প্রতিনিধি ২২ নভেম্বর ২০২৪ , ৬:১৬:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক রিপোর্ট।।ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘দ্য হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইহুদিবিদ্বেষী যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে,তা আধুনিক যুগের ড্রেফাস ট্রায়াল।আর এর সমাপ্তিটাও একই হবে।’ড্রেফাস ট্রায়াল বলতে তিনি এক শতাব্দীরও বেশি সময় আগে ফ্রান্সের আলোচিত একটি ঘটনাকে ইঙ্গিত করেছেন।তখন ফ্রান্সে সেনাবাহিনীর ইহুদি ক্যাপ্টেন আলফ্রেড ড্রেফাসকে অন্যায়ভাবে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।পরে তাঁকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহু এবং দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। হামাসের সামরিক কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।যদিও ইসরায়েলের দাবি, গত জুলাই মাসে দেইফ মারা গেছেন।
গতকাল নেতানিয়াহু বলেছেন,আইসিসির সিদ্ধান্তকে বৈধ বলে স্বীকার করবে না ইসরায়েল।
ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট বিবিসিকে বলেন,নেতানিয়াহু হামাসের সঙ্গে সংঘাতকে যেভাবে সামলাচ্ছেন,তা নিয়ে সমালোচনা করলেও তিনি আইসিসির সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নন।
রেডিও ফোরের ওয়ার্ল্ড টুনাইট অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওলমার্ট বলেন, ‘ইসরায়েল জাতিগত নিধন বা যুদ্ধাপরাধ করেনি যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা যাবে।’
দেইফের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেনি হামাস।তবে নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে তারা।হামাস বলেছে, এটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নজিরবিহীন ঘটনা।
এদিকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন,যুক্তরাজ্য,ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও ইতালির কর্মকর্তারা আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।ব্রিটিশ সরকার বলেছে,তারা আদালতের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে ইহুদিবিদ্বেষী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।এক বিবৃতিতে তিনি বলেন,আইসিসি যা–ই বোঝাক না কেন, ইসরায়েল এবং হামাস কোনোভাবেই সমতুল্য নয়।নিরাপত্তাকে হুমকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমরা সব সময়ই ইসরায়েলের পাশে থাকব।’
এএফপির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে,আর্জেন্টিনাও আদালতের এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেছেন,এর মধ্য দিয়ে হামাস এবং হিজবুল্লাহর মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের ক্রমাগত হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার বৈধ অধিকারকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।তুরস্ক,স্পেন,নরওয়ে,সুইডেন ও বেলজিয়াম এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলেছে।

















