সিপাল শাখা ও ঢাকা কেন্দ্রীয় সোনালী ব্যাংকের আলাদা আলাদাদুই সদস্য বিশিষ্ট ২টি কমিটি ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে।

এ নিয়ে গত ২৭ ডিসেম্বর গ্রাহককে দাঁড় করিয়ে রেখে দেড় ঘণ্টা গেম খেললেন ব্যাংক কর্মকর্তা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে পরদিন ২৮ ডিসেম্বর দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে মুন্সীগঞ্জ সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখা।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন,মুন্সীগঞ্জ জেলা সোনালী ব্যাংক প্রিন্সিপাল অফিসের এজিএম বজলুর রহমান ও সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার হাবিবুর রহমান।ঢাকা সোনালী ব্যাংকের কেন্দ্রীয় অফিস থেকে অনুরুপ কমিটি গঠন করা হয় বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ সোনালী ব্যাংক শাখার ডিজিএম মো. আব্দুল মতিন।তবে তিনি ঢাকা থেকে আসা দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্যদের নাম বলতে পারেননি।

এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক মুন্সীগঞ্জ শাখার ডিজিএম আব্দুল মতিন বলেন,ঘটনার বিষয়ে আমি নিজে গত ২৮ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলা সোনালী ব্যাংক প্রিন্সিপাল অফিস থেকে এজিএম বজলুর রহমানকে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেই।অন্যদিকে,ঢাকা সোনালী ব্যাংকের কেন্দ্রীয় অফিস থেকেও অনুরুপ কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া আমিও বিষয়টি আলাদাভাবে তদন্ত করি।

মুন্সীগঞ্জ সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিস ও ঢাকা সোনালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় অফিস থেকে আলাদা আলাদা ২ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি আজ এ বিষয়ে তদন্ত করে। এছাড়া আমি নিজেও আলাদাভাবে তদন্তে গিয়েছিলাম।আমরা আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখেছি অভিযুক্ত কর্মকর্তা ঘটনার সময় দেড় ঘণ্টা মোবাইলে কোনো গেম খেলেনি।তিনি ওই সময়ে ভিডিওকলে তার পরিবারের সঙ্গে ১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডের মতো কথা বলেছেন।তিনি বলেন, আগামীকাল অথবা আগামী পরশু দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারী বাবু হালদার বলেন,তদন্ত কমিটি আমাকে ডাকায় আমি দুপুর ১২টার দিকে টঙ্গিবাড়ী সোনালী ব্যাংকের শাখায় যাই।গিয়ে দেখি ওই বিষয়ে তদন্ত চলছে।এ সময় আমার সঙ্গে সেদিন কি হয়েছিল জানতে চাওয়া হলে আমি বিস্তারিত বিষয়টি তাদের বলেছি।এ সময় এদের মধ্যে একজন বলেন যা হবার হয়েছে ব্যাংক কর্মকর্তাকে তো বাচাঁতে হবে।আপনি একটি স্টেটমেন্ট দেন ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ সময় আমি বলি না,আমি এ ধরনের স্টেটমেন্ট দিতে পারবো না।পরে বলে,তবে ঘটনা পুরোপুরি সত্য নয় এমন স্টেটমেন্ট দেন।পরে আমি এ ধরনের একটি স্টেটমেন্ট হাতে লিখে দিয়েছি।তিনি আরও বলেন,এর আগেও ওই কর্মকর্তা বিভিন্ন মানুষজন নিয়ে আমার হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেছেন।

প্রসঙ্গত,এর আগে মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়িতে বাবু হাওলাদার নামের হাসাইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যকে গত ২৬ শে ডিসেম্বর প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখে ব্যাংকের ডেস্কের ভেতরে মোবাইলে গেম খেলায় ব্যস্ত ছিলেন ওই ব্যাংকের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিদ্যুৎ।তার বিরুদ্ধে এর আগেও এমন অভিযোগ রয়েছে।প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা গ্রাহক বাবু হাওলাদার হাসাইল বানারী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য এবং স্থানীয় সাংবাদিক।

ভুক্তভোগী বাবু হাওলাদার এর আগে বলেন,মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদের একটি প্রকল্পের বিল উত্তোলন করতে পিআইও অফিস থেকে দেওয়া একটি রশিদ নিয়ে আমি ও কাইয়ূম মেম্বার সোনালি ব্যাংকের কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বিদ্যুৎ এর কাছে জমা দেই।সরকারি বিধি অনুযায়ী ওই রশিদের বিনিময়ে ব্যাংক কর্মকর্তার আমার কছে রশিদের সমপরিমাণ টাকার একটি চেক দেওয়ার কথা।কিন্তু প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় অতিবাহিত হলেও তিনি বিধি অনুযায়ী আমার রশিদের বিনিময়ে চেক না দিয়ে মোবাইলে গেম খেলছিলেন।পরে উনাকে ভালোভাবে বললাম ভাই আমিতো রশিদ জমা দিয়েছি রশিদের বিনিময়ে আমার চেকটা দেন।এ সময় উনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন আপনার বিলের রশিদতো আমার কাছে জমা নেই।পরে আমি বললাম আপনার কাছেই তো জমা দিয়েছি ভালো করে দেখেন।পরে রশিদ খোঁজাখুঁজি করে তার সামনে থাকা একটি ঝুড়িতে আমার দেওয়া রশিদটি তিনি দেখতে পান।পরে আমি উনাকে বললাম আপনার অবহেলার কারণে আমাকে দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হলো।এ সময় ওই কর্মকর্তা আমার সঙ্গে রাগারাগি করে বলেন তুই আরও এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাক।

পরে বিষয়টি ব্যাংকের ম্যানেজারকে বললে তিনি এসে আমাকে রশিদের বিনিময়ে টাকার চেক দেন।পরে আমি ওই চেক জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করি।

আরও খবর

Sponsered content