রাজনীতি

বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর নেতা–কর্মীরা উজ্জীবিত

  প্রতিনিধি ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ , ৯:১২:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ

সখীপুর প্রতিনিধি।।ক্ষমতাসীন দলের হামলা–মামলা,পুলিশের হয়রানিতে গত কয়েক বছরে টাঙ্গাইলে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।সম্প্রতি দলটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর দৃশ্যপট অনেকটা বদলে গেছে।দলের নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া স্থানীয় নেতা–কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন।কেউ কেউ বলছেন,কাদের সিদ্দিকী ক্ষমতাসীন দলের ছায়াতলে ভিড়তে যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাদের সিদ্দিকীর সাক্ষাতের বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। দলের সখীপুর উপজেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য আজাদী রহমান আলীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাদের সিদ্দিকীর সাক্ষাৎ ছিল পারিবারিক।একজন তৃণমূলের কর্মী হিসেবে এটাকে আমরা স্বাগত জানাই।বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করা আমাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচন করলে আমার কিছু বলার নেই। তবে আমার মতামত হচ্ছে,বড় দুই জোটের বাইরে থেকে বড় পরিসরে নির্বাচনে অংশ নেওয়া।’

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল,এতে কাদের সিদ্দিকীর দলও ছিল।নির্বাচনের কয়েক দিন আগে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও স্থানীয় বিএনপির শতাধিক নেতা–কর্মীর নামে মামলা হয়। মামলায় কাদের সিদ্দিকীর দলের অর্ধশত নেতা–কর্মী কয়েক মাস জেলও খাটেন।অনেকেই দলও ছেড়েছেন।হয়রানির কারণে গত চার বছরে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের স্থানীয় কর্মীরা অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন।

এর মধ্যে ২৩ ডিসেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কাদের সিদ্দিকী সাক্ষাৎ করেন।এর পর থেকে গুঞ্জন চলছে,কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন,না হয় আওয়ামী লীগের জোটে আসছেন।এমন পরিস্থিতিতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে সখীপুর–বাসাইল আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ হতাশায় পড়েছেন।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সাবেক নেতা টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল)আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী আতাউল মাহমুদ বলেন,বিএনপি সরকারের সময় কাদের সিদ্দিকী স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের অনেক হয়রানি ও নির্যাতন করেছেন।শেখ হাসিনাকেও অনেক গালমন্দ করেছেন।কাদের সিদ্দিকী একসময় শক্তিশালী ছিলেন,এখন দুর্বল।কাদের সিদ্দিকী বাঁচার জন্য আওয়ামী লীগে আসার চেষ্টা করছেন।এমন সময়ে কাদের সিদ্দিকীকে দলে নিয়ে নির্বাচন করানো ঠিক হবে না।

গণভবনে সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঘণ্টা দেড়েক আলোচনা হলেও বের হয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেননি কাদের সিদ্দিকী।তিনি বলেন,যে কেউ স্পেকুলেশন করতে পারে।আমার কিছু বলার নেই।যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ডেকেছেন,তাই কারণটা তাঁর কাছ থেকেই জেনে নেওয়া ভালো।আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন,আমি আওয়ামী লীগ ছেড়ে এসেছি।কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করি,লালন করি। রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই।’

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে,বিএনপি যেমন যুগপৎ আন্দোলনে নামার জন্য রাজনৈতিক মিত্র বাড়াচ্ছে,তেমনি আওয়ামী লীগেরও মিত্র বাড়ানোর চিন্তা আছে।ক্ষমতাসীনদের জোট ১৪ দলে নতুন দল অন্তর্ভুক্ত এবং সমমনাদের নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ার চিন্তা আছে।এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কাদের সিদ্দিকীর দলকেও টানতে চায় ক্ষমতাসীন দল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের তিন বছর ধরে উপজেলা কমিটি নেই।দুই বছর ধরে একটি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি হলেও কর্মীর অভাবে সম্মেলন করা যাচ্ছে না।উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন,দীর্ঘদিন ধরে আমরা নিষ্পেষিত-নির্যাতিত।প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের নেতা সাক্ষাৎ করায় আমরা এখন উজ্জীবিত।’

আরও খবর

Sponsered content